পিয়ালী বসু



"হ্যাঁ এই যে , এইখানে সই করুন " 
"কি নাম আপনার" ? 
"শ্রীমতি সুশীলা নাগ" 
"আরে ? মিস না মিসেস ? সেটা ক্লিয়ার করুন ম্যাডাম "
একটু ইতস্তত করে সুশীলা । কি বলবে ? ফিরে যাবে কি ? কিন্তু আর তো লুকোনো যাচ্ছে না । সকলের নজর এড়িয়ে আর কদ্দিনই বা ...
"মিসেস সুশীলা নাগ" ।
"অ ! বসুন ওখানে" । 

পাঁচ বছরের দাম্পত্য জীবনে শুধুই নিত্য নৈমিত্তিক ঝামেলা , অশান্তি আর মনোমালিন্য । সেও সয়েছিল , কিন্তু যেদিন থেকে হাত উঠলো সুশীলার শরীরে , সেদিন থেকে আর চুপ করে থাকেনি সে । "শরীর টা কি তার বাপের সম্পত্তি ? রোজ রাত্রে ঘাঁটবে আবার রোজ সকালে কালশিটে" ?  আলিপুর কোর্টে ডিভোর্স এর কেস উঠলো । সেতো কতজনেরই ওঠে । কিন্তু এই নিত্য দোটানার ভোগান্তি কজন এর ?

বিনয়ের সাথে ঝগড়া আর অশান্তির মাঝেই কখন যে টুক করে অয়ন লাইনে ঢুকে পড়েছিলো , সেটা ভাবলে আজও অবাক লাগে তার । শরীর তখন শুকনো , যোনিপথের পিচ্ছিলতা শেষ কবে , সেও সুশিলার মনে পড়েনা , সেই ক্রান্তিকালে অয়নের আবির্ভাব । কিই বা করত সে ? তার জায়গায় অন্য কেউ থাকলেই বা কি করত ? প্রশ্নের মায়াজালে জর্জরিত সুশিলা কে বিনা আয়াসেই বধ করেছিলো অয়ন ।

তারামা নার্সিং হোম থেকে বেরিয়ে আসে সুশীলা , সুশীলা নাগ । এই মুহূর্তে পেট খসিয়ে এসেছে সে । বিনয় ঘোষালের স্ত্রী । তবুও আজ যে সাহস টা না দেখালেই চলছিলো না ! দিনের পর দিন অয়নের চোখে নিজেকে বেশ্যা ভেবে এসেছে সে । কেন ? ভালবাসায় শরীর দেওয়া কি অপরাধ ? আজ তাই যন্ত্রণাদীর্ণ হৃদয়ে সন্তান খসিয়ে আসার তীব্রতর অপরাধে খাতায় অয়নের নামটাই লিখে এল । যে পিতৃত্বের ভার তাকে বহন করতে হল না , সেই অব্যক্ত পরিচয় আজ না হয় নার্সিং হোমের রেজিস্টার খাতাতেই থাকুক ।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

সুচিন্তিত মতামত দিন