টালমাটাল একটা অপদার্থ হৃদয় নিয়ে বাস আমার। কোন কিছুই বুঝতে শিখল না। নরম শিউলির মত ভোর, উৎসবের হলুদ রোদ, বিন্দু বিন্দু শিশিরের গায়ে শিশুর আঘ্রাণ কোন কিছুই স্পর্শ করছে না এই তুমুল রথ টানা আশ্বিনের সকালে। হৃদয় ভারহীন, আর বোধ, কেমন ভোকাট্টা ঘুড়ির মত ইলেকট্রিক তারে দুলছে পেন্ডুলামের মত। যখন তখন লাট খেয়ে আবার অন্য কোথাও পড়বে। আসক্তি আর ইচ্ছা, নিস্পৃহ কুকুরের মত কুন্ডলী পাকিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।
নাহ! কিছুই স্পর্শ করেনা আজকাল, মাল্টিপ্লেক্সের সিনেমার বিজ্ঞাপন ফ্লেক্স জ্বলজল করে। সন্ধ্যায় হাজারো মুখ পুজো শপিং এর ভিড়ে, আমার শুধু পায়ের নিচে থৈ থৈ জল লাগে বন্যার, ভেসে যাওয়া সার্টিফিকেট এখন খেলার নৌকার মত কোথায় ভাসছে কে জানে, সাথে যাচ্ছে সরে সরে ভবিষ্যৎ। ভাদরের মেঘেও কি শ্রাবণের মেঘের ভাঁজ ছিল! বর্ণময় দিনে,অতিথি আসলে, আমার ক্লিষ্ট চোখ, বায়ু শূন্য হৃদয়, দিয়ে কি আনন্দ দেব তাকে, এই বিষন্নতায় তো শুধু শুশ্রূষার ভাত মাখা যায়। মাথা চলে না, দেদার আলোতেও কেমন যেন অন্ধকার লাগে চারদিক!
কাকে ভালোবাসব এই অঝোর বন্যায়, পিঠ চাপড়ানি আর রিলিফের কুড়ো দিতে আসা লোকগুলোকে দেখলেই কেমন আরো অপদার্থ লাগে নিজেকে! আগামী সমস্ত বসন্ত জুড়ে শুধুই ঘরে ফেরার তাগিদ! তাও কি ফিরতে পারবে! সে দেশেও তো উৎসব আসে, আলো জ্বালার মত উজালা পাবে কি আর! চারদিকে কত নিরন্ন মুখ, বন্ধ কারখানার তালার উপরে কত কাগজ সাঁটা, জামার মত, শুধু সংগ্রামী শ্রমিক নেতার পাঞ্জাবী রঙিন উৎসবের মত হলুদ! চারদিকে রিলিফ ফান্ড চলছে দেদার মানবিকতার ফুলঝুরি পুড়ছে! ও মশাই পৌছে যাবে তো তাদের কাছে!
প্রত্যেক ঋতুচক্রেই তো উৎসব আসে কিন্তু কবে উৎসবের আলো ইতিহাসের অণুশাসনের আলোক ধম্ম হবে কেউ জানে না। বোধনের মঙ্গল ঘটে ঠাকুর মশাই কলাচারা বসালেন, বিড় বিড় করে মন্ত্র পড়ছেন! জোরে জোরে কে যেন আমার ভেতর থেকে বলে উঠল হলোনা হলোনা, থেকে গেল কিছু,এক বুক বাতাস নিলাম তাও সাই সাই শব্দ ওঠে কেন! আমার ভারশূন্য মন আবার দুলতে থাকে উৎসবের অনিশ্চিত আলোতে---- তবু কোথাও নিয়ম মত ট্রেন ছুটে যায়, রেল গেটের পাশে কাশ ফুল গুলি রেখে-----
suvasree1972@gmail.com
0 মন্তব্যসমূহ
সুচিন্তিত মতামত দিন