![]() |
| পরিচিতি |
চিঠির পরশ
#
চিঠির প্রতি আমার দূর্বলতা চিরকালীন
সেই কোন শিশুকাল থেকে চিঠি লিখেছি ।
আর যতবার লিখেছি, ধরা পড়ে গেছি |
পোশাক বদল করার সময় কেউ দেখে ফেললে
যেমন লজ্জা , চিঠি ধরা পড়ে গেলে
আমার তেমন লাগত !
প্রথম চিঠি লিখেছিলাম টুম্পাকে
ক্লাস থ্রিতে " আমার এখানে আর থাকতে
ইচ্ছে করে না , মনে হয় বই পত্র নিয়ে
তোর কাছে চলে যাই " এই টুকুই ছিল প্রাণের গোপন কথা |
সেই চিঠি দিদি মাকে দেখিয়ে দিয়েছিল |
বড় হয়ে আমি ও ওর লুকানো প্রেমপত্র
পড়তাম আর মাকে বলে দিতাম |
#
বড় হবার সাথে সাথে আকুলতা বেড়েছে
চিঠির প্রতি | ডাকপিওন রণজেঠু কে
সাইকেলে আসতে দেখলেই মনটা নেচে উঠত ,
এই বুঝি দাঁড়ালো আমাদের বাড়িতে |
আমার সকল আত্মীয় রা এত কাছাকাছি থাকি যে কেউ চিঠি লেখার তাগিদ অনুভব করি না |
কেবল বর্ধমানের গুরুদাদুর হাতে লেখা হলুদ পোস্ট কার্ড আসত মাঝে মাঝে |
তখন ও ভাবতে শুরু করি নি, চিঠির আসল সুখ প্রেমপত্রে |
প্রথম প্রেমপত্র হাতে পাই স্কুলে , মহুয়ার
পিনটু লিখেছিল, রক্ত দিয়ে ।
একটা ধবধবে সাদা পাতায় রক্ত দিয়ে লেখা
কয়েকটা লাইন । আমাদের সব বান্ধবীদের হাতে হাতে ঘুরে ছিল সেই চিঠি ।
আবছা লাল লাল মোটা অক্ষর
আমার মনে প্রেম জাগিয়েছিল ।
ভালোবেসে ফেলেছিলাম ।
#
আমি প্রথম প্রেম পত্র লিখেছিলাম
ক্লাস ইলেভেনে তরুন কে ।
করবী কিছুতেই রাজি হচ্ছিলো না , তরুণ ওর থেকে
এক বছরের ছোটো ছিল বলে ।
করবীর হয়ে চিঠি টা আমি লিখেছিলাম
ওদের প্রেমটা আর হয় নি ,
আমারও আর প্রেম পত্র লেখা হল না ।
#
আমি কখনো পাইনি প্রেমপত্র । অথচ
জীবনে প্রেমের সংখ্যা কিছু কম নয় ।
প্রেম বোঝার আগেই প্রেমে পড়েছিলাম
আজয় জাদেজার । ছায়ার মতো পায়ে পায়ে
লেগে থাকত । আমার শোবার ঘর, বই ডাইরি
খাতা, কোথায় ওর ছবি রাখি নি, নাম লিখি নি ।
সব টুকু ছিল মন জুড়ে ।
একটা আবেশের মধ্যে ছিলাম ।
বছর চারেক পর সেই ঘোর কেটে ছিল
পাশের পাড়ার একটি ছেলে কে দেখে ।
যাওয়া আসার সময়ে হটাৎ করেই
রোজ আবিস্কার করতে থাকলাম তাকে ।
প্রথমবার অনুভব করেছিলাম
প্রেমের অনুভব ।
#
বেশী না ভাসিয়ে একটা কথা বলি
বা একটা তালিকা তৈরি করতে পারি
আমার এই মধ্য ত্রিশ জীবনে যে ধরনের চিঠি পেয়েছি আমি...
দুএকটা বেনামী চিঠি
রেডিও তে একটা পুরস্কার জিতেছিলাম, তার চিঠি
আর কিছু ফিনানশিয়াল কাগজ পত্র ।
না, এর বাইরে কোন চিঠি আমি পাই নি ।
কেবল চিঠি পাবার গন্ধে দিন গুনেছি
যে চিঠিটা আমার উড়ন্ত ডানা কেটে দিয়েছিল
সেটা পেয়েছিলাম এক বৈশাখের সকালে
ঘুম থেকে উঠে ।
টেবিলের উপর রাখা ছিল ওয়েট পেপারের নিচে
মেঝের উপর রাতের পোশাক পরে ছিল
পায়ের নিচে মেঝে টা যেন কাঁপছিল
কিন্তু, ভূমিকম্পের চিহ্নও ও ছিল না ।
পাঁচদিন পর রণ জেঠুর সাইকেল এসে থেমেছিল
অচেনা ঠিকানা থেকে আসা একটা চিঠি নিয়ে ।
রত্না ঘোষ
Reviewed by Pd
on
নভেম্বর ২১, ২০১৪
Rating:
Reviewed by Pd
on
নভেম্বর ২১, ২০১৪
Rating:


কিছু বানানে অসংগতি আছে। আর বানানে অসংগতি একটা কবিতাকে হাসতে হাসতে খুন করতে পারে, জানি। দ্বিতীয়ত, ওয়েট পেপার কী বস্তু বুঝতে পারিনি। পেপার ওয়েট নাম অবশ্য শুনেছি। পরিশেষে, অনেক ভাল লাগা দিলাম কবিকে।
উত্তরমুছুন