অমিতেশবাবুর রিপোর্টটা আজ কাগজে ছবি সহ ফলাও করে বেরোনোর পর থানার ভেতরে চাঞ্চল্য পড়ে গেছে। অনেক নেতা-মন্ত্রীর ফোন আসছে অবিরত। জবাবদিহী করতে করতে নাজেহাল অবস্থা ওসি সুবিকাশ দত্তের।
বাইক আরোহীদের হেলমেট পরা বাধ্যতামূলক। প্রথম কয়েকমাস ঠিকঠাক ছিল। তারপর আবার যেই কে সেই অবস্থা। মানুষ সচেতন না হলে পুলিশ-প্রশাসন কতটুকুই বা করতে পারে।
হেলমেটহীন বাইকযাত্রা সহ আরও অনেক বেনিয়মের খবর ছবি সহ প্রকাশ করেছেন অমিতেশবাবু। ষাট ছুঁই ছুঁই রিপোর্টার অমিতেশবাবুর প্রভাব বেশ গভীর। তাই প্রশাসনিক মহলে ব্যস্ততা বাড়ে।
গত কয়েকদিন ধরে চলছে অভিযান। সুবিকাশ আজও কয়েকজনকে বাইকশুদ্ধ নিয়ে এসেছেন থানায়। এর মধ্যে প্রিয়ঞ্জন নামে একটি যুবক রয়েছে। হেলমেট পরা দূরে থাক, তার লাইসেন্সও নেই। তাকে নিয়েই বসেছেন সুবিকাশ। এমন সময় মোবাইলটা বেজে ওঠে।
‘অমিতেশ মিত্র বলছি।’
‘হ্যাঁ স্যার, বলুন।’
‘আপনি প্রিয়ঞ্জন বলে কাউকে থানায় এনেছেন?’
‘হ্যাঁ স্যার। ওনার কাছে....।’
তাকে থামিয়ে দিয়ে অমিতেশ বলেন, ‘বাচ্চা ছেলে, ভুল করে ফেলেছে। একটু বকে ঝকে ছেড়ে দিন।’
উত্তরের অপেক্ষা না করে লাইন কেটে দেন অমিতেশ। সুবিকাশ অবাক হওয়ারও সুযোগ পান না, আবারও মোবাইল বেজে ওঠে। এলাকার এক প্রভাবশালী নেতার ফোন। অনেকটা আদেশের সুরে তিনি বলেন, ‘অফিসার, প্রিয়ঞ্জন অমিতেশবাবুর ভাগ্নে। ওর নামে কোনো কেস দেবেন না। ভদ্রভাবে ছেড়ে দিন।’
প্রিয়ঞ্জন চলে যাওয়ার পর কনস্টেবল বিধান বলে, ‘স্যার ওদের অন্যায় দাবি মেনে নিলেন?’
একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে, মলিন হেসে সুবিকাশ বলেন, ‘না মেনে কী কোনো উপায় আছে? আমার নিজের মাথায় তো হেলমেট নেই।’
বিধান কিছু বুঝতে পারে না। মাথার টুপিটা ঠিক করতে করতে বেরিয়ে যায়।
সৌরভকুমার ভূঞ্যা, তেরপেখ্যা, মহিষাদল পূর্ব মেদিনীপুর, ৭২১৬২৮ sesdekha@gmail.com
সৌরভকুমার ভূঞ্যা
Reviewed by Pd
on
মে ২৬, ২০১৯
Rating:
Reviewed by Pd
on
মে ২৬, ২০১৯
Rating:

কোন মন্তব্য নেই:
সুচিন্তিত মতামত দিন