মন্দিরা ঘোষ | সব জামরঙা বিকেল প্রতিবাদে ফিরবে একদিন

এই যে তোমার সঙ্গে ঘর ঘর খেলা
কুঁয়ো থেকে ছেঁকে নেওয়া
 আঁশটে কানাকানিতে জেরবার  সংসার
পাখির থেকে ধার করা পুলকেও
কাঁপন ধরছে না বসন্তের কামিজে
ঘামে ভেজা কোমরের উসখুসে
বুলিয়ে দিচ্ছ আঙুলের শিষ্টাচার
মার্কসিস্ট কলারে শুকিয়ে যাচ্ছে ভাতের কবিতা
তোমার স্বৈরী ড্রয়িংরুম সেজে উঠছে
পুতুলের স্লোগান শান্ত বাঘের থাবা
পোষা পাখির পালক দিয়ে
স্তাবক তুলিসকল প্রসব করছে
তেলতেলে কবিতা

এসব দেখে ভেঙে পড়ো না
নতুন উদ্যমে ফুলিয়ে নাও বুক
মোটা রোগা বা ধারালো কবিতা এঁকে ফেলার
স্বাধীনতা আদায় করতে
শান দাও নখে

রং দিয়ে যে সব রঙিন মুখোশ আঁকা হয়
একটা গোছানো ব্যালকনিতে
মনোরোগের বিজ্ঞাপন ঝোলে
পাখিদের সমাজে ঢুকে পড়ে রাজনৈতিক শুশ্রূষা
থেমে থাকা ট্রেনের জানলা  উপভোগ করে
হাতহীন যুবকের কাঁধে ফিরি করা
খুশির হুইশেল, লক্ষ্মীর পাঁচালি, শিশুর হাসি
চা বিক্রেতার ছেঁড়া সুকতলায় ধুলোর আর্তনাদ
কীভাবে যেন দামি ওয়ালেটের গুমঘর হয়ে ওঠে
অন্ধ কিশোরীর গুমোট কান্না
ফিরি করা মায়ের দুহাতে
আধুলির চকচকে লোভ স্বাভাবিক  বলে মনে হয়

দৃষ্টি লেভেলক্রসিং ছাড়িয়ে দিগন্ত ছুঁয়ে গেলে
এইসব প্রত্যাশিত জমাটমেঘ
ভাসিয়ে দেয় বৃষ্টির চিৎকার
যা ভেদ করতে পারে না তথাকথিত
ব্র‍্যান্ডেড লোগোর আস্তরণ
অথচ এইসব দলিত মেঘের ওপরেও
বিশুদ্ধ রাষ্ট্রীয় বাতাবরণ
নিচে নির্মল মা-মাটির দেশ
চারপাশে ধর্মের শক্তিমান হাত
ভাঙছে
আড়াল করছে
ছত্রাকার করছে
ফুল ও পাখির দোটানা  ভবিষ্যৎ
কবরের ওপরে গুছিয়ে রাখা মৃত শিশুর স্বপ্ন
চুরি করছে ক্ষুধার্ত নেকড়ের দল

সবুজের প্রতি ধেয়ে আসা করাতকলে
নাবালক আঙুলের ছাপ
বিবর্তনের গিঁট খুলে উড়িয়ে দিচ্ছি
গুহালিপি
এইসব সজীবতা সরে গেলে
সমস্ত নরম ছায়া সব জামরঙা বিকেল
প্রতিবাদে ফিরবে একদিন

লেজে আগুন দিয়ে বসে আছে
ময়াল পৃথিবী
একটু একটু করে শেষ হয়ে যাচ্ছে
মাটির সহ্য
দখিনাহাওয়ার রেশ
জলের উদারতা
সমস্তটা ছারখার হওয়ার আগে
নতমস্তক হও জলের কাছে
গাছের কাছে অপরাধী সাজো
ক্ষমা চাও মাটির বুকে
অন্তত একবার  নিজের কাছে
সততার ফেরিওয়ালা সাজো



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ