পল্লববরন পাল | বিশ বিষ

পল্লববরন পাল | বিশ বিষ

■ বিশ বিষ

০১​ ​ ​ ​ ​ ​

খিদে পেলে কেন ডাল ভাত চাস?
দূর বোকা –
ডিজিটাঞ্জলি জড়িবুটিওলা
ধর্ম খা

০২​ ​ ​

গোলকধাঁধায় সত্য ঢেকে মিথ্যা পরিপক্ক
আমার দেশ এখন নাকি ধর্ম-নিরপেক্ষ?

০৩

‘অচ্ছে দিন’ কি এগিয়ে দিলো? না পিছোলাম?
‘জরু’-র ছিলাম, এখন আমরা গোরুর গোলাম


০৪​ ​ ​

বুকের মধ্যে বলেছিলো কেউ কৈশোরে
কী লাভ হবে মুখস্থ আর বই পড়ে?
তার চেয়ে শোন, বলছি যা পইপই করে
যা ঝুলে পড় পলিটিক্সের মই ধরে
কামাবি​ প্রচুর​ একদিন হৈ হৈ করে

০৫​ ​ ​

গোধরা থেকে গোকুল হয়ে গোঁয়ার গরুর গাড়ি
গোস্তাফি মাফ, গোঁত্তা খেলো গোসর্পিকার বাড়ি
গোখরো গিলে গব্বরেরা গোঁঙায় গোবেচারি
গালাগালির গ্রাসরুটে তো গেরুয়া গালভারী​ ​

০৬​ ​ ​ ​ ​

মাছের মতো ভাসছে জলে লাশ
মর্মান্তিক অগুনতি উৎসবে
পথ্যবিহীন এ মড়ক-সন্ত্রাস
মাছের মতো ভাসছে জলে লাশ
শ্মশান শোকে করছে হাহুতাশ
প্রশাসনের টনক নড়বে কবে?
মাছের মতো ভাসছে জলে লাশ
মর্মান্তিক অগুনতি উৎসবে


০৭​ ​ ​

দলিত কেন হাগবে আমার ক্ষেতে?
দলিত সারের ফসল উঠবে ঘরে?
দলিত চাল আর সবজি খাবো নাকি?
মার শালাকে, মার শালাকে ধরে
দলিত কেন করবে পিএইচডি?
ম্লেচ্ছ হবে ইউনিভার্সিটি
ডিটেনশনে থাকবে ক্রীতদাস​ ​ ​ ​ ​
গাধার মতো খাটবে বারোমাস
ওদের জন্য কিস্যু লাগবে না
খাবেও না, তাই হাগবে-টাগবে না

০৮​ ​ ​

নাসিকার নিচে যার
ওষ্ঠ নয়, পায়ুদ্বার
সে মুখে আহ্বান স্রেফ –
অমৃতপুত্ররা জাগো
ঘরে ঘরে ঢুকে রেপ
উল্লাস উৎসবে লাগো

০৯​ ​ ​


দর্শনে যারা সিদ্ধ তারাই দার্শনিক
ধর্ষণে যারা সিদ্ধ তারাও ধার্ষনিক
ধর্ষণে যারা দর্শন করে খয়রাতি
সেই দর্শকরাই ধর্ষক
প্রতিবাদহীন, উত্কর্ষক
দায় সামলাতে নিয়মিত জ্বালে মোমবাতি


১০​ ​ ​ ​

রিলেশন-টন এখন সরলীকৃত
দিবে আর নিবে – মিলাবে ব্যালেন্সসিটও
তুই ভালোবাসা ইনভেস্ট কর্ নারী
দেখবি আসবে পুরুষ লগ্নিকারী
শিল্প আসবে, বাড়বে পকেট পুঁজি
কেন যে পকেট আড়ালে হৃদয় খুঁজি
সম্পর্কের মোদ্দা কথাই টাকা
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​  মানুষ শুধুই শরীর, বুঝলি?
​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ আর কিছু নয়, হৃদয়-টিদয় খাঁখাঁ



১১​ ​ ​ ​


দ্বিধা হও তুমি ধরণী
সত্যজিতের মতোন তুমিও
আমার অধীন, নীরবে ঘুমিও
বঙ্গ আমার, ধরণী আমার
আমি স্যান্ডেলচরণী
স্বপ্ন আমার, আস্ত এ দেশ
হবে নীল-সাদা বরণী
ভারতবর্ষ জুড়বে আমার
এপাং ওপাং সরণি


১২​ ​ ​ ​

নীরবতা নয় সমর্থন
নীরবতা নয় সমর্পণ
নীরবতা মানে প্রত্যাসন্ন
কলরবঝড়ে মরণপণ।

১৩​ ​ ​

অঙ্কে কি ভুল ছিলো মার্ক্সবাদে?
বিশ্বাস করতে যে বুকে বাধে
মোমবাতি টিমটিম প্রতিবাদে
কিংকর্তব্যের লাশ কাঁধে
এলোমেলো পড়ে আছি অবসাদে

১৪​ ​ ​ ​

যারা ভেবেছিলো ​ শ্রেণীহীন হলে ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ বাজিমাত
যারা রেখেছিলো​ ​ কাঁধে কাঁধ আর​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​হাতে হাত
যারা বিশ্বাস ​ ​ ​ ​ ​ করেছিলো - শুধু ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​বিপ্লব
পারে সমস্যা​ ​ ​ ​ ​ ​ সমাধান করে ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ দিতে সব -
দেয়ালে দেয়ালে​ ​ দুনিয়ার সব ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​মজদুর
এক হও – লিখে​ লাল গান আর ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​লাল সুর
মিছিলে হেঁটেছে - তারা আজ শত​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​টুকরোয়
ভেঙে চুরমার -​ ​ ​ নিজেরা এ ওকে​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ঠুকরোয়

১৫​ ​ ​

ইশ-ইশ - ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ভাবি
বিশ-বিশ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​খেলি -
​ ​ ​ ​ ​ ​ নিশপিশ করে হাত

অতিমারি ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ কার
ক্ষতিকারী?​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ধ্যুস্
​ ​ ​ ​ ​ ​ রাষ্ট্রের বাজিমাৎ

বিশ-বিশ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ নাকি
বিষ-বিষ - ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ ভেদ
​ ​ ​ ​ ​​ তালব্য আর মূর্ধ্যে


যতো ঢালি ​ ​ ​ ​ ​ ​ ​ বিষ
তুমি ভাবো ​ ​ ​ ​ ​ ​  বিশ
​ ​ ​ ​ ​ ​ নাচছো দু’হাত উর্ধে​ ​



১৬​ ​


ধরা যাক - এই সেই মঞ্চ
যেখানে আমরা সব বাঞ্চোৎ
একবার স্টেজ পেয়ে জান্তব হুল্লোড়ে মগ্ন
যবনিকা পতনের লগ্ন
পেরিয়েছে, তাতে কী হে?
শো চলবে, হবে না এ বন্ধ
ফুলের শরীর থেকে যতদিন না ছড়ায়
মৃতদেহ পচা দুর্গন্ধ।


১৭​ ​ ​ ​


নিজের নিজের ডেডবডি নিয়ে লাইনে দাঁড়াও সব
সম্রাট নিরো আসছেন, হবে সেলফির উৎসব
রাষ্ট্রের দায় সেলফি অবধি - ব্যাস, তারপর যাও
আধারে নিজের দাহ লিঙ্ক করে শাঁখ বা থালা বাজাও
এখন ভূতের কেত্তনটাই জনগণসঙ্গীত
গলা ছেড়ে গাও, যাতে কেঁপে যায় এ ভুতপুরীর ভিত।


১৮​ ​ ​


তবে কি প্রমাদ ছিলো সভ্যতার প্রসব-ভঙ্গিতে
নইলে এ নিদ্রা-সুর কোথা থেকে লাগছে সঙ্গীতে
যাপনবাদ্য জুড়ে, শব্দ-সুরে বাজেনা সিম্ফনি
ভরে যাচ্ছে মৎসবীজে, জিতে যাচ্ছে ক্রমশ লুম্পেনই


১৯​ ​ ​ ​


অন্ধকারের সঙ্গে এখন যুদ্ধ
চাঁদ ওঠেনি সিন্ধুপারে, তাই
এ ঘোর মৃত্যু-উৎসবে আমরাই
তোমারই নামে চূড়ান্ত উদ্বুদ্ধ।


২০​ ​ ​

প্রার্থনাগানের সুরে
যেই তুমি বলে ওঠো –
জাগো
অমনি মানুষ জাগে
গঙ্গা থেকে ভূমধ্যসাগর

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ