বর্ষার জলে ভেসে গেছে পথ ঘাট । অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছে গেল তিনদিন ধরে । অসময়ে প্রায় ছোট খাটো বন্যায়-ই হয়ে গেল । এমন বাদল দিনে মন ভালো থাকেনা । আকাশের ঘন কালো মেঘ ছায়া ফেলে মনে । ঘরের জানালা দিয়ে একবার উঁকি দেয় মামুন । মনটা কেমন ভারি ভারি লাগছে । কিন্তু কেন ? তিনদিন হলো কলেজে যেতে পারছে না; ভেবে ছিল এই কারণে মনটা হাহাকার করছে । কিন্তু না, তৃতীয় দিনে এসে মামুন বুঝতে পারে একটি অতি পরিচিত মুখের দেখা পাচ্ছেনা সে । কলেজে হাঁটু জল উঠে পড়েছে তাই পরবর্তী নোটিশ না দেয়া পর্যন্ত কলেজ খুলছে না । কেমন করে মামুন দেখবে এই মুখ; যে মুখের দিকে তাকালে ওর মনে এক প্রশান্তি খেলে যায়।
নুরজাহান দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী । এই বয়সেই সৌন্দর্য তাঁর শরীরে এমন ভাবে বাসা বেঁধেছে যে, কলেজে তাঁর সমবয়সী বন্ধুরা রীতিমতো কেঁপে ওঠে দেখে । সকালের প্রথম সূর্যোদয়ের স্নিগ্ধ আলোর মতো ও ফুটতে থাকে; দিন যত বাড়ে ওর সৌন্দর্যও যেন আলো ছড়ায় চারপাশে । দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী হলেও ওকে দেখে যে কেউ ভাবতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে । শারীরিক গঠনটা অন্য পাঁচটি মেয়ে থেকে একটু ভিন্ন । গ্রামের চেয়ারম্যান কাশেম খন্দকারের একমাত্র মেয়ে নুরজাহান । বিয়ের প্রস্তাব আসে এই বয়সেই, কিন্তু ওর বাবা ফিরিয়ে দেয় সেই সব প্রস্তাব । নুরজাহান মানবিকের একজন ভালো ছাত্রী হিসেবে কলেজে বেশ পরিচিত । ওর ইচ্ছে অনেক পড়া লেখা করবে । জীবনে অনেক বড় হবে । স্বপ্ন দেখে সে ।
মামুন আর ঘরে বসে থাকতে পারেনা । মন ছুটে যায় । মনে মনে ভাবে নুরজাহানকে একবার দেখতে হবে । আজ বিকেলে খেলতে যায়নি মামুন । এই বৃষ্টিতে ফুটবল খেলে এমনিতে ও খুব আনন্দ পায় কিন্তু আজ আর উৎসাহ পাচ্ছে না । ঘর থেকে বের হবে এমন সময় মামুন একবার ভাবে-“ আমার এমন হচ্ছে কেন ? নুরজাহানকে তো কলেজে প্রতিদিন দেখি । কই আগেতো এমন হয়নি ? কলেজ খুললে আবারো দেখতে পাবো” । কিন্তু আমার এমন হচ্ছে কেন ? দ্বিধায় পড়ে যায় মামুন । মা পাশের ঘর থেকে ডাক দেয়-“ মামুন, বাবা তোর কলেজ কবে খুলবে ?” মামুন উত্তর দেয়- “এটা জানতেই যাচ্ছি নুরজাহানের কাছে মা” । বলেই জিভ কাটে মামুন । মুখ দিয়ে বেরিয়ে যায় কথাটি নিজের অজান্তেই । বেরিয়ে পড়ে সে ।
বাইরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছে । হাঁটতে হাঁটতে নুরজাহানদের বাড়ি পৌঁছে যায় মামুন। বিদ্যুৎ নেই । বিকেলের আলো আস্তে আস্তে গ্রাস করছে সন্ধ্যের অন্ধকার । এই তিনদিন সূর্য উঠেছে কি উঠেনি কেউ ঠিক বুঝেনি। ঘড়ির কাঁটা ধরে চলছে জীবনযাপন । পূব দিকের যে মাটির রাস্তাটি পুকুর পাড় ঘেঁষে সোজা চলে গেছে নুরজাহানদের বাড়ির গেট পর্যন্ত তার আগেই সুপারি গাছের ছোট বাগান । সেখানে গিয়ে থমকে যায় মামুন । দেখে মৃদু মন্দ বাতাসের সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে ভিজছে নুরজাহান । অন্ধকার হয়ে আসছে চারপাশ । দূর থেকে ঠিক চেনা যাচ্ছে মামুনকে নুরজাহান হাত উঁচু করে ইশারা করে মামুনের দিকে । আলতো সুরে ডাক দেয় নুরজাহান-“ কে মামুন না ? কাছে এসো” । কেঁপে উঠে মামুন । নিমিষেই শরীরে রক্ত চলাচল যেন বন্ধ হয়ে যায় । মামুন কাছে যেতেই নুরজাহান সেকেন্ডের মধ্যেই মামুনের ডান হাতটি চেপে ধরে সুপারি বাগানের একটু গহীনে চলে যায় । কাঁপতে থাকে মামুন আর ভাবতে থাকে- ‘’নুরজাহান ও কি তবে আমাকে......?’’
মামুনের মাথা কাজ করছে না । বলে ওঠে- “চল এখান থেকে বেরিয়ে যাই” । ‘কেন ? ভয় পাচ্ছ ? যদি না যাই ?’ বলেই নুরজাহান মামুনের বাম হাতটি টেনে কোমরের পেছনে চেপে ধরে ।
মামুন বুঝে উঠতে পারেনা কি করা উচিৎ । চারপাশ পুরোপুরি অন্ধকার । বৃষ্টি মনে হয় কিছুটা বেড়েছে । ওরা এমন এক জায়গায়, যদি কেউ বিশেষ কাজে এদিকটায় না আসে তবে কেউ দেখবেনা ওদের ।
মামুন কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলে- “তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছিল তাই ছুটে এলাম” । ‘কেন ? হঠাৎ আমাকে দেখতে ইচ্ছে হলো কেন ? কলেজেতো রোজ রোজই দেখ। কই কখনোতো বুঝতে পারিনা তোমার ব্যাকুলতা’ । কথা গুলো বলেই নুরজাহান আরেকটু চেপে ধরে মামুনের হাত । বলে- ‘জানো মামুন আমিও তোমাকে দেখবার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম । কিন্তু, কেমন করে কি ভাবে দেখবো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না । আমিতো তোমাকে মনটা দিয়েছি অনেক আগেই । অনেক করে বুঝাতে চেয়েছি তোমাকে কিন্তু তুমি কিছুতেই বোঝনি । এত সরল হলে হয় বুঝি ?’ মামুন মনে মনে বুঝতে না পারার কারণে নিজের উপর বিরক্ত হয় । কিন্তু নুরজাহান কে বুঝতে দেয় না । বলে- “আমি ভয়ে তোমাকে কিছু বলতে সাহস পাইনি । আমিও তোমাকে......”। ‘ঠিক আছে, ঠিক আছে আর বলতে হবে না’- বলেই কথা থামিয়ে দেয় নুরজাহান । মামুন এবার বুকে সাহস নিয়ে নুরজাহানের পিঠে চাপ দিয়ে বুকের সাথে বুক মেলায় । অন্ধকারে কিছুই দেখা যায় না তবুও মনে হয় ওরা একজন আরেকজনকে দেখছে । উষ্ণ আলিঙ্গনে ওরা খুঁজে পায় মহাজগতের অনাবিল আনন্দ ।
মেঘ না চায়তেই বৃষ্টি পেয়ে মামুনের আনন্দের সীমা থাকেনা । খোঁজে পায় নিজের ভেতর গুপ্ত ঝড়ের যে রহস্য তার কারণ । পৃথিবীর সব চায়তে সুখি মানুষ মনে হয় নিজেকে মামুনের। সুখে বুক ভরে উঠে । মনে মনে বলে ওঠে- “আমার নূরজাহান, আমার নূরজাহান” । ‘এই ছাড়ো, লাগছে কিন্তু’- লজ্জা ভরা কণ্ঠে বলে নুরজাহান।
অন্ধকারেও নুরজাহানের ধব ধবে ফর্সা শরীরটি যেন চাঁদের আলো ছড়িয়ে দিয়ে মাতাল করে দিলো মামুনের সমস্ত দেহ । ঠোঁট দিয়ে বুকের উপর বাঁশি বাজায় রাখালিয়া সুরে । ওরা হারিয়ে যায় গহীন থেকে গহীনে ।
এইচ,এস,সি পরীক্ষায় খুব ভালো ফলাফল করে মামুন চলে আসে শহরে । বিশ্ববিদ্যালয়ে বাঙলা সাহিত্য নিয়ে পড়তে থাকে । খুব মনে পড়ে নুরজাহানের কথা । হলে থাকে । সারাদিন বই আর নুরজাহান মাথায় ঘুরে । প্রথম বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে গ্রামে যায় মামুন । এক বছর অনেক সময় এর মাঝে তিনবার নুরজাহানের সাথে যোগাযোগ হয়েছে চিঠির মাধ্যমে । যেদিন চিঠি আসতো মামুন সেদিন চিঠির গন্ধ শুঁকতো অনেকক্ষণ । অনেক দিন দেখা নেই । গ্রামে আসবার আগে একটি চিঠি পাঠিয়েছিল মামুন কিন্তু কোন উত্তর পায়নি । মামুন ভেবেছে অন্য কিছু । হয়তো অনেক দিন দেখা নেই তাই রাগ করে আছে নুরজাহান ।
বাস থেকে নেমে রিক্সা ডাকে মামুন । উঠতে যাবে ঠিক তখনি রাজীব ডাক দেয় । বলে- ‘মামুন কতদিন পরে এলি। এত দেরি করলি কেন ?’ বুঝতে পারেনা মামুন রাজীব ঠিক কি বলতে চায়ছে । মুহূর্তে ভাবে- বাবা বা মায়ের কিছু হলো নাতো ? কেউ কি খুব অসুস্থ ? ‘’রাজীব কি হয়েছে খুলে বল’’। রাজীব বলে –‘কেন তুই জানিস না কিছু ?’ না কি হয়েছে বল। ‘নুরজাহানকে কে বা কারা রাতের অন্ধকারে ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে শেষে এসিড ছুঁড়ে......।‘ কথাটি শেষ করতে পারেনি রাজীব । মামুন পাগলের মত ছুটে চলে বাড়ির দিকে । মায়ের কাছে সব শুনে ভেঙে পড়ে মামুন। মাকে বলেছিল নুরজাহানকে নিয়ে স্বপ্নের কথা গুলো । কষ্ট লাগে খুব ।চোখের সামনে ভেসে উঠে নুরজাহানের মুখটি ।
ফিরতি বাসে চেপে মামুন চলে আসে শহরে । বাস থেকে নেমে সোজা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে চলে যায় । হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাঁদছে নুরজাহানের মা । বাবা উদ্বেগ উৎকণ্ঠা নিয়ে পায়চারি করছে । একদল ডাক্তার বেরিয়ে আসলো ভেতর থেকে এই মাত্র । ছুটে যায় মামুন । বলে – “ডাক্তার সাহেব তিন নম্বর বেডের যে রোগী তাঁর এখন কি অবস্থা ?” ‘দেখুন এখনই কিছু বলা যাচ্ছেনা । চব্বিশ ঘণ্টা পার না হওয়া পর্যন্ত । অপেক্ষা করুন’। ডাক্তার কথা গুলো বলেই দ্রুত চলে যায় ।
বাহাত্তর ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরে নুরজাহানের । ডাক্তার বলেছে মুখের পঞ্চাশ ভাগ পুড়ে গেছে । শরীরের অন্যান্য কিছু জায়গা দশ ভাগের মতো । কথা গুলো শুনে হাউমাউ করে কেঁদে উঠে নুরজাহানের মা । বাবা তাঁর সমস্ত মানুসিক শক্তি হারিয়ে ফেলে । মামুন ডাক্তারের অনুমতি নিয়ে ভেতরে যায় একবার । মশারীর ভেতর শুয়ে আছে কাঁত হয়ে নুরজাহান । এপাশ থেকে ঠিক চেনা যায় না । চোখ বেয়ে জল চলে আসে মামুনের। হাতের উপর হাত রাখে । নুরজাহান সাড়া দেয় । মামুনকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে । বলে- ‘মামুন তুমি চলে যাও । আর কোনদিন আমার কাছে এসো না । আমি আর বাঁচতে চায়না’। কি বলে সান্ত্বনা দেবে মামুন ? বুঝে উঠতে পারেনা । বুঝে উঠবার কথা নয় । হাহাকার করে ওঠে মামুনের মনটি ।
তিন বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে দিন রাতের চেষ্টায় নুরজাহান ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে । যে নুরজাহানের জন্য বয়স হবার আগেই বিয়ের সম্বন্ধ আসতো প্রচুর; সেই নুরজাহানের জীবন বদলে গেছে অনাকাঙ্খিত ঘটনাটির পর । ডাক সাইটে সুন্দরী নুরজাহান এখন অসুন্দরের প্রতিরূপ । জীবনের এমন বিভীষিকাময় মুহূর্তটির জন্য কে দায়ী ? কি দায়ী ? আজো সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি নুজাহানের । বিয়ে আসে বিয়ে ভেঙে যায় । সমাজ পারেনি তাঁকে স্বাভাবিক ভাবে গ্রহণ করতে অথচ এই নুরজাহান সবার কাছে অনেক আপন ছিল, গ্রহণযোগ্য ছিল একটি সময় ! সমাজ পারেনি নুরজাহানের পাশে দাঁড়াতে । নিন্দুকদের নিন্দা, বাবার সাথে কিছু মানুষের পূর্বশত্রুতার জের নুরজাহান বয়ে নিয়ে যায় বছরের পর বছর ! ওর ভাল লাগেনা কিছুই এমন কি এখন মামুনকেও । মামুনওতো এই জটিল পুরুষতান্ত্রিক সমাজেরই একজন । হতাশা আর বিষণ্ণতার আগুনে পুড়ে পুড়ে ছাই হয় নুরজাহান । মামুনও এখন অপরিচিত একজন হয়ে যায় তার কাছে !
স্নাতক শেষ করে একটা ভালো চাকরি পেয়ে যায় মামুন । চাকরির ফাঁকে ফাঁকে গ্রামে যায় । নুরজাহানের সাথে দেখা করতে ওদের বাড়ি যায় । নুরজাহান প্রথম প্রথম কিছু বলতনা । কিন্তু একসময় মামুনের সাথে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় । শেষবার যখন দেখা হয় দু’জনের, নুরজাহান মামুনকে বলেছিল- “যদি বেঁচে থাকি- কোন একদিন কোন পথের মোড়ে আমাদের দেখা হয়ে যাবে মামুন । অচেনা পথের অচেনা মোড়ে আমরা পরিচিত দুটি হৃদয়ে পরস্পরকে আলিঙ্গন করব । আপাতত তুমি সবকিছু ভুলে যাও । আমি কোনদিন তোমার ছিলাম তা ধীরে ধীরে ভুলে যাব আমিও’ বলেই- কান্নায় ভেঙে পড়ে নুরজাহান । মামুনের ভেতরটা ফাঁকা ফাঁকা লাগে । কিছুতেই বোঝাতে পারেনা যে এই জীবন নুরজাহান ছাড়া অসম্পূর্ণ । চাইলেই কি আর ভোলা যায় ? নারীত্বের চরম সহনশীলতার কাছে রীতিমতো ধরাশায়ী হয়ে ফিরে আসে মামুন ।
দিন যায়, বছর যায় মামুন শহরের জীবনে মিশে যায় । বাস্তবতার কঠিন পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে জীবনের অনেক কিছুই বিস্মৃত হতে থাকে । কিন্তু কোনদিন দু’জনের সেই বৃষ্টি ভেজার মুহূর্তটি এবং নুরজাহানের বলা শেষ কথা গুলো ভুলতে পারেনা সে। অনেক সময় গেছে অনেক পথ তৈরি হয়েছে সময়ের বিবর্তনে। কিন্তু আর কোনদিন কোন পথের মোড়ে মামুনের সাথে নুরজাহানের দেখা হয়নি । মামুনও আর কোনদিন ঐ গ্রামে যায়নি ।
বয়স চল্লিশ পেরিয়ে যায় । মামুন লিখে যায় । লেখার পেছনে অক্লান্ত শ্রম দেয় মামুন । লেখা হয়ে ওঠে যন্ত্রণা লাঘবের মাধ্যম ! মামুনের হাত দিয়ে যা সৃষ্টি হয়েছে তার সিংহভাগ নুরজাহানের অবদান এই সত্য স্বীকারে কোন দ্বিধা নেই ওর । নিজের একটি কাব্য গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসবে কিছু বলতে গিয়ে আবেগ ঘিরে ধরে মামুনকে । চোখ জলে ভারাক্রান্ত হয়ে ওঠে । কাব্যগ্রন্থটি উৎসর্গ করা হয়েছিল নুরজাহানকে-লিখা ছিল “- আত্মাভিমানে যে বাজিয়ে ছিল অসময়ের বাঁশি-তাঁকে” ।
অদৃশ্য নুরজাহান সারাজীবন লেখার প্রেরণা হয়ে কাজ করে মামুনের । যদিও বেশির ভাগ দুঃখের তবুও ।
![]() |
| ~ কবি পরিচিতি ~ |
ইফতেখারুল হক
Reviewed by Pd
on
অক্টোবর ২৩, ২০১৪
Rating:
Reviewed by Pd
on
অক্টোবর ২৩, ২০১৪
Rating:


কোন মন্তব্য নেই:
সুচিন্তিত মতামত দিন