বাবুটা ঠোঁট ফুলিয়ে কেঁদে উঠলো। অস্ফুটস্বরে দুবার ডাকলো “মা” “মা” বলে। এত আদুরে মিষ্টি চেহারা! তার সাথে অভিমানী অভিব্যাক্তি তাকে আরও সুন্দর করেছে। কাঁদলে মানুষকে কখনোই সুন্দর দেখায় না। অসম্ভব সুন্দর মানুষটিও যখন কাঁদে তাকে দেখতে খারাপ লাগে। কে জানে সৃষ্টিকর্তা হয়তো চায় না তার সেরা সৃষ্টিটি কাঁদুক! তাই হয়তো কাঁদলে মানুষকে অসুন্দর দেখায়। জগতের একমাত্র সুন্দর কান্নার দৃশ্য যখন প্রকৃতি কাঁদে বৃষ্টি হয়ে। নীলাকাশ এত বিশাল হৃদয় পেতে আগলে রাখে তবু মেঘের এত কিসের কষ্ট কে জানে! কি এমন কষ্টে সে ভারী হয়ে নুয়ে আসে? কি লজ্জা তাকে আঁধার কালো করে? সে ছাড়া আর কি কেউ জানে! মেঘের সেই উথাল পাথাল কান্নার চেয়ে সুন্দর আর কিছু কি প্রকৃতিতে আছে? না, নেই। মেঘের কান্না আমাদের রোমাঞ্চিত করে, আনন্দিত করে। কোন মানুষের কান্নাও কি অন্য মানুষকে/ মানুষদের আনন্দিত করে?
বাবুটা আবার অস্ফুটে কেঁদে উঠে ডাকে “মা”। কান্নার সাধারন সুত্র মনে হয় এই বাবুটার ক্ষেত্রে কার্যকর না। বাবুটা যেমন সুন্দর তার কান্নাটাও সুন্দর। এত সুন্দর বাবুটাকে ফেলে ওর মা কোথায় ঘুরে বেড়াচ্ছে! কি সুন্দর ঠোঁট ফুলিয়ে আহ্লাদি হয়ে কাঁদছে বাবুটা। বাবুটার মাথা ভর্তি রেশমি চুল। ছোট্ট ছোট্ট দুটো হাত বাড়িয়ে বাবুটা কি যেন আঁকড়ে ধরতে চায়? কাকে যেন খোঁজে?
কাজ করতে করতে মেয়েটা হঠাৎই চমকে উঠে! কেউ কি ডাকলো তাকে? চারপাশে তাকিয়ে মেয়েটা কাউকে খুঁজে পায়না। আনমনা হয়ে সে আবার কাজ শুরু করে। তার কানের মাঝে কে যেন অস্ফুটে ডেকে ওঠে “মা” বলে। মেয়েটা চমকে উঠে ভীষণভাবে। আস্তে করে সে তার হাতটা বাড়িয়ে দেয় তার পেটে। খুব মায়ায় হাত বুলায় তার পেটের ওপর। কিছু একটার স্পর্শ পেতে চায় যেন। ধীরে ধীরে তার মুখে স্বর্গীয় হাসি ফুটে ওঠে।
শামসুন নাহার
Reviewed by Pd
on
মে ০৯, ২০১৫
Rating:
Reviewed by Pd
on
মে ০৯, ২০১৫
Rating:


কোন মন্তব্য নেই:
সুচিন্তিত মতামত দিন