সৌমিত্র চক্রবর্তী

পরিচিতি  











মহাভিনিস্ক্রমণ



দেখতে দেখতেই দুপুর গড়িয়ে কখন যেন বিকেল হয়ে এল। রোদ্দুরটাকে কোরামিন দিয়েও আর বাঁচানো যাবে না।

ঠিক যেমন বাঁচানোর আর বাঁচার চেষ্টায় ক্যানসার হাসপাতালের দুধসাদা বিছানায় কেমো নিতে নিতে জ্বালায় ছটপট করত আমার কোঁকড়ানো চুলের সুন্দরী মা।

বেলা পড়ে এলে যেসব নৈমিত্তিক হিসেব নিয়ে বসে হাজারো আঁক কষার সূক্ষ্ম চালচলন মনুসংহিতায় কালো পিঁপড়ের মত ঘুরে বেড়ায়, তারা অন্তত আমাকে ভয় পায়, এড়িয়ে চলে।

অযত্নের আগাছা ভরভরন্ত বাগানের এককোণে রঙশূন্য দেওয়াল ঘেঁষে যে আকন্দের ঝাঁকড়াচুলো গাছ নির্বিবাদে বেড়েই চলেছে, বিকেলের আবছায়ায় সে আমার অতীত হয়ে যায়।

সেই কোন দূর শৈশবে স্কুলের অঙ্ক ক্লাসে আমার, হ্যাঁ শুধুমাত্র আমারই বাইরের জানলার শিকের গরাদ বেয়ে পালানোর ইচ্ছে লুতলুত করে হাতে পায়ে চোখের কচি কচি পাতার চুলে জড়িয়ে আদর করত।

হাতে গায়ে পিঠে অসংখ্য ডোরাকাটা মারের ক্ষতচিহ্নের ক্যানেলে দু চার ফোঁটা শুকনো কালো রক্তের দাগ প্রায়শই উদাস করে, সেখানে গজিয়ে ওঠে গত দশকের ছুঁয়ে আসা গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন।

এভাবেই একদিন রাত্রি নামার আগেই  দাদুর দেওয়া পার্কার পেন, জমানো গান্ধীছাপ, জমে ওঠা আঁশগন্ধা বীর্য আকন্দের গোড়ায় পুঁতে রেখে একাই চলে যাব ছোট্ট অচেনা স্টেশনের বিহারী লাইনম্যানের এককামরার কুঠুরি ছুঁয়ে একবারের জন্যেও নিজেকে খুঁজে পেতে।






সৌমিত্র চক্রবর্তী সৌমিত্র চক্রবর্তী Reviewed by Pd on ডিসেম্বর ১৬, ২০১৪ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

সুচিন্তিত মতামত দিন

banner image
Blogger দ্বারা পরিচালিত.