রুমকি রায় দত্ত

rumki






 হিমাচলের হাতছানি দ্বিতীয় পর্বঃ

দু’দিনের ট্রেন সফরের সব ক্লান্তি যেন কোনো এক জাদুকাঠির ছোঁয়ায় অদৃশ্য হয়ে গেল।মনের মধ্যে তখন দামাল শিশুর চপলাতা।লাফিয়ে নামলাম স্টেশনে।ট্রেনার যাত্রীরা একে একে মিলিয়ে যেতেই স্টেশনে নেমে এলো নিঃস্তব্ধতা যেন কোনো দুষ্টু দৈত্য তার মায়া মন্ত্রে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে সকলকে।কুয়াশার একটা সুন্দর গন্ধ আছে,কেমন ঝিমঝমে নেশা ধরানো সেই গন্ধ।

কালকা থেকে সিমলা সড়ক পথে বা ট্রয় ট্রেনে যাওয়া যায়।কালকা থেকে সিমলার দূরত্ব প্রায় ৯১ কি.মি.।যদি সময় বাঁচাতে হয় তবে সড়ক পথে বাসে যাওয়া ভালো।কিন্তু এই পথে গেলে প্রকৃতির অনেক সৌন্দর্য উপভোগ করা থেকে বঞ্চিত হতে হবে।যদি ভ্রমণের প্রকৃত আস্বাদ নিতে হয় তবে ট্রয় ট্রেনের বিকল্প নেই। এখান থেকে ভোর ছ’টায় ছাড়ে বিলাসবহুল বা এ.সি কোচের ট্রেন শিবালিক।এই ট্রেনে যেতে হলে কোলকাতা থেকে আগে বুকিং করতে হবে।কালকা পৌঁছানোর পর এই ট্রেনের টিকিট পাওয়া সম্ভব নয়।তবে যারা টিকিট বুকিং না করে যাবেন তারা প্যাসেঞ্জার ট্রেনের টিকিট পেয়ে যাবেন।কালকা থেকে সিমলা বিলাসবহুল শিবালিক ট্রেনে সময় লাগে প্রায় ৫ ঘন্টা আর প্যাসেঞ্জার ট্রেনে সময় লাগে ৬ ঘন্টা।এই পথে মোট ২০টি স্টেশন ও ১০৩টি টানেল রয়েছে।এর মধ্যে ৩৩নং বারোগে টানেলটি পেরতে সব থেকে বেশি সময় লাগে।

যারা কালকা পর্যন্ত যাবেন না তারা চন্ডীগড় থেকে ভাড়ার গাড়ি বা প্লেনে যেতে পারেন।

প্রায় ছ’টা বাজতে চলেছে।তখনও সূর্যমামার ঘুম ভাঙেনি,কুয়াশার চাদরে পৃথিবী তখনও আবৃত।তারই মাঝে এসে দাঁড়ালো আমাদের ট্রেন।আমরা যেহেতু আগে থেকে শিবালিকের বুকিং করার ব্যাপারটা জানতাম না,তাই আমাদের ভাগ্যে জুটেছিল প্যাসেঞ্জার ট্রেনের টিকিট।শিবালিক ছেড়ে যাওয়ার মিনিট কুড়ি পরে ছাড়ল আমাদের ট্রেন। ছোট্ট একটা ট্রেন আঁকা-বাঁকা পাহাড়ী পথে ছুটে চলল মাথায় ধোঁয়ার শিষ আর কু-উ-উ ঝিকঝিক আওয়াজটা পাহাড়ের গায়ে ধাক্কা খেয়ে ফিরে ফিরে বাজতে লগলো আমাদের কানে। তখন সবে ছেঁড়া ছেঁড়া সূর্য কিরণ কুয়াশার ছিদ্র পথে বিচিত্র রঙ নিয়ে খেলা শুরু করেছে।প্রকৃতির রহস্য ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে।জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখলাম ফেলে আসা পথের রূপরেখা আর আমাদের ট্রেনের পিছনের অংশ। এসে থামলো ছোট্ট একটা স্টেশনে।নামলাম ট্রেন থেকে।পাহাড়ের কোলে গড়ে ওঠা কোন এক অখ্যাত গ্রামের নির্জন স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকার অনুভূতিটা হয়তো লিখে ব্যক্ত করা কঠিন।

প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘন্টার পথ আর ১০৩টি টানেল আর প্রায় ১৮টি স্টেশন পাড় করে যখন প্রায় সিমলার কাছাকাছি এসে পৌঁছেছি তখনই হঠাৎ একটা পাহাড়ের বাঁক ঘুরতেই দেখতে পেলাম ঝুরঝুরা থোকা থোকা বরফ।ট্রেন পথের বাঁ-দিকে গভীর খাদ আর ডানদিকে প্রায় একহাত দূরত্বেই দাঁড়িয়ে থাকা মেটে রঙের পাহাড়ের গায়ে লেগে রয়েছে ঐ ঝুরঝুরে বরফ।নিজের অজান্তেই চিৎকার করে উঠালাম---‘বরফ---বরফ’।ধীরে ধীরে ট্রেন প্রবেশ করল সিমলা স্টেশনে।বেশ জন বহুল।হাজার হোক রাজধানী বলে কথা।

আমরা পা রাখলাম হিমাচলের রাজধানী সিমলার মাটিতে।এক সময় ব্রিটিশ শাষিত ভারতবর্ষের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী ছিল সিমলা। এক দিকে ধৌলাধর ও বিস্তৃত অর্ধচন্দ্রাকার শিবালিক রেঞ্জের মাঝে প্রায় ৭১৯২ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত সিমলা। ১৯ শতকে অ্যাংলো-গুরখা (anglo-gurkha war)যুদ্ধের ব্রিটিশরা এই স্থানটি অধিকার করে ছিল।

যেহেতু অফ্‌ সিজন হোটেল পেতে সমস্যা হল না।স্টেশনেই হোটেলের প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ হল।সিমলা ম্যাল থেকে সামান্য পাঁচ মিনিটের হাঁটা পথের দূরত্বে অবস্থিত কার্ট রোডে ‘ হোটেল হনস্‌’ হল আমাদের তিন দিনের আস্থায়ী বাসা।প্রায় দুটোর দিকে স্নান সেড়ে আমরা বেরোলাম খাবার খোঁজে।পাহাড়ের গায়ে খাঁজ কেটে ধাপে ধাপে উপরে উঠেছে আমাদের হোটেলটি।গ্রাউন্ডফ্লোরটা প্রায় মাটির নিচে।ঠিক ফার্স্টফ্লোরের মাথার সমান উচ্চতা থেকে একটা রাস্তা পাহাড়ের গা কেটে তৈরী করা হয়েছে।আমরা এই রাস্তা ধরে বাঁ-দিকে এগিয়ে চললাম।সরু গলির মত রাস্তাটার দু’পাশে ছোটো ছোটো খাবার দোকান।আমরা এমনই একটা দোকানে দুপুরের খাওয়া সেড়ে ঐ রাস্তা ধরে সামনের দিকে এগিয়ে চললাম।দুপুরে স্নানের পর শরীরটা বেশ ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল।মনে এক টুকরো রোদের জন্য তখন ভীষণ পিপাসা।সরু রাস্তাটা প্রচন্ড চড়াই।কিছুটা হাঁটতেই পায়ের পেশীতে ভীষণ টান ধরল।রাস্তার শেষ প্রান্তে এসে সামনেই পেলাম একটা তিন মাথার মোড়।বাঁ-পাশে পাহাড়ের কিনারার ধারে একটা কাঠের লম্বা চেয়ার।পাশেই দাঁড়ানো গাছের হলুদ-সবুজ-বাদামী রঙের পাতা ঝরে পড়েছে বেঞ্চের চার পাশে-দু’একটা বেঞ্চের উপর।আমরা ঐ বেঞ্চের সামনে দিয়ে কিছুটা যেতেই এসে পড়লাম সিমলা ম্যাল রোডে।এই ম্যাল রোডে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ল ব্রিটিশ আমলে তৈরি ইউরোপীয় স্থাপত্যের বহু প্রাচীন বাড়ি, যে গুলি এখন সরকারি কাজে ব্যবহৃত হয়।

সিমলার সবথেকে আকর্ষনীয় স্থান হল ম্যাল রোড়।পাহাড়ের গা কেটে তৈরি এই রাস্তার এক পাশে পাহাড় তার গায়ে জন্মানো বিভিন্ন জংলা ফুল,আর একপাশে রাস্তার কিনারা বরাবর রেলিং।এই রেলিং এর ধার ঘেঁষে পড়ন্ত দুপুর অথবা জাগতে থাকা সকালের মিঠে সোনালী রোদ গায়ে মেখে হারিয়ে যাওয়া যার অতীতের সুখস্মৃতিতে বা আগামীর স্বপ্নে।নব বিবাহিত দম্পতি বা আশি বছরের বৃদ্ধ দম্পতি—সিমলা ম্যালের জাদু সবার মনেই একই রোমান্টিকতার আবেশ সৃষ্ট করবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

rumki
ম্যাল রোড সোজা গিয়ে মিশেছে স্থানীয় লক্কর বাজারে। আমরা পূর্বের ফেলে আসা বেঞ্চর পাশের রাস্তা দিয়ে সোজা এগিয়ে গেলাম।এই রাস্তায় কিছুটা গেলেই কালীবাড়ি। খাড়াই রাস্তা ধরে উঠতে গিয়ে শুরু হল শ্বাস কষ্ট,সঙ্গে পায়ের পেশিতে টান।কিছুটা গিয়েই ডান দিকে সরু সিঁড়ি দিয়ে খানিক উপরে উঠেই দেখতে পেলাম সিমলা কালীবাড়ি।পাহাড়ের গায়ে খাঁজ কেটে নয়,এটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত।অদ্ভূত এক নিঃস্তব্ধতা বিরাজ করছে।বাতাসে সুন্দর একটা সুবাস।মন্দিরে সামনে নাটমন্দিরের মত বাঁধানো অংশের কিনারা বরাবর প্রাচীরের বেষ্টনীর বাইরে চোখ রাখতেই সীমানা আবারিত হয়ে গেল নিঃসীম খাদের অতলে,যেন নিকষ কালো অন্ধকারের বুক চিঁড়ে ঝিকমিক করছে শতসহস্র জোনাকি।আকাশটা কখন নেমে এসেছে খাদের কোলে।মন্দিরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম স্বমহিমায় বিরাজ করছেন—দেবী চন্ডিকা,দেবী কালিকা আর মা শ্যমলা।সিমলা একদা শ্যমলা নামে একটা গ্রাম ছিল,দেবী শ্যমলার নাম থেকেই সেই গ্রামের নাম শ্যমলা হয়।পরবর্তী কালে এই শ্যমলা নামটির থেকেই এই স্হানের নাম হয় সিমলা।

সিমলায় এই কালি বাড়ীটি বহু প্রাচীন...এখানে বাঙালী পুরোহিত দ্বারাই দেবী পূজিত হন।কালি বাড়িতেও থাকার বিশেষ ব্যবস্থা আছে।এর জন্য তিন-চার মাস আগে থেকে কালিবাড়িতে জানাতে হয়।তবে দূর্গা পূজার সময় এখানে থাকার অনুমতি মেলে না।

সিমলা ম্যালে বেড়ানোর সাথে দেখে নিলাম ১৮৫৭ সালে নির্মিত নিও-গথিক শৈলিতে তৈরি আংলিকান ক্রাইস্ট চার্চ।এটিও সিমলার অপর একটি আকর্ষণ।রাতের অন্ধকার নেমে আসার সাথে সাথে আলোয় ঝলমল করে ওঠা এই চার্চটির অপার সৌন্দর্যে মুগ্ধ না হয়ে পারলাম না।

পায়ে পায়ে হাঁটার সাথে উপভোগ করলাম সিমলা ম্যালে গড়ে ওঠা হরেক পসরার দোকান।কেউ রুম হিটার নিয়ে গা-হাত সেঁকছে কেউ ব্যস্ত ক্রেতাদের নিয়ে।হরেক রকম পসরার মাঝে বিকিকিনির এই হাটে সিমলার হিমেল সন্ধ্যেটা বর্ণময় হয়ে উঠলো।

পরদিন সকালে আমাদের যাত্রা কুফ্‌রির উদ্দেশ্যে।এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি আমরা সিমলায় যে হোটেলে ছিলাম তাদের সাথেই চুক্তি করেছিলাম সিমলা,মানালি থাকা ও ঘোরা শেষে কালকা ড্রপ।পুরো একটা প্যাকেজ।এখানে এই ধরনের প্যাকেজে ঘোরা অনেক সুবিধা জনক।ঠিক সকাল ন’টা বাজতেই গাড়ি এসে দাঁড়াল হোটেলের বাইরে।ফেব্রুয়ারী মাস,সকালে শীতের তীব্রতা অনেক বেশি,কুয়াশার বেড়া ভেঙে এগিয়ে চলল আমাদের গাড়ি কার্ট রোড থেকে ষোলো কিমি দূরে কুফ্‌রির উদ্দেশ্যে। আঁকাবাঁকা সরু পাহাড়ী পথে প্রায় ৩কিমি পথ যাওয়ার পর পৌঁছালাম ‘গ্রীনভ্যালি’।পাহাড়ের গা বেয়ে গড়িয়ে যাওয়া সরু রাস্তার বাঁ-পাশে সুউচ্চ পাহাড় এসে মিশেছে রাস্তায় আর ডান পাশে সুগভীর খাদ।খাদের গা বরাবর উপর থেকে নিচে নেমে গেছে ঘন সবুজ পাইন গাছের জঙ্গল। গাড়ি থেকে নামতেই মনে হল থোকা থোকা ধোঁয়া উড়ে বেড়াচ্ছে, শীত যেন তীব্র কামড় বসাতে চাইছে। কোনো এক মায়াবী টানে মন ছুটে যেতে চাইছে খাদের কিনারে।সিমলার রুক্ষ পাহাড়ের মাঝে গ্রীনভ্যালি যেন হৃৎপিন্ডের মত জেগে আছে।এখান থেকে আবার শুরু করলাম যাত্রা,পথে একটা রেস্তোরায় দুপুরের খাওয়াটা সেড়ে নিলাম। কুফ্‌রি ঢোকার একটু আগেই রয়েছে ‘হেলিপ্যাড’...অফ্‌ সিজন 

এখানে দেখার কিছুই নেই,চারিদিক বরফে ঢাকা। এখানেই রয়েছে Wild Flower Hall.. শীতে এখানে দেখার কিছু নেই,তবে মার্চ-এপ্রিল মাসে এখানে দেখা যায় বিভিন্ন ফুলের সমাহার।একটু এগিয়ে রাস্তাটা ডানদিকে বেঁকে গেছে কুফ্‌রির দিকে।বরফ গলা জল আর ঘোড়ার বৃষ্ঠায় রাস্তাটা ভীষণ নোংরা।গাড়ি থেকে নেমেই দেখলাম সামনেই একটা ছোট্ট পার্ক।পায়ের নিচে বরফের কার্পেট। সারিবদ্ধ লোহার চেয়ার,দোলনা মনোরম এক পরিবেশে বেশ কিছুটা সময় কাটাতে মন্দ লাগলো না। কুফ্‌রি যেতে পড়তে হবে ভাড়ার জুতো,হাফ্‌গাম্বুট...প্রতি জোড়া জুতোর ভাড়া তখন ছিল ৫০ টাকা।এখন সেটা বাড়তে পারে।কুফ্‌রি যেতে এই ধরনের জুতোর বিশেষ প্রয়োজনীয়তা আছে।প্রথমত ফাগু ভ্যালি দিয়ে কুফ্‌রি যাওয়ার পথে হর্স রাইডিং করতে এই জুতো বিশেষ সাহায্য করে।দ্বিতীয়ত, কুফ্‌রিতে বরফে ঘুরতে সাহায্য করে।আমরা ২৫০ টাকা প্রতি ঘোড়া হিসাবে ভাড়া নিলাম—এতে আমরা দেখতে পাব মাহাসু পিক, নাগ টেম্পল, কুফ্‌রি।

ঘোড়ার পিঠে উঠতে গিয়ে বুঝলাম সেটা যতটা সহজ মনে করেছিলাম,ততটা নয়।বাঁ-পা, পা-দানিতে রেখে ডান পা ঘুরিয়ে পিঠে উঠতে গিয়ে বুঝলাম,ঘোড়ার উচ্চতা।পিঠে বসার জায়গায় একটা উঁচু মত ধরার জায়গা আছে।সেটা ধরে বসে রইলাম,আর আমাদের সহিস ঘোড়ার রাশ ধরে নিয়ে চলল আমাদের।ভয়ানক সেই রাস্তা।উঁচু-নিচু,এবড়ো-খেবড়ো তাতে আবার বরফ গলা জলে রাস্তা পিচ্ছিল।কোথাও কোথাও কাদার মাঝে ঘোড়ার পা ডুবে যাচ্ছে।এই পথে পায়ে হেঁটে যাওয়াও মুশকিল সেখানে ঘোড়ার পিঠে ভয়ানক পরিস্থিতি। চোখের সামনে দেখলাম এক অতি উৎসাহী দম্পতি এই পথ পায়ে হেঁটে যাবার চেষ্টায় আছাড় খেল জল-কাদায়। পাহাড়ি রাস্তায় ঘোড়া চড়ার একটা বিশেষ নিয়ম আছে।ঘোড়া যখন নিচে নামে তখন পিছনে হেলে বসতে হয়,ঠিক উল্টোটা মানে ঘোড়া যখন উপরে ওঠে তখন সামনে ঝুঁকে বসতে হয়।এতে ঘোড়ার দেহের ভারসাম্য বজায় থাকে।সংকীর্ণ এই কাদা মাখা পথে এসে পৌঁছালাম “মাহাসু পিক”---এখানে প্রবেশ করতে আলাদা টিকিট লাগে।ঘোড়া দু’ঘন্টার জন্য এখানে দাঁড়াবে।আমরা পায়ে পায়ে এগিয়ে চললাম বরফ রাজ্যে।কিছুটা কাদা মাখা পিছল পথে যাওয়ার পরই শুরু হল সাদা বরফের চাদরে মোড়া বিস্তীর্ণ অঞ্চল।দেখার জন্য বিশেষ কিছু না থাকলেও প্রকৃতি এখানে অকৃপণ।যে দিকে দৃষ্টি যায় শুধু বরফ। ঝুরঝুরে পেঁজা তুলোর মত বরফের বিছানায় পা ডুবিয়ে সে এক অনাবিল আনন্দে মন যেন মাতোয়ারা। ফেব্রুয়ারী মাসে এখানে শীতের কামড় বেশ জোড়াল। ফিনফিনে ঠান্ডা হাওয়া কানের দু’পাশ দিয়ে ছুটে চলেছে।নাকের ডগাটা ঠান্ডায় লাল।এই বরফের গা বেয়ে উঁচু পাহাড়ের উপর থেকে শরীরটা কে হাল্কা ছেড়ে দিয়ে গড়িয়ে নামলাম নিচে।যৌবনে, শৈশব ফিরে পাওয়ার এক আনন্দঘন মুহূর্ত তুলে রাখলাম মনের মণিকোঠায়।

ক্রমশ…।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ