আর্যতীর্থ

আর্যতীর্থ


 আমরা ওরা 

বাইরেটা বেশ মসৃণ চকচকে,  অশোক চক্রে তেরঙা পতাকায়
ভেতর যদি খুঁড়ে দেখতে চাও, ভারত নামটা নেই কোনো জায়গায়।
যেটা আছে, সেটা আমরা আর ওরা। কি বলেন,  আমার দেশোয়ালি বন্ধুরা?
আমরা বলতে ধর্ম হতে পারে, আমরা তো পুব, ওরা পশ্চিমমুখো
ওই পাড়াতে ওই যে ওরা থাকে, ও মেয়ে তুমি সাবধানে খুব ঢুকো।
আমরা মানে জাতও অনেক সময়, ওদের আছে কয় শতাংশ কোটা?
আমাদেরও দু এক ছটাক দাও,  আন্দোলনে  'পিছড়ে' হতে ছোটা।
আমরা মানে বিহারি বা বং
আমরা মানে লাল বা সবুজ রং
আমরা মানে শুওর কিংবা গরু
আমরা হলে চাকরি হবে গুরু!
আমরা মানে ওরা কেন আছে?
আমরা মানে ওরা কেন বাঁচে?
আমরা ওরায় আগুন ফুলকি ছোটে, আমরা ওরায় বাড়ি জ্বলে ওঠে,
আমরা ওরায় গন্ধ পোড়া লাশের, আমরা ওরায় ফসল জ্বলে চাষের,
কাগজ পড়ে হঠাৎ বেজায় খুশী, কালকে ওদের লাশ পড়েছে বেশি,
আমরা ওরা সাপ নেউলের লড়াই, আমরা ওরায় সবাই স্বজন হারাই,
আমরা ওরায় উগ্রবাদী মাও, নাম লেখালো ছোটো ছেলেটাও....
আমরা ওরা এক দেশেতেই বাঁচি, আমরা ওরা আসুক কাছাকাছি
তেরঙাকে দেখিয়ে সবাই বলুক, এই এখানে আমরা সবাই আছি।


 কথা খোঁজা 

কথাগুলো মাঝে মাঝে দুম করে দেয় বনধ ডেকে 
ছন্দগুলো আমায় ফেলে মজা দেখে দূর থেকে
যতই চেঁচাই আয় ফিরে আয়,
বুড়ো আঙুল দেখায় আমায়
ছেঁদো কবির খেলো ডাকে পাত্তা আবার দিচ্ছে কে!

খালি খাতা বেজায় খেপে হাঁকে 'এসব হচ্ছে কি!
সাদা পাতায় ফুল বানিয়ে বাঁধবো তোমার পুচ্ছে কি?
যেখান থেকে  যেমন করে
আনো কিছু শব্দ ধরে,
গদ্যকথায় পচবো আমি, এমন তোমার ইচ্ছে কি?

কি আর করা, মগজ ঢুঁড়ে আলুকঝালুক শব্দ খুঁজি
কোনটুকু আর আছে বলো গরীব কবির কথার পুঁজি!
ইনিয়ে করি বাবা বাছা
আয় কথারা আমায় বাঁচা
তোরা যদি এমন করিস, কষ্ট আমার হয়না বুঝি?

কিছু কিছু সরল কথার মন গলে সেই তোষামোদে
ভরসা ফেরে এই অকবির শিক্ষানবিশ ছন্দবোধে
আলগা সেসব শব্দ নিয়ে
হালকা পদ্য দিই বানিয়ে
ভয়ে আছি আবার যদি কথারা যায় অবরোধে!


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ