চিরশ্রী ব্যানার্জি



২।
আমেরিকার সি.আই.এ কিভাবে নানান ভাবে জেলে বন্দিদের দুর্বিষহ যন্ত্রণার মধ্যে  অত্যাচার করত, সেই সব বর্ণনা পড়ে আজ সকাল সকাল মন বেশ ভারাক্রান্ত। এই সুন্দর পৃথিবীর মাঝে কেন যে এতো হানাহানি, হিংসা তা বহু চেষ্টাতেও বোধগম্য হয় না। 

তবুও প্রতিটি সকাল প্রতিটি মানুষের জন্য শুভ বার্তা বয়ে আনুক এই কামনার সাথে সাথে , আমার কর্মস্থল , শিক্ষাস্থল , সাধনার স্থল সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্তের দেখা প্রকৃতি এবং বিজ্ঞানের মেল বন্ধনের নানাবিধ চিত্র এবং তার রূপরেখা নিয়ে এবারেও তার’ই একটি অংশ -  সেই স্বপ্নের দেশ সুইজারল্যান্ডের একটি ছোট্ট গ্রাম স্তাদ ।  তাই যন্ত্রণার কথা নয় , বরং পৌঁছে যাই  প্রথম সংখ্যার হরিতবর্ন পাহাড়ের শিখরে এবং তার সুন্দরতায়। 

অশান্ত মনে প্রলেপ লাগাতে  চলুন ফিরে যাই রোপয়ে স্টেশনে। 



কেবিল (cable) কারে বসে দূর দূর অবধি দ্যাখা যায়  অগণিত পাহাড়ের ঢেউ, আর নিচে তাকালেই চোখ জুড়ানো মনোমুগ্ধকর স্নিগ্ধ সবুজের আল্পনা।  আঁকাবাঁকা পথ, বাড়ি আর নানান ধরনের বাহারি পাহাড়ি গাছ দেখতে দেখতে উঠতে লাগলাম পাহাড়ের শিখরে। 
কেবিল কার থেকে নেমেই, একান্ত নিভৃত নীরবতা স্পর্শ করলো আমায়। সময় যেন থমকে থেমে রইল অনেকক্ষণ। শান্ত, স্থির পাহাড় টি দেখে বুঝলাম যা কিছু হারিযে গেছে, যা কিছু পাওয়ার বাকি আছে সব হিসেব ই যে একদিন শূন্য হয়ে যাবে কালের যাত্রায় ,  তবু কেন অকারণ উৎকণ্ঠা আমাদের ? পাহাড়ের মতো  , পাহাড়ের পাদদেশের মতো -  শান্ত স্নিগ্ধ কোমল কেন হতে চাই না আমরা ?
কিছুক্ষনের আলাপ চারিতায়  পাহাড় দু’হাত  ভরে কত কিছু যে আমায় দিল ,  তার হিসেব নেই।  সেই সবটুকু নিয়ে আমরা এক কাপ গরম কফির খোঁজে একটি রেস্তোরা’তে ঢুকলাম। রেস্তোরা’তে ঢুকেই বেস অবাক হলাম। নানান দেশের মানুষের স্মৃতির উদ্দেশ্যে  অনেকগুলি স্মৃতিসৌধ। তার মধ্যেই চোখে পড়ল সুদূর কলকাতা’ র মেয়ে , অনুপমার উদ্দেশে রাখা ছোট্ট একটি স্মৃতিসৌধ।


 নানান পাখির ডাক শুনতে শুনতে, ধোয়া ওঠা কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে, দূরে দেখলাম শ্বেত শুভ্র, সুমধুর, সম্পূর্ণ সুন্দর আল্পস পর্বতমালার অংশ। মনে হল এই দুদণ্ড জীবনে কত দোষ আছে, দৈন আছে তবুও যেন ক্ষণিকের জন্য হলেও পেলাম এক টুকরো পবিত্র শোভা। হৃদয় ভরে সেই ক্ষণের অমৃত পান করলাম দু’চোখে।  


সেদিন’ই প্রথম আলপাকা (পেরুদেশীয় মেষবিশেষ) দেখেছিলাম।





প্রকৃতির একদম কাছাকাছি সময় কাটিয়ে, এক সমুদ্র শান্তি মন এর গভীরে নিয়ে অবশেষে বাড়ি ফিরেছিলাম। না আর কথা নয় চলুন সেদিনের কিছু মুহূর্তের একটি ছোট্ট ভিডিও দেখি।

এখানে 
সেদিনের স্মৃতি রোমান্থন করে এখন মন চলে গেছে পাহাড়ের নিস্তব্ধতায়। জানিনা আপনাদের হৃদয়ে কতটা পাহাড়ের শান্তির পরশ ছুঁইয়ে দিয়ে গেলাম। 

পরিচিতি

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

সুচিন্তিত মতামত দিন