আগুনের দুই শিখা
১।
পরিপাটি খেতখামারে চৈত্রমাস রোদে-পোড়া মাটির
গন্ধ ছড়ায়।
জলের কনারা মাটির গভীর থেকে আরো গভীরে মুখ লুকোয়,
বড্ড রোদ এই চৈত্রমাসের পলাশ-কুসুমভরা দিনে।
আকাশের সূর্য উত্তপ্ত দিনটাকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে
জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়।
মাটির বুকে জলের কণারা ফল্গু হয়ে অন্য কোথাও
ভেজামাটির সুগন্ধ ছড়ায়।
নতুন অঙ্কুরে আনে নতুন জীবনের স্পন্দন,
চৈত্রজুড়ে আগুনে শুদ্ধ হয় আমার পঞ্চভুতের শরীর…
মাটিতে দঁড়িয়ে, পায়ের নীচে জল,জলের ভেতর পুড়ছি…
হাওয়ায় লেলিহান শিখা ছুঁয়ে ফেলছে আমার আকাশ।
এক থেকে দুই,তিন,চার .........
চৈত্রের আগুনে পুড়ে পুড়ে ছাই বছরের শেষ মধুমাস।
২।
বসুন্ধরার বুকে অর্হনিশি দহনজ্বালা,
পতিতা মায়ের মত,
নিজেই নিজের আগুনে পোড়ে,
বুকে আগুন,হাতে আগুন,রক্তে,চামড়ায়, পেশিতে আগুন ... !
গলিত লাভার জ্বলন বুঝিবা সহনশীলতা বাড়ায়
ধীরে ধীরে ধাপে ধাপে,
মাটিচাপা পুরাতন জঙ্গল কয়লা হয়ে দাউদাউ জ্বলে,
অভিমানিনী মেয়ের বুকচাপা আগুনের মত,
খান্ডবদহনের মত দাবানলে জ্বলে দুরন্ত রাগ,
তুষানলের মত ধিকিধিকি জ্বলে প্রতিশোধের আগুন,
দাবদাহে পুড়ে পুড়ে ছাই হয় সবুজ ঘাস, কিশলয়,
কিশোরীর নরম অনুভব যেমন পোড়ে বাস্তবের রোদেলা
আঁচে।
ভাবি, মাটির ভেতর থেকে
তুলে আনব প্রথিমিউসের আগুন,
পোড়াক্ষত গুলোতে সোহাগরেণু মাখানোর চেষ্টা করবো
।
ভাবতে ভাবতেই দিন গড়িয়ে রাত।রাতের পর আরেকটা দিন
কিংবা আবার একটা সকাল,ভাবি ঘুম ভাঙ্গলে আবার মাটি খুঁড়ব...
তখনই দেখি এক সিঁথি থেকে দ্বিতীয় তৃতীয়
.........
একের পর এক সীমন্তিনীর সিঁদুর রাঙা সিঁথির দিকে উড়ে যাচ্ছে
অগুনতি চিতার লেলিহান আগুনের শিখা।
উড়িষ্যা ।
0 মন্তব্যসমূহ
সুচিন্তিত মতামত দিন