পাঁচটি ভাব কবিতা
প্রথম চর্যাগীতিকোষবৃত্তি
গাছ হয়ে উঠছে শরীর। ইন্দ্রিয় বেয়ে গজিয়ে উঠছে পাঁচ শাখা। মনের রন্ধ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছে ক্রমশ একটা চঞ্চলতা। গুরুপন্থায় সবিশ্বাসে খুঁজতে চাই সেই পরমকাঙ্খিত মহাসুখের পরিমান। সিদ্ধাসনে বসে লুইপাদ নির্দেশ করে একা। সব ফুরিয়ে গেলে সমাধি নামে ক্যানভাসে। সমাধিকেও সামান্যবৎ মনে হয়। দুঃখ-সুখের দড়ি টানার খেলার পর একা দাঁড়িয়ে থাকে মৃত্যুমুখী চেতনার আবহ। শূন্যতার দিকে চেয়ে দেখি। নির্বিঘ্ন আকাশের মতো শূন্যতার দিকে। লক্ষ্য রাখি একা। লুইপাদ সঙ্গ দেয়। হাতে কলমে শিখিয়ে দেয় বাকি সব মিছে..
দ্বিতীয় চর্যাগীতিকোষবৃত্তি
কাছিম দোহনে দোনা ভরে আসে। বিপ্রতীপ সময়ে কুমীরের আয়ত্তে এসে যায় আকাঙ্ক্ষিত গাছের তেঁতুল। বিয়াতিকে ডাকি। নির্দেশ করি বাহিরকে ঘরে নিয়ে আসার। গোপনে চুরি যায় কর্ণভূষা। অবৈধ সময় জেকে বসে ক্যানভাসে। পতি পরিবার ঘুমিয়ে গেলে জেগে বসে বধুটি। নেমে আসে কামনার আবহ। অসূর্যস্পর্শ্যা স্পর্শগম্য হয়ে ওঠে কামনগরে। হেঁয়ালি বাঁধে কবি কুক্কুরীপাদ। গান গায়। একা একা হাসে। তাঁর গানের মানে আমাদের অগম্য হয়ে ওঠে...
তৃতীয় চর্যাগীতিকোষবৃত্তি
শুঁড়িবউ আলগোছে ঘন্টিকারন্ধ্রে সিঁধিয়ে নেয় নেশাতুর দুই মানক দ্রব্য। সেঁধে দেয় সম্ভূতা ঘটের রন্ধ্রে। চিকন চিয়ান বাকড়ে বাঁধে লোকজ সুরার গাঁজ। অবলীলা আর নৈপুণ্য বেঁধে ওঠে তেজাক্ত সন্দর্ভে। অজর-অমরত্বের অধিকার পেয়ে যায় দৃঢ় হতে চাওয়া দায়বিলাসীর কাঁধ। দূর থেকে যোগশাস্ত্রীয় দশম দ্বারের চিহ্ন দেখা যায়। সংগ্রাহক ছুটে আসে। ক্রমশ স্থিত হয়। চিনে নেয় বহুকাঙ্ক্ষিত তার চৌষট্টি ঘড়ার পসরা। স্থানু হয়ে রয়ে যায় ঘরের ভেতর। চেনা ছবি দেখে একা বাঁকা হাসি হেসে ওঠে বিরূপাপাদ। নির্দেশ করে ছোট কলস থেকে সরু নাল বেয়ে সুধামদ শোধনের। আমি চিত্তশোধনের পাঠ নিতে বসি বিরূপার পাশে একা একা..
চতুর্থ চর্যাগীতিকোষবৃত্তি
পুনশ্চ যোগিনীর সঙ্গে তীব্রতর আলিঙ্গন করি। আবদ্ধ হই কমলকুলিশ ঘেঁটে। ক্ষণসময় ব্যাপ্ত হয়ে ওঠে নিকষ মৃত্যুর মতো। ঠোঁটের উপর চুম্বন আঁকি। মোহাতুর হয়ে উঠতে এখনও অনেক পাঠ বাকি আমাদের। মণিমূলের গা বেয়ে উঠে আসে যাপনগুলো। বন্ধ ঘরে এঁটে রাখি একান্তযাপনের তালাচাবি। কেটে ফেলি চাঁদ-সূর্য মাপা বিধিদীপ্ত সময়। গুণ্ডরীপাদ সিদ্ধাসনে বসে আমায় শেখায় সুরতক্রিয়ার রীতিপদ্ধতি। শিখি। অভ্যেস করি। সিদ্ধতায় জেগে উঠি। সমাজবদ্ধ নর-নারীর মাঝে তুলে ধরি আমাদের ব্যতিক্রমী বিজয় পতাকা।
পঞ্চম চর্যাগীতিকোষবৃত্তি
পুনশ্চ আমার চেনাদিনের নদীটির বুকে যৌবনের বেগ আসে। তীর বেয়ে জমে ওঠে আমার আজানুলম্বিত কদর্যযাপনের ক্লেদ। কবি চাটিলপাদের হাত ধরে হাঁটি ধর্মসাঁকো উপর দ্বৈত পদগমনে। পারাপার করতে শিখি একা একা। নিচ দিয়ে বয়ে যায় আমার বেগবতী। ঘোর কেটে আসে, মোহতরু কাটি। অদ্বয়টাঙ্গী হাতে ধরতে শিখি নিপুণতায়। আঘাত করি। প্রতিটি পদক্ষেপ সাজিয়ে তুলেছি ভোরের গন্ধে। নির্দিষ্ট কথায় মধ্যমার্গে স্থিতধী হই। অগ্রসর হতে শিখি সাঁই চাটিলপাদের হাত পা শরীর ছুঁয়ে। নিকটবর্তী উন্মুক্ত বোধিচিত্ত হাতছানি দিয়ে ডাকে। সন্ধান করে ফিরি...
1 মন্তব্যসমূহ
খুব ভালো লাগলো।
উত্তরমুছুনসুচিন্তিত মতামত দিন