দস্যি ছেলে শান্ত! চওড়া পিঠটার দিকে তাকিয়ে মনে মনে হাসে চাঁদনী। এই নিয়ে কবার হল? মাসখানেক আগে যেদিন প্রথম আসে রণজিৎ, একটু ভয়ই পেয়েছিল সে। দেখতেও ডাকাত ডাকাত। ঘরের কোনে রাইফেলটা নামিয়ে রেখে ওর দিকে ঘুরেছিল একজোড়া অশান্ত চোখ।
সে রাতে - অনেক পরে - অনেক কথা জানল সে। চাঁদনীর চেয়েও ছোট; একুশ চলছে। দুবছর আগে খাকি পোশাকরা পুড়িয়ে মারে মা-বাপ-বোনকে। জঙ্গলে পালিয়ে বাঁচে জঙ্গিদের আশ্রয়ে। চার মাস ট্রেনিংএর পর শুরু হয় সুদে আসলে শোধ নেওয়া।
ওর ঝাঁকড়া চুলগুলো আলতো হাতে ছুঁয়ে দেখে চাঁদনী। তিন বছর আগের জাহানারার কথা মনে পড়ে। কেউ কি এখনও মনে করে ওর কথা! কখন ভেজা চোখে ঘুম এসে যায়।
- চাঁদনী!
চাঁদনী চোখ মেলে দেখে রণজিৎ গায়ে জামা চাপাচ্ছে।
- হুঁ? চাঁদনী চাদরটা গায়ে টেনে নেয়।
- তুই আমার সাথে চল।
- কহাঁ! তেরে ঘর? হেসে ওঠে চাঁদনী।
- ঘর বসাবো; শাদী করব তোর সাথে।
- কহাঁ যাবি?
- পেহলা ট্রেন জিধর লে যায়ে!
আর বেশি ভাবেনি চাঁদনী। রাতভোরের অন্ধকারে পক্ষীরাজ ঘোড়ার পিঠে রাজকন্যে রাজপুত্রের হাত ধরে ক্রমশ মেঘের ওপারে মিলিয়ে যায়।
কারখানার পিছনের মাঠটায় আজ মেলা লেগেছে। ছোট্ট রাণা বায়না ধরে বাবার কাছে, ছররা বন্দুক চালাবে। দড়ির আগায় জ্বলন্ত মোমবাতিটা দুলছে। কিছুতেই নিশানায় লাগে না তার; লাগলেই পাবে টেডি বিয়র।
মৃদু হেসে ছেলের পিছনে হাঁটু গেড়ে বসে রণজিৎ। ছেলের নরম গালে গাল ঠেকায়। ছোট্ট হাতদুটি তার বিশাল বাহুর ঘেরায়। এক গুলিতেই নিভে যায় মোমবাতি।
টেডি হাতে দৌড়ে জাহানারাকে জড়িয়ে ধরে রাণা।
সুরমাটানা একজোড়া উজ্জ্বল চোখ তাকিয়ে থাকে - হাঁটু গেড়ে বসা মানুষটার দুটি শান্ত চোখের গভীরে।
![]() |
| পরিচিতি |
সরিৎ চ্যাটার্জী
Reviewed by Pd
on
আগস্ট ১৫, ২০১৫
Rating:
Reviewed by Pd
on
আগস্ট ১৫, ২০১৫
Rating:


eta ageo porechi facebook e...darun
উত্তরমুছুন