শ্রীশুভ্র / নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গণমাধ্যম ও ইভিএমের ভুমিকা

শ্রীশুভ্র / নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গণমাধ্যম ও ইভিএমের ভুমিকা

গোটা গণতান্ত্রিক বিশ্বেই নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার খুবই সীমিত। আমাদের মতো দেশগুলিতে সেই অধিকার মূলত ভোটার হিসাবে নির্বাচনের দিনেই গণ্ডীবদ্ধ। দেশে সংবিধান আছে। সাংবিধানিক আধিকার আছে। আইন আছে। আদালত আছে। নির্বাচক মণ্ডলীও আছে। কিন্তু তারপরেও সাধারণ একজন নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলি কার্যক্ষেত্রে কতটা সীমিত। সেকথা ভুক্তভুগি মাত্রেই জানেন। সংবিধানের প্রাপ্ত সুযোগ এবং সুবিধাগুলি। সংবিধানের প্রাপ্ত অধিকার এবং ক্ষমতাগুলি ঠিকমত ভোগ করতে গেলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। সাধারণ একজন নাগরিকের সেই সক্ষমতা থাকে না বললেই চলে। একমাত্র বিত্তবান এবং প্রতিপত্তিশালী নাগরিকের পক্ষেই অনেকটা পরিমাণে সাংবিধানিক অধিকার এবং ক্ষমতা ভোগ করা সম্ভব হয়। বাকিদের পক্ষে, সরকার দয়া দাক্ষিণ্য করে যতটুকু সাংবিধানিক সুযোগ এবং সুবিধে সাধারণ নাগরিকের জন্য বরাদ্দ করে রাখে। সাধারণ জনতা সেইটুকু পেলেই আহ্লাদে আটখানা। তারা খুব স্পষ্ট করেই জানে। বিত্তবান এবং ক্ষমতাধরদের জন্যেই সমস্ত অধিকার এবং ক্ষমতা। এই সাধারণ জনতা এক কালে রাজানুগ্রহের প্রত্যাশী প্রজা হিসাবে কালাতিপাত করতো। তারপরে ব্রিটিশ আমলে তারাই জমিদারের অনুকম্পার উপরে নির্ভর করে জীবনযাপন করতো। এখন তারাই স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে এই দলের নেতাকে ধরে ঐ দলের নেত্রীকে ধরে যতটুকু সম্ভব সাংবিধানিক সুযোগসুবিধে ভোগ করা যায়। তারই প্রত্যাশী থাকে। ফলে হাজার বছর পার করেও সাধারণ দেশবাসীর মানসিকতারও বিশেষ পরিবর্তন ঘটেনি। তারা মূলত অনুগ্রহ প্রত্যাশী। তারা মূলত অনুদান নির্ভর। তারা মূলত অনুকম্পা পেলেই বর্ত্তে যায়।

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় একজন নাগরিকের মানসিকতা যদি অনুগ্রহ অনুদান আর অনুকম্পামুখি হয়। তবে তার পক্ষে গণতন্ত্র রক্ষা করা দুরূহ। ভারতবর্ষেরও বর্তমান অবস্থা ঠিক তেমনই। অন্তত দেশের প্রায় নব্বই শতাংশ জণগণের মানসিক স্থিতি এই অনুগ্রহ অনুদান আর অনুকম্পার উপরে নির্ভর করে জীবনধারণের প্রত্যাশী। এই শ্রেণীর মানুষকে ক্ষমতা যখন যেভাবে যেকথা বোঝাবে। তারা তখন সেইভাবেই সেইকথা বুঝে নেবে। তাতেই তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারে। সেই শান্তিটুকু তারা কোনভাবেই হারাতে রাজি নয়। দেশের শাসক গোষ্ঠীও এই বিষয়টি সম্বন্ধে নিঃসন্দেহ। সেই কারণেই তারা গণমাধ্যমকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে। এই গণমাধ্যমই তাদের হাতের তুরুপের তাস। দুইবেলা গণমাধ্যমগুলি দেশের নব্বই শতাংশ জনগণকে বেকুব বানিয়ে চলেছে। অর্ধসত্য আর ধোঁকাবাজির ককটেল দিয়ে জনতাকে বিভ্রান্ত করে মোহগ্রস্ত করে রাখার কাজটিকে এই গণমাধ্যমগুলি প্রায় শিল্পের পর্যায় উন্নত করে তুলেছে। এবং মাখনের ভিতর দিয়ে ছুরি চালানোর মতো করেই তারা দেশর বৃহত্তর জনতাকে নিজেদের হাতের মুঠোয় নিয়ে নিয়েছে। ফলে গণমাধ্যমই জনতাকে পরিচালিত করে চলেছে। কোন নির্বাচনে জনতা কোন দলকে কোন লোকসভায় কিংবা বিধানসভায় নির্বাচিত করে পাঠাবে। জনতা যদি অন্ধের মতো তাদের পরিচালনায় কাজ করে। তবে তো কথাই নেই। না করলেও বিশেষ অসুবিধে নেই। বিপক্ষ দলের নেতানেত্রী ভাঙিয়ে নিয়ে এসে নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দিয়ে অনির্বাচিত সরকার গঠন করা দেশের সংবিধানেই স্বীকৃত রয়েছে। ফলে শাসকগোষ্ঠীর পোয়াবারোর সময় এখন।

আধুনিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়। গণমাধ্যম যাদের হাতে থাকবে। তারাই দেশ শাসন করতে থাকবে। তারাই নিজেদের পছন্দের বা নিজেদের বেছে নেওয়া রাজনৈতিক শিবিরকে দেশ শাসনের গদিতে বসিয়ে দেবে। আর তাদের এই কাজটি মসৃণ ভাবে সম্পন্ন করতেই গণমাধ্যমের কোন জুড়ি নেই। গণমাধ্যমের কাজই হলো। প্রথমে জনতাকে বিভ্রান্ত করে রাখা। জনতা যেন কোনভাবেই আসল সত্যের কাছে পৌঁছাতে না পারে। এরপরে তাদের কাজ হলো জনতাকে বিভিন্ন শিবিরে বা বিভিন্ন গোষ্ঠীতে ভাগ করে রাখা। জনতা যেন দেশের স্বার্থে দেশবাসীর স্বার্থে কোনভাবেই ঐক্যবদ্ধ না হতে পারে। এই কাজটি করতেই জনতাকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ে নানান কাস্টে ভাগ করে রাখার কাজটি গণমাধ্যম সুচারুরূপে সংঘটিত করে চলে। এবং এই কাজের জন্যে গণমাধ্যমের কাছে মন্দির মসজিদ গুরুদ্বার গীর্জার মতো বিষয়গুলি অত্যন্ত জরুরী। এবং সকলের শেষে জনতার কাছে ক্রমাগত ভাবে অর্ধসত্য এবং ধোঁকাবাজির ককটেল পরিবেশন করে করে জনতাকে নিজেদের ইচ্ছে অনুযায়ী নিজেদের স্বার্থের অভিমুখে পরিচালিত করা। এটাই গণমাধ্যমের গ্যারান্টি। সংবাদপত্রের পাতাই হোক। আর টিভির সংবাদ চ্যানেলই হোক। এই গ্যারান্টিই লোকসভা থেকে বিধানসভায় সরকার ধরে রাখার কাজটি করে চলে।

পাঁচ বছর ধরে একটি সরকার জনগণকে যতোই ধোঁকা দিয়ে যাক না কেন। সরকারের নীতি ও কর্মের উপরে সচেতন নাগরিকের যতো ক্ষোভই জমা হোক না কেন। দেশের নব্বই ভাগ জনতাকে সরকারপন্থী করে রাখার দায় এবং দায়িত্ব কিন্তু সেই গণমাধ্যমেরই। গণমাধ্যম সেই কাজে যত বেশি দক্ষ হয়ে উঠবে। দেশের শাসকগোষ্ঠীর পক্ষে দেশলুন্ঠনের কাজটি তত নিপুণ ভাবে সংঘটিত করে যাওয়া সম্ভব হবে। অথচ সরকারের পতনও হবে না। শাসকগোষ্ঠী যে রাজনৈতিক শিবিরকে দিয়ে দেশলুন্ঠনের কাজটি করতে চাইবে। গণমাধ্যমের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে দেশের বৃহত্তর অংশের জনতা, সেই রাজনৈতিক শিবিরকেই নির্বাচনের পর নির্বাচনে জয়ী করে সরকারে বসিয়ে রাখবে। এটাই পুঁজিবাদী গণতন্ত্রের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া এবং চরিত্রও বটে। দেশের যারা শাসকগোষ্ঠী। পুঁজি তাদেরই হাতে মজুত। ফলে সেই পুঁজির জোরেই তারা পুঁজির স্বার্থে গণতন্ত্রকে গণমাধ্যমের মাধ্যমে নিজেদের কাজে লাগিয়ে রাখবে। এটাই পুঁজিবাদী ধনতন্ত্রের স্বরূপ। এই চিত্র কেবলমাত্র আমাদের দেশই নয়। সমগ্র গণতান্ত্রিক দেশগুলিতেই কম বেশি বর্তমান। আর আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র হলো এই প্রক্রিয়ার মক্কা মদীনা। সেখানে শাসকগোষ্ঠীই দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলকে নিয়ন্ত্রণ করে। এবং শাসকগোষ্ঠীর পুঁজিতেই মার্কিন গণমাধ্যমগুলি সচল থাকে। ফলে শাসকগোষ্ঠী জনতাকে সবসময়ে বিভ্রান্ত করে রাখতে গণমাধ্যমগুলির মাধ্যমে ক্রমাগত জনতাকে বেকুব বানিয়ে চলে। জনতা ভোটার রূপে একবার একটি রাজনৈতিক দলের উপরে ক্ষুব্ধ হলে বিপক্ষ রাজনৈতিক শিবিরকে নির্বাচনে জিতিয়ে নিয়ে আসে। যে রাজনৈতিক শিবিরের টিকিও সেই একই শাসকগোষ্ঠীর হাতে বাঁধা থাকে। শুধু তাই নয়। শাসকগোষ্ঠীই ঠিক করে কোন নির্বাচনে কোন রাজনৈতিক শিবির জয়ী হবে। গণমাধ্যমগুলি সেই রাজনৈতিক শিবিরকে সেই নির্বাচনে জিতিয়ে আনতে ক্রমাগত জনতাকে বেকুব বানিয়ে চলে। আর জনতা ভোটার রূপে গণমাধ্যমগুলির ইশারায় পরিচালিত হয়ে তাদের স্থির করা রাজনৈতিক শিবিরকে জয়ী করে আনে। আমেরিকায় এই প্রক্রিয়াটি আগাগোড়া নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। কারণ সেখানে কেবলমাত্র দুটি রাজনৈতিক দলই সরকার গড়ার নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত। সেখানে তৃতীয় কোন রাজনৈতিক শিবিরের প্রবেশের কোন উপায় রাখেনি সেদেশের শাসকগোষ্ঠী। ফলে হয় রাম নয় শ্যাম। এবং দুজনেই শাসকগোষ্ঠীর মনোনীত। ফলে ভোটে যেই জিতুক। দেশের শাসনভার শতকের পর শতক সেই একই শাসকগোষ্ঠীর হাতে থাকবে। সেই দেশের সংবিধানও এই ব্যবস্থার রক্ষক। এই কারণেই মার্কিন মুলুকে ইভিএমের ভিতরে প্রোগ্রামিং-এর কারসাজি করে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক শিবিরকে নির্বাচনে জিতিয়ে শাসনক্ষমতায় বসানোর প্রয়োজন নেই কোন।

ভারতের কথা কিছুটা ভিন্ন। এখানে বহুদলীয় গণতন্ত্র। সংবিধান স্বীকৃত। কিন্তু দেশের শাসকগোষ্ঠীর প্রয়োজন একটি নয়তো দুইটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক শিবির। তাহলে আর ইভিএমের পক্ষ নিয়ে দাঁত কামড়িয়ে পড়ে থাকতে হয় না। যে পক্ষই জিতুক। শাসনভার শাসকগোষ্ঠীর হাতেই থাকবে। 

কিন্তু বহুদলীয় গণতন্ত্রের সমীকরণ ভিন্ন। সেই কারণেই সাবধানের মার নেই। গণমাধ্যমগুলি তো তাদের ব্রেনওয়াশের কাজ করেই চলছে, চলবে। কিন্তু তারপরেও হিসাব উল্টে যেতে পারে। তাই ইভিএমই এই দেশে শাসকগোষ্ঠীর শেষ রক্ষাকবচ। এই কারণেই ভারতবর্ষ আর ব্যালটে ফিরতে পারলো না মার্কিন মুলুকের মতো। ইভিএমের কারসাজি’র কোন প্রমাণ থাকে না। কিন্তু ব্যালট পেপারে নির্বাচন সংঘটিত হলে রিগিং থেকে ছাপ্পা ভোট। বুথ দখল থেকে বোমাবাজি করে ভোটারদের ভয় দেখানো। প্রতিটি ধাপের রিয়েলটাইম রেকর্ড রয়ে যায়। জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতে পারে। ভোট লুঠ ধরা পড়ে গেলে। কিন্তু ইভিএমে সেই ভয় নেই। দেদার ভোট লুঠ হলেও। জনতার সামনে কোন প্রমাণ থাকবে না। আর সেই সুযোগটাই গণমাধ্যমের কাছে তুরুপের তাস। ‘ফ্রি এণ্ড ফেয়ার ইলেকশন’র ঢাক ঢোল কাঁসর ঘন্টা বাজিয়ে যাবে চব্বিশ ঘন্টা ধরে। জনতা আরও বিভ্রান্ত হবে। মনে মনে বিশ্বাস করতে শুরু করবে। তবে তো গণমাধ্যমই ঠিক। যে দলের পক্ষে নির্বাচনী হাওয়া বলে প্রচার করতে থাকে। সেই দলটি তবে সত্যই বিকল্পহীন। দিনে দিনে জনতা শাসকগোষ্ঠীর ঠিক করে দেওয়া রাজনৈতিক শিবিরটিকেই বিকল্পহীন একমাত্র রাজনৈতিক শক্তি বলে বিশ্বাস করতে শুরু করে দেবে। সরকারের সকল ধোঁকাবাজিও জনতার সয়ে যাবে। নির্বাচনের পর নির্বাচনে জনতা সেই দলকেই শাসনক্ষমতায় ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। গণমাধ্যম যে দলটিকে জনতার সামনে আদর্শ দল হিসাবে তুলে ধরবে।

ফলে আমাদের দেশে গণমাধ্যম আর ইভিএম পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক। বহুদলীয় গণতন্ত্রে এই দুটিই একেবারে অপরিহার্য্য। দেশের শাসকগোষ্ঠীর স্বার্থেই তাই গণমাধ্যমগুলি দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে ‘ইভিএম হঠাও দেশ বাঁচাও’ আন্দোলনের খবর বেমালুম চেপে গিয়েছে জনতার কাছে। উল্টে ইভিএম নিয়ে সন্দেহবাতিকতাকে সময়ের থেকে পিছিয়ে থেকে প্রযুক্তি বিরোধীতা বলে বৃহত্তর একটি অংশের মানুষকে বিশ্বাস করিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে।

অন্যদিকে এই গণমাধ্যমই বহুদলীয় গণতন্ত্র থেকে ভারতবর্ষকে একদলীয় শাসনতন্ত্রে নিয়ে আসার সর্বোৎকৃষ্ট হাতিয়ার। সেই কারণেই দেশের শাসকগোষ্ঠী গণমাধ্যমগুলিকে সম্পূর্ণভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে। তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে কোন গণমাধ্যম দাঁড়িয়ে গেলেই সরকারকে দিয়ে সেই সেই গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করে দিতে উদ্যোগী হচ্ছে। ক্ষেত্র বিশেষে জনপ্রিয় অথচ শাসকগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। এমন গণমাধ্যমগুলিকে পুঁজির জোরে কিনে নিয়ে নিজেদের নেটওয়ার্কের ভিতরে বন্দী করে ফেলছে। গত বছর এনডিটিভি’র অধিগ্রহণ তার সেরা নিদর্শন। দিনে দিনে ভারতবর্ষ যে একদলীয় শাসনতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাবে। তার একাধিক লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে। তবে সেটি যে ঠিক চীনের মতো হবে। সেটি মনে হয় না। কারণ এত বিচিত্র এই দেশ। এত বেশি বিচিত্র রকমের বিভিন্ন ভাষাভাষী জাতির অধিষ্ঠান এই দেশে। মনে হয় না একেবারে একদলীয় শাসনব্যবস্থা পত্তন করা সম্ভব হবে। বরং গণমাধ্যমগুলিকে হাতিয়ার করে এমন একটা সামাজিক রাজনীতির জন্ম দেওয়া সম্ভব। যেখানে বহুদলীয় গণতন্ত্রেই নির্দিষ্ট একটি দলের গ্রহণযোগ্যতাই জনতার কাছে শেষকথা বলে দাঁড় করিয়ে দেওয়া সম্ভব হতেই পারে। ভারতবর্ষের শাসকগোষ্ঠীর পাখির চোখ কিন্তু ঠিক সেই দিকেই। আর সেই কারণেই গণমাধ্যমের পাশাপাশি ইভিএমের কার্যকরিতা এতটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ