ইন্দ্রাণী সরকার

indranisarkar
"মনে পড়ে যায়"



মনে পড়ে সেইসব শিউলি ঝরা সকাল
জামরুল বন আর পেয়ারা পাতার ঝোপ
দিগন্তে মেঘ রোদ্দুর মাখা নীলাকাশ
আর সেই অপূর্ব গঙ্গার বহতা জলধারা ।
সন্ধ্যার পবিত্র বাতাস আর শঙ্খধ্বনি
মন্দিরের ঘন্টা আর জলের কুলকুল
নদীর ধারে দাঁড়িয়ে থাকা সেই কিশোরী
যার চোখ চলে যায় ওপারে কাঁচমন্দিরে
যার নীল আলো ভাসে ঢেউয়ের দোলায় ।


"কথার পুতুল"



কতবার তোকে খুন করতে গিয়েও
হাতগুলো সরিয়ে নিই
তোর হিরন্ময় মন, তোর হিরন্ময় কথা
কথাদের আমরা সাজাই নানান ভাবে
তাদের গায়ে রং দিই, আলখাল্লা জড়িয়ে দিই
দেখতে দেখতে কথাগুলো এক একটা পুতুল হয়ে ওঠে
এই ছুঁড়ি তুই এতগুলো প্রেম সামলে কি করে
এত কিছু ভেবে যাস
রহস্যটা বলবি ?
মাকড়সার জাল থেকে কথাগুলো
বায়বীয় আকার হয়ে মিশে যায়


"বৃক্ষ হাত"



কবে জানি না হাতের পাঁচটা আঙ্গুল
লম্বা হয়ে এক একটা বৃক্ষ হয়ে গেল
যার প্রয়োজন তাকে ছায়া দিতে হয়
ক্রমশ: ছায়া হেকে জন্ম নেই ছায়ামানব
শীর্ণ হাত, পিপাসু ঠোঁট
সব সরোবর শুকিয়ে গেছে
তাই মানস সরোবরে এসে ঘুমিয়ে পড়ি


"মধ্যস্থতা"



আসলে সব কিছুই ছিল মধ্যস্থতার আয়োজন
এই যেমন তাঁকে স্মরণ করা,
তাঁর প্রিয়জনের দুঃখে চোখের জল ফেলা
তাঁকে অন্যজনের হাতে সমর্পণ করার প্রচেষ্টা
সব কিছুই এরই অন্তর্গত
খালি জানা ছিল না সে তাকে আসলেই ভালবাসত
কোনো স্বার্থসিদ্ধির জন্য নয়
মানবদরদী আর একজনকে দেখে শ্রদ্ধা করেছিল
তবে পরজন্ম বলে কিছু আছে কি না
সে বিষয়ে খুব সন্দেহ


"তুরুপের তাস"



তুরুপের তাসগুলো অদৃশ্য বন্ধনে বাঁধা
একবার বললেই ঝাঁপিয়ে পড়ার অপেক্ষায়
তোর কাছ থেকেই শেখা এসব
কস্মিনকালেও আগে শুনি নি
আটকে রেখেছি,
তাদের ক্ষতি হোক চাই না তাই
তোর প্রেম আর আমার প্রেমে
অনেক তফাৎ শিখে নে
তুই নিজের কথা ভেবে গেছিস
আমি সবার কথা ভাবি


ইন্দ্রাণী সরকার ইন্দ্রাণী সরকার Reviewed by Pd on আগস্ট ১৫, ২০১৫ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

সুচিন্তিত মতামত দিন

banner image
Blogger দ্বারা পরিচালিত.