মহাশ্বেতা দেবী একজন দেবীই ছিলেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়েছেন। এই ভূ - দেবীর ত্রিশূল ছিল কালি কলম। যা অন্যায়ের শক্ত ভীত নাড়িয়ে দিয়েছিল। তিনি জাত দেখেননি, ভিন্ন জাত বলে অবজ্ঞা অবহেলা করে কখন ও মুখ ফিরিয়ে নেননি। নিজের আত্মশক্তি বলে অনেক দুর এগিয়েছিলেন একজন মহাশ্বেতা দেবী। বঞ্চিতা নারীর অধিকার আদায়, গৃহকোণে অত্যাচারিত পীড়িতদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন একজন মহাশ্বেতা দেবী।
দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও জনপদের মানুষের দুঃখ সুখের জীবন কথা ও নকশাল আন্দোলনের কাহিনীর পরিপেক্ষিতে লেখা গল্প ও উপন্যাস সাড়া ফেলেছিল ব্যাপক ভাবে। তিনি চিনিয়েছিলেন অচেনা জাতির জীবন প্রবাহ ঘটনা। তারা যে শিক্ষিতের হাতে দিনদিন অত্যাচারিত হয়ে আসছে তার ব্যাথার কথা লিখেছেন তিনি।
সত্যের জয়গান গেয়েছেন, আর অসাম্প্রদায়িকতার পাল তুলে সমান অধিকারের জলে ভেসে যেতে চেয়েছিলেন মহাশ্বেতা দেবী। ছোট জাত, বড় জাত বলে কোন কথা নাই সবাই মানুষ।
অরণ্যের অধিকার, হাজার চুরাশির মা, তিতুমীর, অগ্নিগর্ভের মত তেজী লেখা গুলো লিখে সমাজে তিনি সমাদৃত হয়েছিলেন। তার লেখা উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে " রুদালি "র মত কালজয়ী সিনেমা।মহাশ্বেতা দেবী ১৯২৬ সালের ১৪ জানুয়ারি অধুনা বাংলাদেশের ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কল্লোল যুগের প্রখ্যাত সাহিত্যিক মনীশ ঘটক এবং তার কাকা ছিলেন বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটক।
রবি ঠাকুরের শান্তিনিকেতন ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনো করেন। তিনি রবি ঠাকুরের সানিগ্ধ লাভ করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি এম এ ডিগ্রী লাভ করেন। মহাশ্বেতা দেবী ১৯৭৯ সালে অরণ্যের অধিকার উপন্যাসের জন্য সাহিত্য আকাদেমি পুরষ্কার লাভ করেন। তারপর ১৯৯৭ সালে রামোন ম্যাগসেসে পুরষ্কার, জ্ঞানপীঠ পুরষ্কার ও ২০০৭ সালে সার্ক সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন। এই হাজার চুরাশির মা খ্যাত একজন মহাশ্বেতা দেবী ২০১৬ সালের ২৮ জুলাই ৯০ বছর বয়সে কলকাতায় মারা যান। তিনি এই জগতের একজনই মহাশ্বেতা দেবী, তার মতো আর দ্বিতীয় মহাশ্বেতা দেবীর জন্ম হবেনা এই ধরাধামে এ আমার পূর্ন বিশ্বাস।
আব্দুল আজিজ
Reviewed by Pd
on
আগস্ট ১৫, ২০১৬
Rating:
Reviewed by Pd
on
আগস্ট ১৫, ২০১৬
Rating:

কোন মন্তব্য নেই:
সুচিন্তিত মতামত দিন