শৌ ন ক / স্নেহা


স্নেহা,
গতকাল তোর চিঠি পেলাম।তুষারে ছাপ রেখে রেখে শব্দগুলো দৌড়ে এলো আমার দিকে। তুই নাকি দোলা হয়ে গেছিস? কান্নাকাটি আমার একদম পছন্দ না সেটা তুই জানিস! তারপর ও কান্না কেন? মম কেন তোকে এত জ্বালাচ্ছে সেটা তুই ধরতে পারিসনি আমি নিশ্চিত ।যাক সে কথা বাদ দেয়া যাক,বাদ দেয়া যাক আরো কিছু তুচ্ছ সময়। বইমেলায় আমি যাব এবং সেদিন সবকটা আমার সাথেই থাকবে বেলুন আর হাসনাহেনা হয়েই তাই অমূলক ভাবনাও বাদ দেয়া যাক আজ।

তোর মনে আছে তোকে প্রথম দিন কি লিখেছিলাম বোধ হয় মনে নেই। ছয়বছর ধরে কিছু লাইন মাথায় না থাকাটাই স্বাভাবিক আর যদি থেকে থাকে তবে ভেবে নেবো আমার জীবনের একটি লেখা মহাকাল বুক পকেটে রেখে দিয়েছেন। অনেক দিন পর সেই লাইনগুলো আজ আবার লিখতে ইচ্ছে করছে রে...
স্বপ্নপোড়া চোখ
আদি পৃথিবীর ইতিহাস
দুঃসময়ের পরাক্রমে
বিশ্বাসী আত্মার মৃত্যু
এমন বোন যার
যেখান থেকে শত শত বর্শার ফলক ভেঙে
বেরিয়ে আসবে ঝর্ণা
আমরা ভাই বোন নদী হয়ে
গ্লানির দহনে ভস্ম হওয়া পৃথিবীকে
দেবো স্বপ্নের চন্দ্রাবলী রাত
এটাই হোক আমাদের জীবনের গান!
মনে পড়লো কি তোর?

কাল একুশে ফেব্রুয়ারী,হিম শীতল পাথরের ওপর তাজা উষ্ণ রক্তের মতো ফুলের স্তবক সারি সারি। আমি জানি অনেক নামহীন ফলকে অনেকের নাম লেখা নেই কিন্তু আমার বিশ্বাস প্রতিটি স্তবকে থাকবে এদের নাম!কি বলিস তুই? আমাকে তোর চেয়ে ভাল কেউ চেনে না এমনকি আমার মা ও না হয়ত!আর তাই কি আজ মনে হচ্ছে চোখের জলে ভেসে গেলো শিবরাত্রির চন্দন ধূপ আর ফুলের সুবাস আর পৃথিবী ডুবে গেলে আমার প্রিয় বোন স্নেহার নোনাজলে?

না তা হয়ত নয় কেননা ঈশ্বরও পায়ের কাছে আমার হয়ে নত আজ শিবরাত্রির ব্রত শেষে সে নিশ্চয় দিয়ে যাবে অখন্ড আকাশ অনন্ত নীলিমা খুব কাছে এনে দেবে দূরের নদী সুদূর সমুদ্র আর নিসর্গের পদাবলী। কফি এসে গেছে বিটু এবার একটু বিরতী নিয়ে লিখছি।

তোর কফির গন্ধ পেলাম।অর্ধ বয়সের মতো বুদ্ধের অশ্বত্থ ছায়াকাশে মুখের বদলে,চোখের বদলে,মোমগাঢ় বেদনা ছাপিয়ে আমি ছড়িয়েছি হাসনাহেনা আর ব্যক্তিগত ধূসরতা! ভয় পাস না আমরা অমর হব তামাকা বিলাব ফের.. দিন শেষে করতলে গুঁজে নেবো রাশি রাশি সন্ধ্যাতারা অপলক নিবিড়-নিভৃতে...

তুমুল ঢেউয়ের মত ভাল থাক।

দাদা
২০.০২.২০১২



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ