শাঁওলি দে


কখনো কখনো ব্যক্তিগত সম্পর্কগুলোকে বড্ড নেড়েচেড়ে দেখতে ইচ্ছে করে। এমনিতে তো ঝুল পরে আছে,হাত ভর্তি ধূলো। আমি দু হাত ঝেড়ে রুমাল খুঁজে বেড়াই। তারপর আবারও ছুঁয়ে থাকি জল, আগুন আর মাটি। সম্পর্কের যে সুক্ষ্ম সূত্রটি চোরাবালিতে আটকে আছে বহুদিন,তাকে বার বার খুঁড়তে মন চায়। নিজে হাতে গড়া স্বপ্ন,যা নিজে হাতেই পুঁতে দিয়েছিলাম চোরাবালিতে....!

চোখের সামনে ভেসে ওঠে কত বলা না বলা। সব মনে আছে পাতার পর পাতা,লাইনের পর লাইন। আলমারির গোপন কুঠুরিটিতে সব গোপন জমে আছে, লেগে আছে জন্মলগ্নের দাগ। এখনো তার স্বাদ নোনতা। কখনো কখনো সেইসব পুরোনোকেই আবার একটু ফিরে দেখতে ইচ্ছে করে। নেড়ে চেড়ে দেখতে ইচ্ছে করে সেই সব ফেলে আসাকে। যে পুরোনো রাস্তায় কারণে অকারণে ছুটে গিয়েছি কত কত দিন. . .

আজও কি সেখানে লেগে আছে প্রায় ভুলে যাওয়া পায়ের ছাপ? বড্ড জানতে ইচ্ছে করে। জানতে ইচ্ছে করে সেই কবেকার ল্যান্ডফোনের ওপাশের গমগমে আওয়াজটা. . .তা কি এখনো তেমনি আছে? অংক বইএর ফাঁকে একটা শুকনো ফুল কতদিন কত স্মৃতি উস্কে দিয়েছে তা বুঝতে দিই নি কাউকে। আজ সে ফুলের কোনো অস্তিত্বই নেই,বদলে জায়গা করে নিয়েছে এক গুচ্ছ তাজা গোলাপ। প্রতি দিন তা বদলে ফেলি. . .ঘর সাজাই। ঘর ঘর খেলি। অনেক সুখের মূহুর্ত থেকে একটুখানি চুরি করে রেখে দিই মনের গভীরে। কেউ কোনদিন তার নাগাল পাবে না। আমি আড়াল ভালবাসি। এ যেন এক অদ্ভুত কানামাছি খেলা। এ খেলাতে আমারই জিত,আমারই হার। হাসির আড়ালে লুকিয়ে রাখা দুঃখ তাই আজকাল আর কষ্ট দেয় না।এই কষ্টগুলোই এখন কবিতা হয়ে ওঠে। হাততালিতে হলঘর মুখর হয়ে ওঠে. . .আমি কষ্টগুলোকে ভাসিয়ে দিই খোলা আকাশে। উপচে পড়ে সুখ,আনন্দ,ভালবাসা। মুক্ত বিহঙ্গের মত উড়ে বেড়াই আমি। বোধের গভীরে তৈরি হয় এ এক অন্য রকম বোধ। আলো ছায়ার এই ধোঁয়াশায় আবার বেঁচে উঠতে ইচ্ছে করে নতুন এক পথের আশায়। 

শুধু কোনদিন ... আরও অনেক বছর পর সেই পুরোনো রাস্তায় দেখা হয়ে যায় হঠাৎ ...
হয়ত সেদিন চিৎকার করে বলে উঠব 'আমি ভাল আছি।'

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ