১।
একদল ডাকাত ব্যাঙ্কে ঢুকল ডাকাতির জন্য ............ উপস্থিত গ্রাহক আর কর্মচারীরা বাধা দেবার চেষ্টা করল।
ডাকাতেরা বললঃ "ভাইসব, টাকা গেলে সরকারের যাবে, আর প্রাণ গেলে যাবে আপনাদের। এখন আপনারাই বুঝুন কোনটা বাঁচাবেন"??"
এই কথা শুনে সবাই বসে গেল। ডাকাতরা নির্বিঘ্নে টাকা নিয়ে চলে গেল।
***********************************
শিক্ষণীয়ঃ মানুষের মাঝে স্বার্থ ভিত্তিক বিভাজন সৃষ্টি কর। তাহলে তারা তোমার অন্যায় কাজ প্রতিরোধ করার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলবে।
************************************
.
ডাকাতেরা তাদের নিয়ে আসা বস্তা ভর্তি করে যতদূর সম্ভব টাকা নিয়ে আস্তানায় ফিরে গেল। এই ডাকাতের দলে যে ডাকাতের MBA ডিগ্রি ছিল সে বলল,এবার আমাদের দরকার আমরা কত টাকা লুঠ করলাম, তা গুনে দেখা।
.
সবচেয়ে প্রবীণ ডাকাত বললঃ " ধুর, এত টাকা গুনতে তো অনেক কষ্ট হবে। একটু পরেই টিভি তে বলবে কত টাকা লুট হয়েছিল। আমরা তখনই জেনে যাব।"
**************************************
শিক্ষণীয়ঃ অনেক ক্ষেত্রেই কাগজে ডিগ্রির চেয়ে অভিজ্ঞতার মূল্য বেশী।
*************************************
ঘটনা শুনে মন্ত্রী মহোদয় ব্যাঙ্ক পরিদর্শনে গেলেন। তিনি বললেন, ডাকাতেরা শুধু কয়েক বস্তা টাকাই তো মাত্র নিয়েছে। বেশিরভাগ টাকাই তো রয়েই গেছে, আর সেফ-ডিপোজিট বক্সগুলোও তো আছে। আসুন ভাইসব, আমরা ওগুলো নিজেদের মাঝে ভাগ করে নেই। কেউ বুঝতেও পারবেনা।
**************************************
শিক্ষণীয়ঃ যে যত উপরে, তাঁর চুরি ততো বড় এবং তা ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
**************************************
রাতে টিভিতে সংবাদ এলো, ব্যাঙ্ক থেকে ২০ কোটি টাকা সহ হাজার ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুঠ। ডাকাতরা হাজারবার গুনেও তাদের বস্তায় এক কোটি টাকার উপর পেলো না। আর স্বর্ণালঙ্কার তো তারা নিতেই পারে নি।
.
যাইহোক, অবশেষে ডাকাত দল ধরা পড়ল, রিমান্ডে গিয়ে স্বীকারও করতে হল তারাই সব ডাকাতি করেছে। সবার যাবজ্জীবন সাজাও হয়ে গেল।
**************************************
শিক্ষণীয়ঃ চুরি ডাকাতি করার ইচ্ছা থাকলে ভোটে দাড়িয়ে ক্ষমতায় গিয়ে করাটাই বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত নির্ভুল পদ্ধতি............
***********************************
সামনে ভোট, ডাকাত হবেন নাকি????
২।
"বামাচরণ বিদ্যালয়”
গ্রাম গঞ্জের স্কুল, "বামাচরণ বিদ্যালয়"। সকাল থেকেই সেদিন হইহই আর একটা চাপা উত্তেজনা। প্রতিটি জিনিষ পরিপাটি ভাবে যথাস্থানে শোভা পাচ্ছে। চুন দিয়ে জায়গায়-জায়গায় লাইন টানা হয়েছে। ফুলের টব গুলো স্কুল গেট থেকেই সার দিয়ে সাজিয়ে লাগান। স্কুল বিল্ডিং পরিষ্কার ঝকঝকে। সদর থেকে স্কুল নিরীক্ষক আসছেন, স্কুল নিরীক্ষণ করতে। সবাই তটস্থ..!!
তিনি এলেন। বেঁটে, মোটা, গুরুগম্ভীর চেহারা। বনবন করে চোখ ঘুরছে। যেন সবকিছুরই পোস্টমর্টেম করে নিচ্ছেন, নিজের এক্স রে বসানো চোখ দিয়ে। সারাটা স্কুল নিরীক্ষণ করে এবার তিনি এগোলেন ক্লাসগুলোর দিকে। অষ্টম শ্রেণীর এক বিদ্যার্থী কে -
-আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী কে..?
-বিরিঞ্চি বাবু।
-আমাদের প্রধানমন্ত্রী..?
-বিরিঞ্চি বাবু স্যার।
রাগে, দূঃখে নিরীক্ষকের চোখ-মুখ লাল।
-অষ্টম শ্রেণীতে কি করে উঠলে তুমি..? জানো, এই ভুলভাল উত্তরের জন্য আমি তোমার স্কুল থেকে নাম কেটে দিতে পারি..!!
-কি করে কাটবেন স্যার..? আমার তো স্কুলে নামই লেখা নেই। আমি পেছনের মাঠে ছাগল চরাতে এসেছিলাম। এই ক্লাসের মাষ্টার বললেন, ক্লাসে বসলে দশ টাকা দেবেন। তাই আমি এসে বসে গেছি।
প্রচন্ড রেগে নিরীক্ষক মাষ্টারের ঘরের দিকে এগিয়ে যান। থমথমে স্বরে তিনি মাষ্টারকে,
-ইয়ার্কি পেয়েছেন..!! জাল ছাত্র ক্লাসে বসিয়ে রেখেছেন..? জানেন, এই অপরাধে আমি আপনাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে দিতে পারি..!!
-আরে, কাকে ভয় দেখাচ্ছেন। করে দিন, করে দিন। আমি তো এখানকার মাষ্টারই নই। মাষ্টার তো পাসের ওই দোকানদার। শহরে গেছে কিছু জিনিষ নিতে। আমাকে এখানে বসিয়ে বলে গেল, "একটি অসহ্য রকমের বদখদ লোক আসছে। একটু সামলে নিস ভাই।"
শুনে নিরিক্ষকের পারা সপ্তমে ওঠে। পা পটকে সে সোজা ঢোকে প্রিন্সিপ্যালের ঘরে আর গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে,
-লজ্জা করে না আপনার এই সব কুকীর্তি করতে..?? আর আপনি কিনা স্কুল চালানোর জন্যে সরকারের থেকে অনুদান পান..!! সাপের পাঁচ পা দেখেছেন..!! আপনি জানেন, আপনার এই সব কীর্তি দেখে আমি এই স্কুলের মান্যতা বাতিল করে দিতে পারি..!! জবাব দিন..!!!
প্রিন্সিপ্যাল দরাজ থেকে একশো টাকার একটা বান্ডিল বের করে, সেটা টেবিলে রেখে বলেন,
-আমি আবার প্রিন্সিপ্যাল হলাম কবে থেকে..?? প্রিন্সিপ্যাল তো আমার জ্যাঠা। প্রপার্টি ডিলিং এর কাজও করেন। নতুন একটা কাজ পেয়েছেন। তারই অগ্রিম টাকা নিতে শহরে গেছেন। বলেছিলেন বটে, "এক হতভাগা নিরীক্ষক আসবে। যদি গোলমাল করে, ও ব্যাটার মুখে এই টাকার বান্ডিল ছুঁড়ে মারবি আর স্কুল গেট'টা দেখিয়ে দিবি।"
নিরীক্ষক মহোদয় একগাল হেসে বান্ডিল'টা পকেটস্থ করে,
-আজ আপনারা সব বেঁচে গেলেন। যদি মেজমামা রাস্তার ঠেকার কাজে আজ শহরে না যেতেন, এবং তার জায়গায় আমাকে এখানে না পাঠাতেন, আপনাদের কারুর আজ চাকরি থাকত না, এ বিষয় আমি নিঃসন্দেহ..!!!
৩।
"বিয়ের ২০ তম বিবাহ বার্ষিকীতে, রাতে স্ত্রী ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখেন পাশে স্বামী নেই। তাকে পাওয়া গেল ডাইনিং টেবিলে এক কাপ কফি নিয়ে ক্যালেন্ডারের দিকে স্থির তাকিয়ে আছেন। কফিতে একবার চুমুক দিচ্ছেন আর চোখের জল মুচ্ছেন। স্ত্রী কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস
করলেন, "কী হয়েছে তোমার?" ক্যালেন্ডার থেকে চোখ ফিরিয়ে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে, স্বামী বললেন, "আজ থেকে ২০ বছর আগের সেই দিনের কথা তোমার মনে আছে?" স্ত্রী বললেন, "হ্যাঁ।" স্বামী বললেন, "সেদিন তোমার বাবা বলেছিলেন, হয় আমার মেয়েকে বিয়ে করবে, নয়তো ২০ বছরের জন্য জেল খাটতে হবে মনে আছে?"
স্ত্রী বললেন, "হ্যাঁ, তাও মনে আছে।" স্বামী চোখ মুছে বললেন, "সেদিন যদি তোমাকে বিয়ে না করে জেলে যেতাম, তাহলে আজ মুক্তি পেতাম।"
0 মন্তব্যসমূহ
সুচিন্তিত মতামত দিন