ইন্দ্রাণী সরকার

indrani













অপূর্ব সাথী 




শোনো হে অপূর্ব সাথী
তুমি ত' জানো যেদিন আমি নীরব হব
তোমার প্রাসাদ ভেঙে চুরমার হবে
তাই বলে রাখি একথা আর একবার
সেই যে তুমি কবে আমার হাতটা ধরেছিলে
আমার সে কথা মনে নেই
শুধু মনে আছে তুমি ভয় পেতে সামনে আসতে
আমার চলে যাবার পথে পথে ফুল রেখে যেতে
আমি যখন তোমার কানটা ধরে টেনে নিলাম
তখন কিছুটা আশস্ত্ব হলে তাই না ?
কিন্তু এখনো ঠিক তোমার মনটা
মেপে উঠতে পারলাম না
ঠিকমত কথা বলতে এখনো শিখলে না
শুধু দেখে গেলাম কি অপূর্ব মায়ায়
ধরে থাক এই হাত !
কবিতা লেখো কি লেখো না
মনের কথা বলতে পারো কি পারো না জানি না
তবে জেনেছি তুমি আমার সাথী
শেষসময় টুকু অবধি -----
চলে যাবার কথা বললে কেঁদে ফেল তাও জানি
বার বার সন্দেহ করায় কেঁদেছ তাও জানি
তুমি যে জানো তার কারণ তাও জানি
খালি বলে রাখি এ হাত ছেড়ো না কখনো
এতগুলো বছর সাথে থেকে ভুলে যেও না কখনো
যদি সব হাত ছেড়ে দেয় তবে
তোমার ওই অমূল্য হাত দুখানি যেন খুঁজে পাই ||



পাথেয়




পুজোর মরশুমে সকালে দেখতাম
মাকে স্নান সেরে ভেজা একরাশ চুল
পিঠে এলিয়ে ঠাকুর ঘরে আর সিঁড়িতে
চালের পিটুলিগোলা দিয়ে আল্পনা দিতে।
বাড়িতে লক্ষী, সরস্বতী আর সত্যনারায়ণ
এই তিনটি পুজো তিথি অনুযায়ী পালন হত ।
মায়ের হাত খুব সুন্দর ছিল, আমি অবাক হয়ে
দেখতাম কেমন সুন্দরভাবে মা ফুল, লতাপাতা,
ভোমরা, চাঁদ, তারা, মঙ্গলঘট, পাখী, পায়ের চিহ্ন
অবলীলাক্রমে মাটিতে, পুজোর পিঁড়িতে এঁকে যেতেন ।
আমি অনেক চেষ্টাতেও সেই নিপুন ভাবটিকে সঠিক
ফোটাতে পারতাম না, এখনো তা পেরে উঠি না ।
মা ত' মা-ই, তবু তাঁর থেকে অনেক গুণাবলী
অবশ্যই পেয়ে যে ধন্য আমি তা অনস্বীকার্য্য ।
রূপকথার গল্প মায়ের গলা জড়িয়ে শোনা,
ঠাকুমার কোল ঘেঁসে কত না আবদার,
দিদিমার পাশে শুয়ে হাজারো কাহিনী;
অতীত স্মৃতির জলছাপ পুণ্য সঞ্চিত
জীবনে চলার পথের পাথেয় হয় ।


"সেনাপতি বৃত্তান্ত"


সবুজ উপত্যকা ঢেকে যাচ্ছে তুষারপাতে
বিশ্বসুন্দরী শ্যাম্পেনের ককটেল নিয়ে
ফায়ারপ্লেসের সামনে বসে হাত গণনা করেন
পাশে বসে মেয়েগুলি ডেটিং গেমে ছক্কা হাঁকছে
দেখি না দেখি না করেও চোখ দুটো ক্রমশ:
ট্যারা হতে থাকে পাড়াতুতো দাদার অনুরোধে
বিরোধ বর্তায় না কাবাডি কাবাডি খেলায়
চশমার কাঁচ পুরু থেকে আরও পুরু হয়
লেখাগুলি নামে গভীর থেকে গভীরতর খাদে
পা পিছলিয়ে তালকানা বসন্তসেনার টুইস্ট
গলনাংক কমে কমে হিমাংকে নেমে যায়
কঠিনতম দেয়ালে ছায়ানৃত্যের কারসাজি
বাদামী বেশে বাদামী সেনা বাদাম দিয়ে
যে হালুয়া বানিয়েছিল ওর বউ ছিল না যখন
ছেলেটা এসে সাপটে সব সাবাড় করে দেয়
হল্লা রাজার বাহিনী এসে হালুয়া নামায়
বাদামী গরুটা মাচায় বসে হাততালি দেয়
"অচিন পাখি, তোমায় আমার লেজে রাখি ।"



ইন্দ্রাণী সরকার ইন্দ্রাণী সরকার Reviewed by Pd on অক্টোবর ০৬, ২০১৫ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

সুচিন্তিত মতামত দিন

banner image
Blogger দ্বারা পরিচালিত.