শাকিলা তুবা

লেখিকা পরিচিতি 
যার লেখা পড়ে মনের মাঝে নির্মিত হয় বহুমাত্রিক জীবনের চিত্র , চোখের সামনে ভেসে ওঠে জীবনের প্রতিচ্ছবি তিনি আমাদের  খুব প্রিয় মুখ , কবি শাকিলা তুবা ।তাঁর প্রথম বই প্রকাশ হয়েছিল ২০১২ সালের একুশে বই মেলায় নাম  ''হরিৎ জ্যোৎস্নায় ভেজে রুপকথা গাছ ''। এর পরের বই ধানসিঁড়িটির তীরে প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বংশী , নদীর নামে নাম ।কবিতাগুলোও নদীর মত কখনো উচ্ছল্ ছল ছল কখনো বয়ে যাওয়া শান্ত জল । 

 বংশী বইটির কবিতাগুলোয় রয়েছে  বৈচিত্রের বৈভব । এক একটা কবিতার বিষয়, মেজাজ  প্রকরণ এক এক রকম  । কখনো  পেছনে ফেলে আসা শৈশব তাঁর  মনে আলোড়ন তোলে দারুণ ভাবে ,তাইত'' শৈশব রঙ '' কবিতায় তিনি আকুল হন বাল্যের সেই বিস্কুটের গন্ধে ।ফেরত চান সেই গন্ধ মাতাল শৈশব । চলমান সময়ের নানা অসঙ্গতি  তাঁর মননে অস্থির আলোড়ন তোলে , গ্রীষ্ম সন্ধ্যা ,নুপুর,ঘুঙ্ঘুর ইত্যাদি ,কোথাও নাম নেই, দৃষ্টি  , বসন্তদিনে এই ছিল তবে উপহার ইত্যাদি  কবিতাগুলোতে  সাবলীল ভাবে উঠে এসেছে যাপিত জীবনের প্রতিচ্ছবি । সংবেদনশীল কবি মনে ছাপ ফেলে সমাজের অসংগতি তাইতো প্রমিত আলো ,দ্য ব্যাক প্যাকারস ,খয়েরি বাতাস । আমাদের  অহংকার মুতিযুদ্ধ কবি নিজেও একজন বীর মুক্তি্যোদ্ধার সন্তান, স্বাধীনতার চেতনা মিশে আছে তার সত্ত্বায় , তাঁর বভিন্ন কবিতায় সগৌরবে স্থান করে নিয়েছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের কথা , তাই কবি বলে ওঠেন ----

'' দেখি কত পোড়াতে পারো দীক্ষা ,ধৈর্য বৃদ্ধি---
আমরা অনেকে মিলে একটি বাংলাদেশ কোটি কোটি পতাকা । 

 আঁজলা ভরা দীঘি কবিতায় । এমনি আর কিছু কবিতা যেমন'' প্রজন্ম চত্বর ''কৃষ্ণচূড়া হাসে বাংলায় । 
জীবনের  আনন্দে উদ্বেলিত হলেও  বাস্তবের নির্মমতা   তাকে আলোড়িত করে প্রতিনিয়ত তাই অবেলা কবিতায় তিনি বলেন ---

'' তারপরও আমার মন খারাপ লাগে 
আমার ভীষণ মন খারাপ লাগে ''

ভালোবাসার আকুতি মানুষের চিরন্তন অনুভুতি কবিও ব্যাতিক্রম নন সেই অনুভুতিই অনুরনিত হয় অবধাররিত কবিতায় ,এখানে আমরা কিছুটা হতাশাও শুনি যখন তিনি বলেন ''আজকের স্বপ্নটা মিষ্টি কিন্তু বিষাদ ডানা ঝাপ্টালো  তোমার মুখে '' । এখানে কবির অল্প কিছু কবিতার কথাই আলোচিত হয়েছে মূলত সব কবিতাই সুখপাঠ্য , যদিও এটাও সত্য সব কবিতা কবিতা হয়ে ওঠেনা তবুও বলব বইটি পড়লেই  পাঠক  বুঝতে পারবেন  কতখানি  গভীরতায় তিনি কবিতায় জীবনকে স্পর্শ করেন । শাকিলা তুবার  প্রতীক ও উপমাগুলো   নান্দনিক  এবং সত্যানুসন্ধানী।  কবি প্রকৃত বাস্তবকে উন্মোচনের জন্যে পরাবাস্তববাদী চেতনায়ও  কবিতা রচনা করেন। এ চেতনা তাই তাঁর কবিতা নির্মানে  অপরিহার্য্য অংশ হয়ে ওঠে।নিসর্গ সৌন্দর্য্য ও আত্ম-অনুভবের অনুভূতি দিয়েই কবি তাঁর কবিতার অবয়ব গড়ে তোলেন। তাঁর আত্মজ ভালোবাসা ও সৌন্দর্য্যতৃষ্ণা কবিতার প্রতিটি বাক্যে,প্রতিটি শব্দে।একজন প্রকৃত কৃষকের  মতোই তিনি   অকর্ষিত ভূমিকে করে তোলেন আবাদযোগ্য আর সেখান থেকে বোনেন সফল কবিতার বীজ ।

কবির  সত্ত্বা জুড়েই  পরিপার্শ্বেক জীবনের  বিভিন্ন  অনুষঙ্গ একীভুত;  তার  কবিতার আঙ্গিনায় আপন ঐশ্বর্যে বিরাজমান , সমাজ, প্রেম , দ্রোহ , বিরহ- বিষাদ ,আনন্দ ও আকাঙ্খারর প্রতিফলন দেখতে পাই  বংশী বইটিতে ।


পরিচিতি  

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ