জগৎ জুড়িয়া এক জাতি আছে । সে জাতির নাম কবি জাতি । উহারা গুড মর্নিং হইলে কবিতা লেখেন গুড নাইট হইলে কবিতা লেখেন পুত্র জন্মাইলে কন্যা ঋতুমতী হইলে স্ত্রী রাগ করিলে স্বামী পরকীয়া করিলে প্রেমিকা লেঙ্গি মারিলে প্রেমিক আদর করিলে পোষ্য বাচ্চা বিয়াইলে পিঠা পুলির ঠ্যাং গজাইলে সবেতেই অতি গদগদ পুলকিত হরষিত চিত্তে স্ক্রিন ভরাইয়া নিদ্রা হরাইয়া আবেগের গুষ্টির তুষ্টি করিয়া কবিতা লিখিয়া থাকেন । অন্যেরে ট্যাগাইয়া ঘাড় ধরিয়া নিয়মিত একত্রে হুক্কাহুয়া করিয়া নিজ লেখা কার্যত নিজে শুনিয়া ধন্য হন । উপস্হিত অপর জন ততক্ষণে মকশো করিয়া থাকেন তিনি কোন বিশ্ববন্দিত জ্বালাময়ী অচিন্ত্য অভূতপুর্ব কাব্যখানি পাঠ করিয়া বিশ্বকে চমকিত সমৃদ্ধ ভারাক্রান্ত করিবেন । ইহারা বহু প্রসবিনী । রক্তাল্পতা ভগবানের কৃপায় ইহাদের স্পর্শ করিতে পারে না ।
প্লেটো যে কোন কারণে ইহাদিগকে আইডিয়াল রিপাবলিক হইতে বরখাস্ত করিলেন বুঝিয়া পাই নাই । কিংবা ইহারা প্লেটোকে সন্তুষ্ট করিতে জানালা দরজা বন্ধ করিয়া নিজ কূপ মধ্যে প্রবেশ করিতে প্রয়াস পাইয়াছেন । টু শব্দটি করিবেন না রাষ্ট্রযন্ত্রকে কথা দিয়াছেন । বোবা কালা হইয়া থাকিবেন মৌলবাদীকে ভরসা দিয়াছেন । চাঁদ তারা ফুল পাখি বিহনে প্রেম নাই । জল স্হল অন্তরীক্ষ পর্যন্ত কাম স্নেহ মায়া চটচটে করিয়া পিছলাইয়া অবশিষ্ট হাড়গোড় ভাঙিয়াছেন । রহিয়া গিয়াছে জেলিফিস আর সেলফিস জায়ান্ট । উচ্চ হইতে উচ্চতর হইয়াছে আত্মকে ঘিরিয়া প্রাসাদ কলিকাতার যীশুর ন্যায় দুই চারিটি ল্যাংটো শিশু উহার ফাঁক ফোকর আনাচ কানাচ ঘুরিয়া ক্লান্ত হইয়া ঘুমাইয়া পড়িয়াছে পথ কুকুরের বাচ্চাকাচ্চার সাথে । কোন ডাইনী আসিয়া ডাং মারিয়া দিবে মাথায় ফাটাইয়া দিবে অন্ত্র কে জানে ।
ইহারা সৌন্দর্যের পূজারী । ডাস্টবিনে যাক যত অনাচ্ছিষ্টি কথা । সিয়াচেনে সৈন্যরা মাইনাস অমুক ডিগ্রীতে এক পায়ে খাড়া দেশ প্রেমের কবিতা লেখা হউক । উহাদের জানিতে মানা কেন সেই সৈন্যরা নিম্নমানের খাবারের জন্য বিদ্রোহ করেন । কেন সেনা বাহিনীতে নিজ ব্যয়ে পোষাক বানাইতে হইবে । কেন অবসরপ্রাপ্ত সেনারা পেনশান সাম্যের দাবীতে আন্দোলন করেন । সেই প্রতিবেশী দেশ আমাদের পয়লা নাম্বার শত্রু । নেতারা রণহুঙ্কার দিতেছেন ভোট আসিলেই । অস্ত্র কিনিতেছেন নব নব । প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়াইতেছেন জন কল্যাণের শিক্ষা স্বাস্হ্যের বাজেট ছাটিয়া আবার সেই শত্রুর সহায়তায় নির্মাণ করিতেছেন তিনশো কোটির স্ট্যাচু । সেই দেশের সস্তার টুনি গরীবে জ্বালাইলে পাপ হয় সেই দেশের জিও পেটিএম নেতা আর সাকরেদরা বিজ্ঞাপন করিলে বাণিজ্য করিলে কেন পূণ্য হয় । দেশ বিজাতীয় দ্বারা ছয়লাপ হইতেছে । উহারা উচ্চ ফলনশীন । উহাদের অগুন্তি শাদি । দেশ দ্রোহীরা স্লোগান দিয়াছে নাকি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে । কবিতা লেখা হউক । উহাদের জানিবার প্রয়োজন নাই আদম শুমারীর সত্য । জানিবার প্রয়োজন নাই দেশপ্রেমীদের কয়টা করে বিয়ে । এথিক্স কমিটি কোন ঢপের চপ । মানবাধিকার সংস্হার প্রশ্নের জবাব কেন তাহারা দেয় না । কেন উস্কানি দিতে ফেক ভিডিও ফেক নিউজ ছড়ায় আই টি সেল তৈরী করিয়া। তাহাদের কয়টি স্ত্রী । আইন পারমিট না করা সত্ত্বেও। তাহাদের জামাই কোন বিধর্মী। তাহাদের দখলে কেন সবচেয়ে বেশী নিযিদ্ধ মাংস রপ্তানীর বরাত এবং কৃতিত্ব । ইহারা নিয়মিত দেশপ্রেমের কবিতা লিখিবেন প্রজাতন্ত্র দিবসে স্বাধীনতা দিবসে কৃষ্ণ বা রামের জন্মদিনে। অশ্রু বিসর্জন করিবেন অবলার কৃষকের কান্নায় । জানিবেন না তাহারা কেন ফলিডল খায় । কেন দাবী আদায়ের জন্য মাইল মাইল হাঁটে ধর্মঘট ডাকে ।
তাহারা কবির জন্য কাঁদেন । কবি যে কারণে নির্যাতিত হন সেই কারণের মূলোচ্ছেদ বিষয়ে কথা কহিতে অস্বীকৃত হন । তাহারা নারী দিবসে পদ্য লেখেন । নারী সর্ববিষয়ে টক্কর দিলে কাঁপিয়া ওঠেন । ছি ছি করেন ।
0 মন্তব্যসমূহ
সুচিন্তিত মতামত দিন