পাড়ার তিন মাথার মোড়ে পলাশের গাছটাকে আজ যেন বেশী লাল লাগছে, শিমূলগাছের ডালে কোকিলের একটানা গলা সাধাতে আজ আর মন খারাপ করছেনা অত্রির। তাই আজ গাড়ি থেকে নেমে এই লোকজন ভর্তি রাস্তাটা ধরছে সে। কোন রকম দোল উৎসবের আতিশয্য নেই যেন এ শহরে। হঠাৎ যেন মন্ত্রমুগ্ধ হয়েছে গেছে এ পাড়া। স্বভাব সিদ্ধ কিছু কুরচিকর নাম বা কটু মন্তব্য আজ সে শুনতে পায়নি । মনে মনে বেশ খানিকটা হেসে নিল সে।
আজ বৌদি নিজে এসে চুলটা বেঁধে দিল, মা রান্নাঘর থেকে পছন্দের খাবার পরোটা আর ডিম ভাজির কথা জানিয়ে দিলো অত্রি কে।
ফ্ল্যাশব্যাকেঃ বাবা ভীষণ মারছে অত্রিকে, দাদার বিয়েতে ঘরে বন্ধ করে রেখে দিয়েছে প্রায় দুই দিন। মা চুলের মুঠি ধরে কত যে প্রতিজ্ঞা করিয়ে নিয়েছিল... তবুও অত্রি ...
ফেলা আসা অতীতকে আজ সব দুঃস্বপ্ন বলে মনে করতে চায় সে। 'আস্তে লেডিস' কিম্বা 'ছয় ছক্কা' , 'ঋতুপর্ণ' ... না জানি আরো কত নামের আজ অবসান ঘটেছে... ছোট থেকে আজ পর্যন্ত বরাবর প্রথম অথবা দ্বিতীয় হওয়া অত্রির পরিচয় তৃতীয় লিঙ্গের প্রথম আই এ এস । আজ তার জীবনে সত্যিই বসন্ত এসেছে। আরো অনেক অপমানের প্রতিশোধ নিতে স্কুল টিচার অত্রি কে আই এ এস হতেই হলো...
জানালার ধারে দাঁড়িয়ে পুনর্জন্মের দ্বিতীয় বসন্তে গুন করে উঠলো সে...'রাঙা হাসি রাশি রাশি অশোকে পলাশে'....
ওমনি পিছন দিক থেকে দশ বছরের ভাইঝি তার গালে কিছুটা গোলাপী আবীর লাগিয়ে বলল এখন থেকে 'তোকে কি বলে ডাকবো কাকুন?'
সিলভিয়া ঘোষ
Reviewed by Pd
on
এপ্রিল ০৩, ২০১৮
Rating:
Reviewed by Pd
on
এপ্রিল ০৩, ২০১৮
Rating:

কোন মন্তব্য নেই:
সুচিন্তিত মতামত দিন