শবরী শর্মা রায়



ছোট্ট একটা নীল পাখি বসে আছে পেয়ারা গাছের ডালে। ও যেন নিজের ভেতর নিজেই এক দেশ... আত্মমগ্ন...। আবার গাছ দাদা, সেও কি কম, তার দেশে ফুল-ফল , হাওয়া, মেঘ-বৃষ্টি ,ঝড়...বন্যা ,খরা ...কাকে বাদ দেব , মনে হয় প্রত্যেকেই চরিত্র ,প্রত্যেকেই স্বয়ং সম্পূর্ণ দেশ। 
পাথর কে দেখে মনে হয় প্রাচীন গ্রন্থ... ভাষা জানি না ওর। নির্বাক দাঁড়িয়ে আছে ধ্যানমগ্ন সন্ন্যাসী যেন। 
বিশাল এক মাঠ , সে নিজে যুদ্ধ নয়... তবু তার গায়ে আজও যুদ্ধের কলঙ্ক , ধর্মযুদ্ধের খলনায়ক --- কুরুক্ষেত্র! তবে কে সেই ডিক্টেটর... যার আঙ্গুলের ডগায় আমরা নাচছি... কাঁটাতারের বেড়া লাগিয়ে খুঁটিয়ে দেখছি পোক্ত হল কিনা। নিজের সন্তান কে শেখাচ্ছি ওমুক দেশের ...ধর্মের ... জাতির লোকের সাথে মিশবি না। 

আসলে সেটাও আরেকটা দেশই , শুধু উচ্চারণ আর বানান,জামাকাপড় ,চলন-বলন পালটে তিনি হয়েছেন “দ্বেষ”। খুব ভারী শব্দ... ওজনে নুয়ে পড়ে পৃথিবীর গাছপালা... ব্যথা হয় জলের... শ্বাসকষ্ট হয় বাতাসের ... আর সেই বিষ বুকে নিয়ে আমরা নিজেরাই এক এক জন মহাভারত...কুরুক্ষেত্র।

পাখির দেশ নেই --- বিদেশও নেই, ভোটার কার্ড নেই ,প্যানকার্ড নেই ,পাসপোর্ট-ভিসা  নেই,ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স নেই,রোজকার বাজার নেই... টেনশন –ডিপ্রেসন নেই... “দ্বেষ”নেই। গাছ ওর বন্ধু... উচ্চতায় গাছ শহরকে পেছনে ফেলে গেছে ... ।দেশ অথবা দ্বেষ কোনোটাই আমাদের মহান করে না, শ্রেষ্ঠ জীবের তকমা এঁটে আমরা নিজেই নিজের পিঠ চাপড়াই ...আর তারপর সমস্বরে বুক।         



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ