রাহুল ঘোষ

দেবীবরণ ও তারপর








এবার তো দেখলে, শেষ মুহূর্তের মোচড়ে কীভাবে তৈরি করে নিতে পারি তোমার দিকে যাওয়ার নতুন পথ? যে-পথ তোমার কাছে পৌঁছে দেবে দ্রুততর অভীপ্সায়। দ্রুত পৌঁছনো মানে তো আসলে আরও কয়েক হাজার বেশি মুহূর্তের নিবিড়তা। অতএব পথ পাল্টে গেল, কিন্তু পাল্টালো না! কারণ, গন্তব্য মানে তো সেই তুমি, আদিগন্ত তুমি!

ব্যাকুল খোঁজের সেই পর্বে লিখেছিলাম, 'হে অরণ্য, আমি তো দেবীকে রমণী করেই চাই'। পৃথিবীর বয়স অল্পই বেড়েছে তারপর। আর ততদিনে পাথরপ্রতিমা ছুঁয়ে একান্ত ঈশ্বরী নির্মাণ করেছি আমি। অজস্র বিরুদ্ধ দিন পেরিয়ে মনোজাগতিক প্রবেশপথ হয়ে জৈবিক ঢুকে পড়েছি তোমার গভীরে। সর্বজনীন দেবীর দেউলে দাঁড়িয়ে নিজস্ব দেবীবরণের মাধুর্য ক'জনের জানা আছে সন্দেহ, কিন্তু আমি জেনেছি! আরশিনগরের স্বপ্নসন্ধান থেকে ক্রমশ রচিত হয়েছে অন্তহীনের বাস্তব দিনলিপি।

তারপর যেন অনিঃশেষ যাত্রা বালুকাবেলার দিকে। এতদিন তুমি ছিলে নিজস্ব নদীটি, এবার যেন সমুদ্র হয়ে এলে! সার্থকনামা হয়ে এলে অনন্ত জলের বন্যা। আমার ঘ্রাণ ও স্বাদকোরকের নিবিড়তম হয়ে উঠলে তুমি। ঝলকে-ঝলকে তোমার ভিতর থেকে তখন উঠে আসছে ঢেউ, আর সেই স্নিগ্ধ আগুনে ডুবে যাচ্ছি আমি। ডুবে যেতে-যেতে রেখে যাচ্ছি পাপড়ির গায়ে দাঁতের হালকা পরশ।

আবহমান প্রকৃতি জানে, বালুকাবেলা থেকে আমি মুখে করে নিয়ে এসেছি মৌতাত। তবু কেন চারদিক থেকে ঘিরে ধরতে চাইবে এত বেরং! অথচ এটা তো কোনো খেলা নয়, বরং জীবনের থেকেও অনেক বেশি একটা কিছু, সে-কথা তোমার থেকে ভালো আর কে জানে! তবু কেন মাঝেমাঝে আশ্চর্য আনমনা ঘেরাটোপে যাও আমাকে বিচ্ছিন্ন রেখে! তোমার কি মাঝেমাঝে এখনও মনে থাকে না, আমার একমাত্র আকাঙ্ক্ষার নাম তুমি!



রাহুল ঘোষ রাহুল ঘোষ Reviewed by Pd on ডিসেম্বর ২৫, ২০১৬ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

সুচিন্তিত মতামত দিন

banner image
Blogger দ্বারা পরিচালিত.