স্বপন পাল / গণতন্ত্রই গণতন্ত্রের শত্রু

স্বপন পাল / গণতন্ত্রই গণতন্ত্রের শত্রু sobdermichil

লোকতন্ত্র, গণতন্ত্র অতি স্বাদু, সুজাতার হাতের পায়েসের মতো। সুজাতার পায়েস ? পাঠক ঠাট্টা বলে ভাবতে পারেন এবং এমন দু'চার উপমা উপস্থাপনের পর ঠাট্টাটা গাঁট্টা হয়ে ফিরে আসতে পারে। নানা যন্ত্রণায় তিত-বিরক্ত হে পাঠক একটু ভাবুন তো, দীর্ঘদিনের তপস্যার পর তপঃক্লান্ত অতিক্লিষ্ট ও রুগ্ন শরীর যখন সামনেই একবাটি পরমান্ন বা পায়েস দেখে, এগিয়ে দিয়েছে কেউ খাবার জন্য, তখন তার মনে ও প্রাণে কি অনুভূতি হয় ? স্বেচ্ছাচারী রাজতন্ত্র বা একনায়কতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে এক অত্যাচারিত অতিষ্ট জাতি যখন সত্যিকার স্বাধীনতা পায়, পেয়ে যায় তাদের নিজেদের পছন্দমতো একটি সরকার গড়ার অধিকার যা ধীরে ধীরে গণ প্রজাতন্ত্রের চেহারা নেবে তখন ওই প্রাপ্ত স্বাধীনতাটুকু সেই জাতির কাছে সুজাতার আনা পায়েসের সঙ্গে তুলনীয় হতে পারে না কি ?

গণতন্ত্র কী, কেমন তার চেহারা সে কথা জাতি জানে না। খায় না মাথায় দেয় সে বিষয়ে তার সম্যক কোন ধারণা নেই, সেই সময়ে পথ দেখাতে এগিয়ে আসেন কিছু সুচিন্তিত, বোধবুদ্ধি সম্পন্ন বিচক্ষণ ব্যক্তি। আমরা নেতা বলি তাঁদের। এই নেতৃস্থানীয় মানুষেরা নিঃস্বার্থ ভাবে রাতদিন এক করে সংবিধান রচনা করেন, আইন শৃংখলার মূলনীতি তৈরী করেন ও জনগণকে সেই বিষয়ে শিক্ষিত করে তোলার দায়িত্ব নেন। খুব ধীর প্রক্রিয়ায় জনমানসে লোকতন্ত্রের ধারণা তৈরি হয়। মানুষ বুঝতে পারে, তারা তাদের পছন্দ মতো সাংসদ নির্বাচন করার অধিকার অর্জন করেছে। সাংসদেরা সংসদ নামক একটি সভায় মানুষের অভাব, অভিযোগ, প্রয়োজনের কথা বলবে, আলোচনা করবে ও যা ন্যায্য বলে বিবেচিত হবে তা সরকারি যোজনার অন্তর্গত করা হবে ও পরবর্তী নির্বাচন অর্থাৎ একটি নির্বাচিত সরকারের কার্যকাল শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত সেগুলি রূপায়িত করা হবে জনগণ ও দেশের স্বার্থে।

এখন কথা এটাই যে সব তন্ত্রের শত্রুতা করার বা বিরুদ্ধাচরণ করার প্রক্রিয়া সময়ের সাথে সাথে চলতে থাকে। গণতন্ত্র এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় আলগাভাব অথবা দেখেও না দেখা করলে আবার একনায়কতন্ত্র উঠে আসা বা সৈন্যবাহিনী ব্যবহার করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেওয়া অসম্ভব নয়। ছোট ছোট দুর্গম স্থানে রাজতন্ত্র ফিরে আসতে পারে। তবে আধুনিক যুগে বিভিন্ন যন্ত্র, অস্ত্র ও দ্রুত যাতায়াত এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাদির প্রভুত উন্নতি হওয়ায় এগুলো আজকের দিনে প্রায় অবাস্তব। তাহলে কি গণতন্ত্রের কোন শত্রু নেই ? আসলে গণতন্ত্রের শত্রু গণতন্ত্র নিজেই। গণতন্ত্র দিয়েছে ব্যক্তিস্বাধীনতা, দিয়েছে মতানুসারে ছোটবড় দল গঠনের স্বাধীনতা। সংবিধানকে মান্যতা দিয়ে যদি কেউ মনে করেন বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তগুলি ততটা জনহিতকর হচ্ছে না, তবে ওই মতানুসারীরা সংবিধান মেনে একটা রাজনৈতিক দল গঠন করতেই পারে। এমনকি সেই দল বিশেষ ধর্মকেন্দ্রিক হলেও কেউ তাদের মতাদর্শকে নাকচ করতে পারে না। যদি না তা দেশের সংবিধানের বিরুদ্ধে চলে যায়।

এভাবেই একটা স্বাধীন দেশে ছোট বড় নানা আকচা-আকচির ভিতর দিয়ে একটার পর একটা রাজনৈতিক মতাদর্শ ও দল তৈরি হওয়াটা গণতন্ত্রের দেশে স্বাধীনতা বলে আখ্যা পেয়ে থাকে। ফলশ্রুতি হিসেবে কখনো কখনো ভিন্ন রাজ্যের দাবীও ওঠে এখানে ওখানে। 

আসল হিসেব কিন্তু ক্ষমতা পাওয়া ও তার অপব্যবহার করা। অপব্যবহার কথাটা আবার গণতন্ত্রের সাথে যায় না। কিন্তু বাস্তবে জনগণ কি দেখতে পায় ? কথায় আছে, যে যায় লঙ্কায় সেই হয় রাবণ। রাবণ সত্যিই কতটা স্বেচ্ছাচারী ছিলেন সেটা গবেষণার বিষয়। কিন্তু গণতন্ত্রের দেশে রাবণের অভাব নেই একথা এদেশের শিশুটিও জানে।

 

দেশের সংবিধান যখন রচনা করা হয়েছিল তখনকার সময়, মানুষের বিচারবোধ, সামাজিক প্রয়োজন আজ সাতটি দশক পার হয়ে এসে অনেকটাই বদলে গেছে। তাই সময়ের দাবী মেনে সংবিধানের অংশ বিশেষ বদলাতে হয়। বদলটা দেশের ও দশের ভালোর জন্য। সংবিধানে এই সংযোজন ও বিয়োজন কারা করার অধিকারী ? নাঃ, আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞান মানে পলিটিক্যাল সায়ান্সের ক্লাশ করছি না। সবাই জানেন, ওই কাজের জন্য রয়েছে লোকসভা বা পার্লামেন্টের সদস্যরা এবং শেষ অব্দি আছেন রাষ্ট্রপতি। যাঁর সম্মতি অন্তিমে লাগবেই। লোকসভায় কোন বিল পাশ করাতে গেলে সদস্যদের মেজরিটি লাগে। অর্থাৎ অধিক সংখ্যক সদস্যের বা দুই তৃতীয়াংশের সমর্থন ছাড়া বিল পাশ করাতে পারা যায় না। ফলত সংবিধান সংশোধন সম্পূর্ণ করতে পুরোপুরি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনেই চলা হয়।

একটা দেশ মানে তো প্রাকৃতিক একটি ভূখণ্ড নয়, দেশ তৈরি হয় দেশবাসী দিয়ে। অর্থাৎ মানুষ বা জনগণ। জনগণ তাদের মধ্যে থেকে নেতা নির্বাচন করে রাজ্যের বিধান সভায় যেমন পাঠায় তেমনই কেন্দ্রের লোকসভায়। একটা দেশ বিশেষ করে ভারতবর্ষের মতো বৃহৎ এক গণতান্ত্রিক দেশে অনেক রাজ্য, অনেক ভাষাভাষির জাতি, অনেক ধর্ম ও অনেক মতাদর্শ। এমনিতে একটা দেশ চালাতে গেলে সরকারকে মাথা ঘামাতে হয় বিভিন্ন বিষয়ে। তাতে জনগণের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা-বানিজ্য, আরক্ষা, প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক নীতি এসব নিয়ে সঠিক ব্যবস্থা, নিয়ম ও আইন থাকে। সেই নিয়ম ও ব্যবস্থা যে বা যারা লঙ্ঘন করবে তাদের আইনগত ভাবে শাস্তির বিধান আছে। দেশের আদালত তাদের বিচার করবে।

এসব কথা সবাই জানেন। খুব সুন্দর সুন্দর বিধি-ব্যবস্থা, যা দেখে শুনে মনে হয় স্বর্গ অন্য কোথাও নয়, তা এইখানে, আমাদের এই সুন্দর দেশে। অথচ বাস্তবে তা দেখি কি ? আসলে মানুষ যখন দেখে তার চারপাশে খুব শক্ত শাসনের বেড়া, সে সেই বেড়া ভাঙ্গার চেষ্টা করে। আর যখন দেখে চারপাশে অজস্র ফুল ফুটে আছে কিন্তু পাহারাদার নেই, নিষেধাজ্ঞা টাঙানো নেই, সে তখন ইচ্ছে মতো ফুল ছেঁড়ে, তা সেই ফুল তার কাজে লাগুক বা না লাগুক। আবার নিষেধ থাকলেও লুকিয়ে ফুল তোলায় এক ধরণের বীরত্ব বা গোপন আনন্দ পেয়ে থাকে অনেকে। আসলে ফুলের প্রসঙ্গ এনে বিষয়কে লঘু করার চেষ্টা করছি মনে হতে পারে। তা নয়, ফুল ছেঁড়া বালখিল্যপনা হতে পারে তবে সাধারণ মানুষ বেশিরভাগ সেরকম নয়। কিন্তু যে মানুষ গণ নির্বাচনের মাধ্যমে নেতৃত্বে এসেছেন তাঁর হাত দিয়ে বাৎসরিক একটা মস্ত বড় অঙ্কের টাকা তাঁর এলাকা উন্নয়নের জন্য ব্যয় হয়। কিছু নেতার মনে হতেই পারে এতো এতো টাকা উন্নয়ন খাতে আমার হাত দিয়ে খরচ হচ্ছে, আমি কি পেলাম ? না মশাই, এতো সহজ নয়, যে উন্নয়নের টাকার একটা অংশ নেতা পকেটস্থ করলেন। বাৎসরিক অডিট আছে সে সব খরচের হিসেব নেবার জন্য। তাহলে ? নানান সরকারি কাজে বা প্রকল্প রূপায়নে নানা কন্ট্রাক্টর লাগবে। এল ওয়ান দেখে কন্ট্রাক্ট পেলেন যিনি তিনি জানেন খেলাটা। কি ভাবে কোন পথে নিম্নমানের কাজ করে এম এল এ, এম পি বা মন্ত্রীকে ঘুর পথে ঘুষ দেওয়া যায়। সরকারি কর্মচারিরাও তাতে সামিল হয়ে যান। ফলত, প্রকল্পগুলি পুষ্টিহীনতায় ধুঁকতে থাকে। যত দিন যাচ্ছে এই চুরি তত বেশি রকম ঘটে চলেছে। চুরি বললাম কেন ? কারণ তা সরকারের টাকা। সরকার তো জনগণের নির্বাচিত সদস্যরা আর টাকা এসেছে ওই জনগণের দেওয়া নানা প্রকার ট্যাক্স থেকে। কিসে ট্যাক্স নেই ? যে কোন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনলেই তার মূল্যের একটা অংশ ট্যাক্স। যে কোন পরিষেবা নিলে যে অর্থমূল্য দিচ্ছে মানুষ তার একটা অংশ যাচ্ছে ট্যাক্সে। অর্থটা দাঁড়ালো এই রকম যে, ট্যাক্স না যোগ হলে ওই নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তুগুলি এবং পরিষেবাগুলি আরো কম মূল্যে পেতো জনগণ। তাহলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একটু ঘুরপথে স্বল্প সংখ্যক মানুষ নিজের সম্পদ বাড়িয়ে নিতে পারে শুধু রাজনীতি করার সুবাদে। কেউ বলতেই পারেন, এরকম তো রাজতন্ত্রে বা একনায়কতন্ত্রেও হয়। তাহলে গণতন্ত্রের দোষ কোথায় ? গণতন্ত্রের দোষ ভণ্ডামীতে। রাজতন্ত্র বা একনায়কতন্ত্রে জবরদস্তি আছে, ভণ্ডামী নেই বা কম। আসলে গণতন্ত্রের একটা নারীসুলভ ইজ্জত আছে। যা সবাই দেখতে চায় কতটা সুরক্ষিত। কিন্তু ঘোমটা টেনে খ্যামটা নাচ এটাই গণতন্ত্রের বড় শত্রু।

সাধারণ মানুষকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যে মানুষ তার হয়ে কথা বলবে, কাজ করবে তাকে মুখপাত্র বা নেতা হিসেবে নির্বাচিত করার। কিন্তু আদপে গণতন্ত্র জিনিসটা কী, খায় না মাথায় মাখে এ সম্বন্ধে অতি সাধারণ মানুষকে শিক্ষিত করে তোলার ব্যাপারে কোন রাজনৈতিক দলের মাথাব্যথা নেই। ভোটের সময় এগিয়ে এলে নির্বাচনে টিকিট পাওয়া নেতাদের প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিতে দেখা যায় ও ভোটে জিতলে সে সব প্রতিশ্রুতি ধামাচাপা পড়ে যায়। কেউ প্রশ্ন করতে সাহস করে না যে ওই সব দেওয়া প্রতিশ্রুতির কি হলো। বছর বছর এইসব ধ্যাস্টামী দেখতে দেখতে বঞ্চিত অথচ আপাত চালাক কিছু জনগণের মনে হতেই পারে যা পাওয়া যায় গুছিয়ে নে, পরের কথা পরে ভাবা যাবে। এভাবেই লাটে ওঠে আত্মসম্মান জ্ঞান, দায়িত্ববোধ ও নীতিবোধ। একটা দেশের জনগণের নৈতিক মেরুদণ্ড এভাবেই গুঁড়িয়ে দেওয়া যায়। মাসিক ভাতার মতো অল্প কিছু টাকায় বিকিয়ে যায় জনগণের বৃহৎ অংশ। যে টাকা এসেছে নিত্য প্রয়োজনের জিনিসের দাম বাড়িয়ে, পরিষেবা খরচ বাড়িয়ে। অর্থাৎ যিনি হাত পেতে ভিক্ষে নেওয়া শুরু করেছেন তিনিও ওই বর্ধিত মূল্য দিতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ এমনটা হওয়ার কথা তো নয়। ওই ট্যাক্সের টাকা তো সার্বিক উন্নয়ন, নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যর মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজে খরচ করার কথা।

গণতন্ত্র তাহলে কি তৈরি করলো ? একদল ক্ষমতালোভী মিথ্যাচারী জনগণের মুখপাত্র বা জনপ্রতিনিধি ও সুবৃহৎ ভিক্ষালোভী, ভবিষ্যৎহীন জনসাধারণ। এদের মাঝে কোটিতে গুটিক ছায়াময় মানুষ যারা বিবেকের দংশনে কপাল চাপড়ায়, হায় এ কি হলো বলে। গণতন্ত্র এর থেকে উত্তম কিছু কেন দিতে পারলো না ? এর উত্তর হয়তো ভবিষ্যতের গর্ভে। তবে সাহসী ও সৎ মানুষের আজ বড় প্রয়োজন।

একটু ভেবে দেখলে হয়, কি করলে এই গণতন্ত্রে থেকেই গণতন্ত্রের প্রকৃত উন্নতি করা যায় ও যথার্থ পায়েসটুকু বোধিপ্রাপ্ত জনগণকে খাওয়ানো যায়। গণতন্ত্রে থেকে যদি গণতন্ত্রের ক্ষতিসাধন করা যায় তবে তার উন্নতি সাধনও করা যাবে। প্রকৃত ও সচেষ্ট চিন্তকের প্রয়োজন। আমাদের প্রকৃত চিন্তকের অভাব তো নেই। আমাদের সংবিধান নির্বাচনে আপামর জনসাধারণের সম অধিকার দিয়ে রেখেছে। এতে যদি বলি মুড়ি মিছরি এক দর হয়ে গেছে, কেউ কেস দেবেন না প্লিজ। একটু ভাবতেই হয়। একজন অশিক্ষিত মানুষ জনগণ হতে পারেন কিন্তু তাঁর বিচার বুদ্ধি শিক্ষিত চিন্তাশীল মানুষের সমান হতে পারে না। যেমন তাঁর আত্মাভিমানেও বড়সর প্রভেদ দেখা যায়। হ্যাঁ, অনেকে বলতে পারেন, দেখলাম তো, এই বঙ্গে শিক্ষিতরা কি ভাবে বিকিয়ে গেলেন। কিন্তু সমীক্ষা করলে দেখা যাবে এঁদের অনেকে এখন মরমে মরে আছেন বিবেকের কাছে। সে যাই হোক, যদি এক অশিক্ষিত জনের ভোটের একক এক হয়, তবে মাধ্যমিক পাশ হলে দুই, উচ্চ মাধ্যমিক তিন, স্নাতক চার ইত্যাদি হলে এক তো শিক্ষার প্রতি সম্মান দেখানো, শিক্ষিত হওয়ার জন্য উৎসাহ দেবার বার্তা এবং শিক্ষিতের বিচার বুদ্ধির ওপর আস্থাবান হওয়া এগুলি অনায়াসে সংবিধান স্তরে পাওয়া যায়। অনেকে বলবেন, তখন শিক্ষিতদের কেনাবেচা চলবে এবং তা বেশি দামে। হ্যাঁ, তা হতেই পারে। তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার সংস্থান সংবিধানেই থাকবে। মূলত প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত, জনগণকে নেতৃত্ব দিতে আসবেন যাঁরা এবং তাদের মুখপাত্র হয়ে বিধানসভা ও লোকসভায় সাংসদ হবেন যাঁরা তাঁদের কমপক্ষে স্নাতক অর্থাৎ গ্র‍্যাজুয়েট হতেই হবে। তিনি মন্ত্রী হয়ে গেলে তাঁর অধীনে উচ্চশিক্ষিত সেক্রেটারি কাজ করতে স্বচ্ছন্দ হবেন কি করে ? ওই সাংসদ পদপ্রার্থীর কোন কলঙ্কজনক সামাজিক কর্মের দায় যেন না থাকে, এবং রাজনীতিকে কখনোই পেশা করা যাবে না। কথা উঠতে পারে, জাল শিক্ষার সার্টিফিকেটের খেলা বাড়বে। তাহলে ধরে নিতে হয় আমাদের বিশ্ব-প্রশংসিত পুলিশ ও ইন্টেলিজেন্স বিভাগ হাতে চুড়ি পরে ঘোমটা টেনে বসে আছে। বিপরীত কথা হামেশাই উঠবে, কিন্তু রাজনীতি করছেন অথচ প্রকৃত মানবের হৃদয় ও মেরুদণ্ড সম্বলিত মানুষ এগিয়ে তো আসুন সদিচ্ছা নিয়ে। না হলে নিরঙ্কুশ সমর্থনের অন্ধ প্রচেষ্টায় বিরোধী পক্ষের ছায়াও যাতে না পড়ে সেই চেষ্টায় নানাবিধ অন্যায়, জালিয়াতি, ছল-চাতুরি চলতেই থাকবে, জ্বলতে থাকবে গণতন্ত্র, অন্য কিছু নয়। মুখ নীচু করে সুজাতা পায়েসের বাটি নিয়ে ফিরে যাবে, বোধিশূন্য, পেটে পিঠে ঠেকে যাওয়া জনগণের কাতর চোখের সামনে থেকে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ