পরাশ্রয়ী ঘ্রাণ
রাস্তার ধারে কে যেন ফেলে গেছিল একটি নষ্ট-বীজ
প্রচন্ড ঝড়ের দাপটে অন্ত:শিরাগুলি তখন প্রায় মৃত
হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে চারঘাটে মাথা খুঁড়ে
এসে পড়েছিলাম তোমার মহীরুহের ছায়ায়
তুমি ছায়া দিলে, বুক পেতে দিলে তোমার সবুজ
তোমার কোষের সমস্ত রস নিংড়ে আমার দূর্ভিক্ষ দিলে ঘুচিয়ে
আকাশে মেঘের পালতোলা নৌকার গায়ে আঁকলে বৃষ্টির আঁকিবুঁকি
আমি ভিজলাম, প্রাণ ভরে ভিজলাম, আর বুঝলাম-
আমি বাঁচছি..
সূর্যের দিকে মুখ তুলে চাইতে শিখিয়েছিলে
আমার শরীরে বেড়ে ওঠা ঘ্রাণ মুঠো ভরে ছড়াতে শিখিয়েছিলে বাতাসে
আমি তোমার বুক ছুঁয়েছিলাম-
আমার নরম কচি-সবুজ আদর দিয়ে, সুরভিত মধু দিয়ে
তুমি নিলে জড়িয়ে, তোমার শরীরের দৈর্ঘ প্রস্থ হল আমার চেনা
আমি তিরতির সুখে খেলছিলাম সেদিনও তোমার জমি জরিপ করে
তোমার ঘরে পরাশ্রয়ী সুখে আমি তখন অবিন্যস্ত সুখী
হঠাৎ বুঝলাম, তোমার বুকে কেমন কালো ঝড়
আমায় উপড়ে ফেলার কি ভীষণ কঠিন দাপট
আমার মুঠো ক্রমশ: হল আলগা, বাড়ন্ত মেরু হল অসাড়
এক ঝাপটে দলা পাকানো,মেরুদণ্ডহীন শরীরটা মিশল মাটিতে
আমার সারা তরঙ্গ জুড়ে তখন রক্তের স্রোত, হাজারো ফাটল
দু-হাত তুলে ধরলাম আকাশের কাছাকাছি তোমার দিকে
তুমি বললে, মরা কোষে জীবনের ভ্রূণ নেই, নেই সবুজের ঘ্রাণ
তোমার বল্কল জুড়ে এখন আগামীর পসরা
আগামী বৃষ্টিতে আমি মিশব তোমার শিকড় মাটিতে
আমার সবটুকু রস তোমায় দিয়ে যাব জীবাশ্মে মিশে
তোমার বুকের বাড়ন্ত নাচনে ভিতর জুড়ে তখনও বইবে
আমারই পরাশ্রয়ী ঘ্রাণ।।
0 মন্তব্যসমূহ
সুচিন্তিত মতামত দিন