হ্যাঁ, জিপিএসে যে নারীকণ্ঠ শুনতে পাওয়া যায়, তিনি ক্যারেন এলিজাবেথ জ্যাকবসেনের। তিনি পরিচিত ‘দ্য জিপিএস গার্ল’ নামেও। ক্যারেনের জন্ম অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডের ম্যাকয়ে। সাত বছর বয়স থেকেই তিনি গান লিখতেন এবং গাইতেন। কুইন্সল্যান্ড কনজারভেটরিয়াম গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক হওয়ার পর পরবর্তীতে পিয়ানো নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।
ছোটবেলা থেকে গায়িকা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন ক্যারেন। সেই স্বপ্ন চোখে নিয়েই অস্ট্রেলিয়া থেকে আমেরিকার নিউইয়র্কে পাড়ি দেন তিনি। কিন্তু দু’বছর পর্যন্ত তাঁর ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি।
২০০২ সালে ক্যারেনের কাছে সেই সুযোগ আসে। কণ্ঠশিল্পী হিসাবে কাজ করার প্রস্তাব আসে তাঁর কাছে। এই কাজ নিয়ে ক্যারেনের মধ্যে সে রকম কোনও উত্তেজনা না থাকলেও তিনি কাজটি করতে রাজি হয়ে যান। এর পর কণ্ঠশিল্পী হিসাবে অডিশন দেন ক্যারেন। ওই কাজের জন্য নির্বাচিতও হন তিনি।
জিপিএসে ব্যবহৃত হবে এমন একাধিক ইংরেজি শব্দবন্ধ ক্যারেনের কণ্ঠে রেকর্ড করে ওই সংস্থা। প্রায় ৫০ ঘণ্টা ধরে সেই রেকর্ডিং চলে। কাজের মধ্যে চার ঘণ্টা ছাড়া বিশ্রাম পেতেন ক্যারেন। তারপর আবার রেকর্ডিং প্রক্রিয়া চলত। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সেই কণ্ঠ জিপিএসে সংযোজন করার পর তাঁর তা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়।
২০০২ সালে ক্যারেনের রেকর্ড করা সেই কণ্ঠই এখনও বিশ্বের কোটি কোটি গাড়ি এবং স্মার্টফোনের জিপিএসে শুনতে পাওয়া যায়। এই প্রসঙ্গে ক্যারেন বলেন, ‘আমার কণ্ঠ জনপ্রিয় কারণ মানুষ বর্তমানে জিপিএসের উপর নির্ভরশীল। রাস্তাঘাটে যখন তখন জিপিএসের প্রয়োজন পড়ে। তাই আমি বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের নিত্যনৈমিত্তিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে পড়েছি।’
জিপিএসে কণ্ঠ দেওয়ার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি ক্যারেনকে। একে একে অনেক কাজের প্রস্তাব পেতে শুরু করেন তিনি। তিনি বর্তমানে এক জন জনপ্রিয় বিনোদনকারী, গায়িকা, গীতিকার, কণ্ঠশিল্পী এবং প্রেরণামূলক বক্তা। টেলিভিশনের একাধিক অনুষ্ঠানে সঞ্চালক হিসাবেও কাজ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। অস্ট্রেলিয়া থেকে আমেরিকা আসার পর থেকে কমপক্ষে ১০টি মিউজ়িক অ্যালবামে গান গেয়েছেন ক্যারেন।
নিজের জীবনের সাফল্যের কাহিনি অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে দু’টি বইও লিখেছেন। ‘দ্য জিপিএস গার্ল’স রোড ম্যাপ ফর ইয়োর ফিউচার’ এবং ‘রিক্যালকুলেট-ডিরেকশনস ফর ড্রাইভিং পারফরম্যান্স সাকসেস’।
0 মন্তব্যসমূহ
সুচিন্তিত মতামত দিন