রত্নদীপা দে ঘোষ | তিনটি কবিতা

রিনিঝিনি মায়াবিনী 

আতরের পল্লব,  জপ করুক বিভাময় পথনির্দেশিকা। 

ততক্ষণে আপনি অতল ভূষণে প্রবেশ করুন। পানকৌড়িকে মুক্তকণ্ঠে দান করুন আলেয়ার মাভৈ।  দেখুন, কোলাজ বদলের সাহানা। শুনুন, কোন রাগিণীতে গাঁথা হচ্ছে ফুসমন্তরের তোড়ি। 

উঁহু। তাপমাত্রা কম করবেন না। স্বাতীতারার গোমেদ। সেঁকে নিন চেনাঢঙ, অচেনা অনুসুয়া। 

ধিকিধিকির নোঙর এখন একটু কম করতে পারেন। নদীতটের পানিস্বচ্ছতা মেপে নিন। 

জারুলস্নিগ্ধ কাশফুল। বাজুক রান্নার ওম। জুলজুল তাকিয়ে আছে নয়নতারা আর তারাবৃষ্টি।  

খুব ধীরে ধীরে, আটপৌরে কবুলগন্ধ। নিভিয়ে দিন বনানী।

ভয় পাবেন না। জানবেন,  রাতের সঙ্ঘমিত্রা আসলে মহাফেজখানার ফুসফুস।   


পালংবেগুন বড়িঘণ্ট

দু’চারখানা আত্মমগ্ন রূপক একটি রেকাবীতে। জল একটু দেবেন না। মাঝে মাঝে জলপানির প্রজ্ঞাটুকু ছিটিয়ে দিন। শুশ্রূষার প্রলেপ। কয়েকফোঁটা আলিঙ্গন।  দার্শনিক মেঘ থেকে ধার করতে পারেন ধারালো একখণ্ড ভৌগলিক মলাট। 

অন্য একটি পাত্রে, ছুটিঘণ্টার সাথে নাড়াচাড়া করুন হাওয়ামোরগের হাতছানি। দেখবেন রঙ কেমন পাল্টে যাচ্ছে আবহাওয়ার। 

এখন চাই জলবায়ুর দিক, ধারকের বহন ক্ষমতার পরিবর্তন। উল্টে পাল্টে নিন মৃগশিরার প্রেমজ  ব্যাকরণ। মেপে নিন পানীয় নাগরদোলা, বুদবুদের আয়তন। রেশমি বুনোটে জমা রকমারি সম্ভাবনা।

অন্তরস্বাদে লীন জায়ফলের শোভা। ঝিকমিক করে উঠুক টলটলে কুহক, রাজমা-রাঙানো উল্লাস।  

 

মেথিশুক্তো বড়োভক্ত

আসুন, আজ রন্ধন করি নিরামিষ পাবন। প্রথমে শব্দ আর অক্ষর মহল্লায়, বাক্যের মশালা রাখুন বেটে। হরতনের টেক্কা মিশিয়ে তৈরি করুন বেহাগ। শালপাতার তৈরি হোক সানাইয়ের মৌচাক। 

বেছে নিন স্বপ্নজ সুসমাচার। সাথে থাক আপনার মনন, কারিগরি।

মনের মতো কোন অভিমান,  সম্ভব হলে লহরী আক্রান্ত ছায়ারাতের গৃহকোণ মেশান।

যারপরনাই মজবুত করুন ম্যাজিকের জাদু। নেড়েচেড়ে নিন পালবদলের নৌকোকড়ি।

এখন খুব গাঙ। জোয়ারে লুকোনো ফন্দি। ফিকিরটি আপনার হাতেই। শ্রেষ্ঠ রাঁধুনি আপনি। 

স্পর্শ করলেই বুঝবেন, কতগুলি নিরিবিলি খলবল করছে নিস্তব্ধ তবলার ফুলকিতে। 


রত্নদীপা দে ঘোষ | তিনটি কবিতা


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ