অবসর সময় অনেক মানুষ কে খুঁজে বেড়ায় সুপ্রতিম ফেসবুকে। কিছু কিছু সময় হঠাৎ পেয়ে যায় কাউকে, বেশির ভাগকেই আর খুঁজে পায় না। প্রধানত পুরনো বন্ধুদেরই খুঁজে বেড়ায় সুপ্রতিম। যাদের পায় না, ভাবে - হয়ত কোনো ছদ্মনামের আড়ালে আছে তারা। তা থাকুক, তবে তাদের কোনদিন জানতেও পারবে না কত খুজেছিল তাদের।
কিন্তু এমন কেউ যদি থাকে যার ভালো নামটাই জানে না সুপ্রতিম, তাহলে? তাহলে তো খুজেই পাবে না কোনদিন।
- ওই দেখ গন্ডাক
- গন্ডাক কি রে, গন্ডার বল
- আমি তো তাই বললাম, গন্ডাক
- ধুস তুই বলতেই পারিস না
পাঁচ বছরের ছোট্ট ছেলেটা তার দুদিন আগে বন্ধু হওয়া চার বছরের মেয়েটাকে বুঝিয়ে পারে না আর। এই দুদিনেই খুব বন্ধু ওরা।
সুপ্রতিমরা কদিন হল বেনারসে এসেছে। গোধুলিয়া মোড়ের কাছে একটা বাড়িতে উঠেছে। দুটো ঘর পাশেই ঘোষ কাকুরা। বাবা মার সঙ্গে কিছুক্ষণের মধ্যেই আলাপ হয়ে গেল ওনাদের। আর টুপাই এর সঙ্গে সুপ্রতিমের।
ঘোষ কাকু একটা কালো মত বড় সড় ক্যামেরায় সারাক্ষণ ফটো তুলে যাচ্ছেন। মা বলল ওটাকে বলে বক্স ক্যামেরা। এখন জেনেছে ওটা ছিল ফ্লেক্সো ক্যামেরা। ঘোষ কাকু ইঞ্জিনিয়ার। জার্মানি তে গিয়েছিলেন কি সব পড়তে। বাবা মার টুকরো টুকরো কিছু কথা কানে এসেছে।
টুপাই টা খুব দুষ্টু। কেবল বদমায়েসী। আর সুপ্রতিম বেশ শান্ত। দুজনে হাত গট গট করে যখন ঘুরে বেড়াত, ওদের বাবা মার কি হাসি। ঘুরতে ঘুরতেই কোনো একটা জায়গায় একটা গন্ডারের মূর্তি দেখে টুপাই বলে উঠলো - ওই দেখ গন্ডাক।
সুপ্রতিমের কি হাসি, তাই শুনে।
সেদিন খেলতে খেলতে হঠাৎ হোচট খেয়ে পড়ে গেল টুপাই। হাটুর কাছে অনেকটা কেটে গেছে। কি কান্না
- তুই আমায় ইচ্ছে করে ফেলে দিয়েছিস
সুপ্রতিম বুঝিয়ে আর পারে না যে সে একদমই ধাক্কা মারে নি। তারপরে শুভ্রা আন্টি এসে ওদের দুজনকেই আদর করে শান্ত করলেন। কিন্তু টুপাই আর বেশি কথা বলল না ….
আর কোনদিন দেখা হয় নি। বাবার অফিসে ঘোষ কাকু দু একবার ফোন করেছিলেন। তার অনেকদিন পরে খবর পেল ওনাদের নাকি গাড়ি এক্সিডেন্ট হয়েছিল। শুভ্রা কাকিমা নাকি আর বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেন না। আর টুপাই ? না তার কিছু হয় নি তেমন।
আজও খুঁজে চলে সুপ্রতিম টুপাই কে ফেসবুকে। কেবল একটা কথা বলবে বলে - আমি কিন্তু ইচ্ছে করে ধাক্কা মারিনি তোকে।
![]() |
| পরিচিতি |
সুদীপ ভট্টাচার্য্য
Reviewed by Pd
on
আগস্ট ১৫, ২০১৫
Rating:
Reviewed by Pd
on
আগস্ট ১৫, ২০১৫
Rating:


মন কেমন করে উঠল। যেন টুপাইকে খুঁজে পেতে ইচ্ছা করছে।
উত্তরমুছুনখুব ভাল লাগল লেখাটা...