বর্ষবরণের ধূমধাম আর মিষ্টিমুখের রেশ তখনো মিলিয়ে যায়নি, এরমধ্যেই আমরা কবিতাপ্রেমীরা এমন সুন্দর এক কবিতা উৎসবের সাক্ষী হয়ে থাকলাম যাহা মনের কোণায় এই রেশ দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকবে। হ্যাঁ, আমি বলছি শিল্পনগরী দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার এর 'সৃজনী' প্রেক্ষাগৃহের বিপিনচন্দ্র পাল সভাগৃহে আয়োজিত গত ১৬ই এপ্রিল ২০১৭ তে অনুষ্ঠিত 'কবিতা উৎসব' এর কথা।
কবিতা অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে উৎসারিত কিছু ভাবনা, কিছু অনুভবের গভীরতা। যা কবি ও পাঠকের মধ্যে এক আত্মিক যোগসূত্র তৈরি করে। আর কবিতা উৎসব সেই যোগসূত্রকে এক গভীর বন্ধনে বেঁধে দেয়। আয়োজকদের উদ্দেশ্যও ছিল তাই- দেশব্যাপী এক চূড়ান্ত অস্থিরতার সময় মানুষ যাতে খানিকটা শান্ত-সবুজের সন্ধান পায়। দুর্গাপুর সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা এবং বহিবঙ্গ থেকে আগত প্রায় দেড়শোর অধিক কবি-সাহিত্যিকদের আগমনে মুখরিত ছিল উৎসব প্রাঙ্গণ।
দুর্গাপুরের 'কবিতা উৎসব' এর সূচনা করেন 'মহাপৃথিবী' পত্রিকা সম্পাদক শম্ভু রক্ষিত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কবি কমল চক্রবর্তী, রঞ্জিত সিংহ, ধীমান চক্রবর্তী, উমাপদ কর, বিকাশ গায়েন, অংশুমান কর... সহ এই সময়ের আরও অনেক সম্মানিত কবিরা। তাঁদের সমৃদ্ধ বক্ত্যবের পর হয় পুরস্কারপ্রদান। পুরস্কারপ্রাপকরা হলেন সুদূর আন্দামানের কবি জ্যোতির্ময় রায় চৌধুরী, অনিন্দ্য রায়, রঞ্জিত কুমার সরকার, রাজকুমার রায় চৌধুরী। তাঁরা গ্রহণ করলেন কবি সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, অনিকেত পাত্র, মৃণাল বণিক ও দিলিপকুমার মুখোপাধ্যায় স্মৃতি সম্মান। শিল্পাঞ্চলের এই সমস্ত কৃতী কবিদের স্মৃতিচারণায় ছিলেন মানবেন্দু রায়, স্নেহাশিস মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।
সঞ্চালনার দায়িত্বে তরুণ কবি রাজীব ঘাঁটির সুযোগ্য সঞ্চালনায় একে একে কবিতা পাঠ করে চললেন- নিসৃংহমুরারি দে, অরূপ পান্তী, প্রণব পাল, ভারতী বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃষ্ণ দে, কল্পনা মিত্র, বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়, কুমারেশ তিওয়ারি, মুক্তি রায় চৌধুরী, ঠাকুরদাস চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতির্ময় রায় চৌধুরী, অনিন্দ্য রায়, রঞ্জিত সিংহ, ধীমান চক্রবর্তী, উমাপদ কর, বিকাশ গায়েন, অংশুমান কর... সহ আরও বিশিষ্ট কবিরা।
মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির পর পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহে দ্বিতীয় পর্যায়ে কবিতা পাঠ করলেন শ্যামল শীল, পুষ্প কর, দীপশিখা পোদ্দার, জয়ন্ত দে, উৎপল মুখোপাধ্যায়, অশোক মজুমদার অরুপম মাইতি... এবং আরও অনেকে। মানবেন্দু রায়, ব্রজকুমার সরকার, সুশীল ভট্টাচার্য, স্নেহাশিস মুখোপাধ্যায় প্রমুখ আয়োজকদের নিরলস প্রচেষ্টায় সর্বাঙ্গীণ সুন্দর অনুষ্ঠানটি শেষ হয়ে এলেও, মনের কোণে বেজে যাচ্ছে এই সময়ের কবি অংশুমান করের অদ্ভুত সুন্দর একটি লাইন-"দিনের শেষে একান্তে অক্ষরকর্মীকে অক্ষরের কাছে নত হতে হয়"।
প্রতিবেদক
সুমিত্রা পাল
দুর্গাপুর
কবিতা উৎসবঃ দুর্গাপুর
Reviewed by Pd
on
এপ্রিল ১৭, ২০১৭
Rating:
Reviewed by Pd
on
এপ্রিল ১৭, ২০১৭
Rating:


কোন মন্তব্য নেই:
সুচিন্তিত মতামত দিন