
পরিক্রমা – সাতপাকে
অনেক বসন্তের পর ত্বকে শুধু অবেলার বলি রেখা। সাবেকিয়ানা হলেও সম্ভ্রান্তে ঠায় দাঁড়ানো দক্ষিণমুখী দালান বাড়ি। ঝুম ঝুম বৃষ্টি’র দিন জেনেও উড়ো মেঘের অকাল স্তব্ধতায়, দুপুর হলেই আজকাল তীক্ষ্ণ রোদের প্রবেশ। অবাধ ঘুল ঘুলি বেয়ে অনিয়ন্ত্রিত রোদ নামে মধ্য দেওয়ালে। সখ্যতে, ছবি হয়ে ভেসে ওঠে, কাঠ আলমারির মাথায় রাখা দোলমা বাঁশের ডালায়, মাথা উঁচিয়ে সাপ্টে থাকা টোপরে ঘোষিত দাম্পত্য জীবনের রাজকীয় ছাড়পত্র।
সূর্য গড়িয়ে গেলে’ই দেওয়াল বেয়ে বেয়ে নেমে আসে কোমল আলো। আলো ছায়া’র আল্পনায় এ যেন, স্মৃতির ছায়ানাট্য। কখনো নারায়ণশিলা, কখনো’বা বিদ্ধিশ্রাদ্ধ, আবার কখনো তত্তে হুরমুড়িয়ে ভেঙ্গে পরা মায়ের ক্লান্ত মুখ। একটু কান পাতলেই শুনতে পাই, উচ্ছ্বাসে খেই হারিয়ে ফেলা বাবার, বিড় বিড় ঠোঁটে ‘মঙ্গলে শুভ বুধে পা .....
আশাচার্য প্রতিধ্বনিতে আষাঢ়ের ক্যানভাসে টুকরো টুকরো রঙ বে রঙের কোলাজ । কোলাজে উঁকি দেয়, বনেদিয়ানার চুনোট ধুতি আর মুগার পাঞ্জাবীতে অত্যাশ্চার্য খুব চেনা আবার অচেনা এক পুরুষ। যেমন আভিজাত্য, তেমন তার দুত্যি। দৃষ্টি প্রদানে সু’দর্শনে স্বপ্ন সাধ্যে সৌম্য। পান পাতার আড়াল গলিয়ে ক্রিয়া উপক্রিয়ার সমাপনে সনাতনী বন্ধন।
আশাচার্য প্রতিধ্বনিতে আষাঢ়ের ক্যানভাসে টুকরো টুকরো রঙ বে রঙের কোলাজ । কোলাজে উঁকি দেয়, বনেদিয়ানার চুনোট ধুতি আর মুগার পাঞ্জাবীতে অত্যাশ্চার্য খুব চেনা আবার অচেনা এক পুরুষ। যেমন আভিজাত্য, তেমন তার দুত্যি। দৃষ্টি প্রদানে সু’দর্শনে স্বপ্ন সাধ্যে সৌম্য। পান পাতার আড়াল গলিয়ে ক্রিয়া উপক্রিয়ার সমাপনে সনাতনী বন্ধন।
এদিকে, দস্যি অনলে আকাশ জুড়ে তপ্ত সমুদ্র’র সঞ্চয়িত মেঘ। ক্লান্ত সূর্যের ঠোঁটে, বিনয়বনতঃ মেঘে’র শীতল আচ্ছাদন। এগিয়ে আসা আঁধারে মিলিয়ে যায় ছায়া , নিষ্প্রভে সখ্য’র যত কারুকলা । ওদিকে উঁকি দেয়া জানালায় ঝরা বৃষ্টি’ র মনোহর সন্ধ্যা , মেঘের সূর্য চুম্বনে।
মেঘেরা দুরন্ত হলেই এখন বুঝি , রোদ কেন নিষ্প্রভ হয়।
অঝোরে চোখ ভাসে বলেই বুঝি , আগুন বুকে চেপে রয় ।
জানালা গলিয়ে , মুখ ভার করা যতো অবাধ্য স্মৃতি। সদ্য ছেড়ে আসা ছোট্ট জনপদ থেকে উত্তর ছোঁয়া অধুনা কলকাতা। আলোর রোশনাই আর হৈ হৈ রবে পুরো দালান বাড়ি’ই যেন সজ্জিত পূর্ণ যুবক । সমবেত উলু’র ধ্বনি’তে , নব্য হাজারো আত্মীয়। শ্লথ হয়ে যাওয়া পদ যুগলের রাঙ্গানো চিহ্নে চিহ্নে , নমস্য মা’লক্ষ্মীর ছায়া । আহ্লাদিত মুখ , আহ্লাদিত বুক , গর্বের দালান জুড়ে ...।।
বৃষ্টির তোরে ঝাপসা হয়ে আসে চোখ । ভেজা শরীরে হা’করে থাকা বেদী’র গগন’মুখী তুলশী। ঝড়ো জলে মুখ থুবড়ে পরা সলতে’য় নিস্ক্রিয় দীপ। উঠোনের জমাট বাঁধা জলে এক এক করে মিলিয়ে যায় ভীর করা মুখ , ধারায় তলিয়ে যায় রোশনাই । বুক জাপটে ধরে কান্না ... আঁধার মানেই বুঝি , সয়ে যাওয়া নীরব আলিঙ্গন !
ঘুম হয় না। এমনি শুয়ে থাকি । ঘাটতি আয়রনে – নুয্য মেরুদন্ডে জড়িয়ে থাকি ঘরের ভেতর ঘর। নীরব চোখ শুধু চেয়ে থাকে সদর’মুখী ... দুর্গমে পাড়ি দেওয়া চাঁদ সওদাগরে ।
রাত এলেই..., বিদ্রুপে ফেটে পরে স্তব্ধতা । দুরন্ত চোখে, খুব কাছে অনি’র সাহসী শিল্পকলা ... তোমার মধ্যে অদ্ভুত কিছু আছে । মোর দ্যান আদারস। সামথিং বিয়ন্ড গ্রেস ! দ্যাট অ্যাট্রাক্টস মি আ লট ।।
.....দীর্ঘ কপালে লেপটে যাওয়া চন্দনে লুপ্ত হয়ে আসা পূর্ণ প্রায় একটি যুগ। ...... না আর আস্যাইমেন্ট নয় প্লাস্টারের ভেতরে যতই উকি দিক ইটের সারি ।
এই ভাবেই , রাতের বয়স হলেই চোখ জড়িয়ে যায় চাঁদ চোয়ানো গানে ... মায়াবী আলোয় আশাচার্য উদ্ভাসে শরীর মুড়ে যায় কুহুক আবরণে । রবি’র গুন গুনে; দূরে কোথায় ...... দূরে ... দূরে , আমার মন বেড়ায় ... ঘুরে ঘুরে ।
উত্তরবঙ্গ ।
প্রিয়দীপ
Reviewed by Pd
on
জুলাই ৩০, ২০১৩
Rating:
Reviewed by Pd
on
জুলাই ৩০, ২০১৩
Rating:

অপূর্ব লেখা ----- দুর্দান্ত ।
উত্তরমুছুনমনে হয় যেন কোনো গল্পের শুরু এই গদ্য কবিতায় ------
ঠিক বলেছেন । গল্প । কূল কূল বয়ে যাওয়া জীবনের গল্প । কখনো উদয় কখনো অস্তে ...।
মুছুনধন্যবাদ সুহৃদ । পাশে থাকুন -
শব্দের মিছিলের এবারের সংখ্যা যেন ভেবেই করা , হৃদয়কে তোলপাড় করা ।
উত্তরমুছুনভাষা জ্ঞান হারিয়ে যায় এমন কিছু লেখায় নিজেকে ডুবিয়ে দিলে - বাকরুদ্ধ আমি .. দিনগুলি যেন চোখের সামনে ।
একটি সমূহ জীবন , তার ঘটনার আলেখ্য - সেই থেকেই কিছু শব্দের দৌর শব্দ নাট্যে ।
মুছুনধন্যবাদ দিদি , সময় নিয়ে পড়ার জন্য ।
খুব সুন্দর...
উত্তরমুছুনহার্দিক শুভেচ্ছা সু'হৃদ।
মুছুনদম বন্ধ করে পড়ে গেলাম ... বড়ই অদ্ভুত প্রিয়দীপ আপনার লেখনী । বুক জুড়ে শুন্যতা অনুভব করছি । এমন করেই লিখুন ...
উত্তরমুছুনআসলে বুক থেকেই তো ওঠা নামা স্পন্দনের - জীবনের । শুন্যতা আবার পূর্ণতা সেখানেই ব্যাপ্তি । ভালো লাগলো আপনার উপস্থিতি ।
মুছুনমন উদাস হয়ে যায় এরকম লেখা পড়লে , অপূর্ব লেখনী ।
উত্তরমুছুনমন এবং প্রানের সন্মিলিত কিছু উৎকণ্ঠা , কিছু আবেগ , কিছু পাওয়া আর যত সামান্য কিছু চাওয়া - সব মিলিয়েই পরিক্রমা সাত পাকে --
মুছুনশুভেচ্ছা বন্ধু । পাশে থাকুন । ভালো থাকুন ।
জীবন ও জীবনের মর্মবোধের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিলো,কবি আপনার সৃষ্টিশীলতা !
উত্তরমুছুনবিস্ময়কর লেখনী প্রভিতা !
ঐ যে জীবন মানেই তো আর জী বাংলা নয় , জীবন অতি বাস্তব । আর এই বাস্তবের সাথেই কূল কূল বয়ে যাওরা নীরব নদীর ধারা , কখনো বর্ষায় , কখনো খরায় আবার কখনো মেঘের গর্জনে মিলিত মোহনা ।
মুছুনপ্রীতি সম্ভাষণ কবি । পাশে থাকুন অনন্ত পরিক্রমায় ।
সত্যি' ই দুর্দান্ত । জবাব নেই ।
উত্তরমুছুন