" ধন-ধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা
তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা
ও'সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা "।।
স্মৃতির মিনারে দাড়িয়ে থাকা আত্মবিশ্বাসের মাঝে বাংলার বিজয়। বাংলার বিজয় একাত্ত্বরের বীর-বীরঙ্গনাদের রক্তস্নাত ত্যাগের মহিমা মন্ডিত দৃষ্টান্ত। অগনিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের কালিতে লেখা নাম "বিজয়"। সন্তান হারা মায়ের আহাজারিতে রঞ্জিত উপমায় সাজানো স্বভূমি স্বীকৃত।
আজ সময়ের কাটা ঘুরে এসেছে বহু পথ, ইতিহাস হয়ে ফিরে আসে বিজয় বারে বার, হারানো প্রাণের আকুতিতে সুরে সুরে আলোচনার আলোকপাতে বিশেষ দিনে এই দিন। কথা ছিল স্বাধীনতা অর্জনে নিজ অধিকারের বোলনে জাতি বোলবে স্বাধীকারের বুলি, রক্ত প্লাবনের পরে মুক্ত হবে স্ব-ভূমি, নিঃশ্বাস নেবে পরিশ্রান্ত কৃষক শুদ্ধ বায়ুতে। আগামী প্রজন্ম দেবে সুনীল-সুশীল দেশ, নদীর বুকে উচ্ছ্বাস ছড়াবে কবি কবিয়াল, বাঁশির সুরে মেঠো পথের দিক নির্দেশনাগুলো চিনিয়ে নেবে আঞ্চলিকতার পথ, বাউল চেতনাকে ঘিরে জেনে নেবে ইতিহাসের রক্তঝরা দিনের কথপোকথন। যা প্রজন্মের ছাপে রবে রূপকথার দানবের ভয়াল থাবা হতে অবমুক্তি। রাজপুত্র হবার সাধে বিভোর রবে স্বপ্ন পুরন শিশুটির বেড়ে ওঠা। ভাষার উন্নয়নে কলম অস্ত্রে চেতনার জাগরণে জেগে উঠবে অন্ধত্ব মোচনের প্রতিটি কলাম। বিপরীত দাবানল দাবাদহ দাপটে সত্যের কলম চলবে নিষ্ঠা বিকাশের দুর্দমনীয় কণ্টকাকীর্ণ পথ অতিক্রমে অবাক করে দেয়া ইতিহাস।
অথচ, রাহুর কালচক্রে ফায়দা লুটে স্বাধীনতার শ্লোগানে রত মুখ-মুখোশের অন্তরালে আজও হিংস্র কালো হাতছানি বারে বার রক্তিম সাজে সাজিয়ে তোলে বাংলার সবুজায়নের দৃশ্যপট ! তথাকথিত পাকিস্তানি হানাদার বর্গী সমতুল্যে নৈতিক মুল্যবোধের অবক্ষয়ে যুদ্ধের নিশানায় বর্গী।
বাংলার বিজয় আজও পারেনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে প্রাপ্তি, শাস্তির দ্বারে পৌঁছে দিতে ! আমরা যতই গাইনা কেন---
" এক নদী রক্ত পেরিয়ে বাংলার আকাশে রক্তিম সূর্য আনলে যারা-
তোমাদের এই ঋণ কোনদিন শোধ হবেনা "।।
যাদের ঋণ শোধ হওয়ার নয়, তাদের বিজয় রঞ্জিত শ্রদ্ধা জানাতে লৌকিকতায় পৌঁছে গেছে রক্তক্ষয়ী মিনার। আজ দেশ স্বাধীন স্বার্বভৌমত্ব পাবার পরে ইতিহাসের এই ধস কতটুকুই বা প্রশান্তি এনে দিয়েছে ? এই কি স্বাধীনতার দলিল দৃষ্টান্ত ! এর নাম কি স্বাধীনতা ?
বিজয়ের এই মাসে শব্দের জোরে কতটাই বা লিখব ইতিহাসের রক্তক্ষয়ী দিনের বিবরণ ? ঘুন ধরেছে মানবিকতায়, ঘুন ধরেছে চিন্তায়, চেতনায় ! সত্যের কলামে তুলে ধরবে এমন সাহসি কন্ঠ, কলম অস্ত্র লাশ হয়ে কবরে যাবার প্রস্তুতিতে বিজয় সনদে লিখে নেয় বাংলার নাম ! প্রাণের বাংলার রক্তে আজও মিশে আছে দেখ যুদ্ধাপরাধী'র নাম, বাংলার আকাশে, বাংলার রক্তে ধাবমান রয়েছে বর্গী ! এই কি আমাদের অর্জিত বিজয়, এটাই কি শহীদের রক্তের প্রতিদান ?
দিনে দিনে লালিত স্বত্তার শ্লোগানে নির্মিত শব্দের ধারাবাহিকতায় "শব্দের মিছিল"। ভাষার বহুমাত্রিক বৈচিত্রতায় শব্দের অবগুন্ঠনে প্রিয় ভাষাকে সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে সম্মিলিত কবি-পাঠক, লেখক, জনগোষ্ঠীর সমন্বয়ে আন্তরিকতার মুল্যায়ন দৃষ্টান্তে সমৃদ্ধতার ছাপ রেখে এগিয়ে যাবার প্রতিশ্রুতিতে শব্দের মিছিলের ধারাবাহিক আয়োজন। ভাষার ব্যবহার শব্দের সীমানায় মাত্রা বিকশিত হওয়ার লক্ষ্যে Internet এর কল্যাণে Social Network বিশ্বকে নিয়ে এসেছে নীবিড় নৈকট্যে। বিভিন্ন Blog পরিচিত করে দিচ্ছে সময়ের পাওয়ার আনন্দবার্তা যথারীতি মুল্যায়নে।
" আত্মার সান্নিধ্যে যারা " মুলত এই গ্রুপটির কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আত্মবিশ্বাসের মুলমন্ত্রে উজ্জিবীত হয়ে উপনীত হয়েছি সাহসিকতায় পথ চলার দৃষ্টান্তে। এখানেই পেয়েছি মুক্ত অনু-কবিতার পেজ। ছোট গল্প, প্রবন্ধ, প্রতিবেদন, কবিতা ও পাঠকের জন্য খোলা চিঠি এই বিভাগীয় অন্তর্ভূক্ততায় নিহিত। উদীয়মান লেখক-লেখিকাদের জন্যেও এখানে আছে বিশেষ পাতা।
বাংলা ভাষার উপযোগী উপস্থাপন সময় ও সামাজিকীকরণ প্রতিটি সচেতন সত্তার মনেরাখা আবশ্যক। বাংলা ভাষার সুন্দর ও শৃঙ্খলরূপ আছে, আছে ব্যাকরণ সমৃদ্ধ গঠনও। কোনটাই আমাদের সময়ের সাথে অনুপযোগী নয়, বাঙ্গালীর সংগ্রাম ও সাহসের রক্ত স্রোত যেভাবে এগিয়ে দিয়েছে, ভাষার চলনরূপ সেভাবে সমাজ ও রাষ্টীয় স্বীকৃতিতে "বাংলা" আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা হিসেবে আজ স্বীকৃত। বাংলা ভাষার শুদ্ধরূপ প্রবর্তক প্রদর্শনে বঙ্কিমচন্দ্র, রবী ঠাকুর, নজরুল ইসলাম শব্দের যাদুকরি উপমা রেখে গেছেন সময় সন্ধিক্ষনের গতিধারায়। ভাষা-ভাষী'র উন্নয়নে চলমান প্রেক্ষাপটের নৈকট্যতায় তারা নিজেদের সামিল করেছেন, আজ তাদের উপলব্দির ধারাবাহিকতা আমাদের চলমান সময়ে অনস্বীকার্য। বাংলা ভাষা-ভাষী'র মুল শেকড় প্রতিস্থাপনে তাদের জুড়ি মেলা ভার। বর্তমান সময়ে এসে অধুনা শব্দের মঞ্জুরিতে শাখা প্রশাখায় আমরা শব্দের বিস্মৃতি সংযোগে সাজাই, নিয়মের কলাম। সময়ের স্রোতে এসে তাদের ভাবছি, তাদের মত করে শব্দের বান ছুঁড়ে শব্দ তৈরিতে আমরা কতটা পারদর্শিতায় নিজেদের উপস্থাপন করতে পারবো ! আমাদের সংস্কৃতি তাতে কতটাই বা সমৃদ্ধ হবে ? বর্তমান সময়ের গতিশীলতায় পাঠ্য পুস্তকের ভাষায় রূপান্তরিত শিক্ষাঙ্গন কর্মধারায় শ্রবণ শক্তির রেশে বর্তমান প্রজন্মের কাছে আমাদের চলমান ভাষার রূপ-রূপায়ন গ্রহণ যোগ্যতার চাবি কাঠিতে। সুতরাং আমার মনে হয় দাদা ঠাকুরের পান্ডুলিপির উপরে মাথা না চাপড়িয়ে চলমান স্রোতে মুল ঠিক রেখে শাখা-প্রশাখায় সাঁতার কেটে কাব্য ভান্ডারে নিজেদের যোগ্যতায় চলমান হিসেব চুকিয়ে ভাষার উচ্চ শিখরে পৌছে যাওয়ার অঙ্গীকারে ভাষার রূপ-রূপায়ন সময়ের পথ'কে পৌছে দেবে নিজ গন্তব্যে। সময়ের প্রেক্ষাপট আগেও ছিল, আজকেও আছে। অধুনা বাংলার রূপায়ন চলমান গ্রহন যোগ্যতায় আগামী প্রজন্ম যেন অহংকারে বুক উচিয়ে বলতে পারে, "আমার বাংলা", বাংলা আমার'ই ভাষা।
বিবর্তন-বৈষম্যতার রূপায়নে 'বিজয়' হোক চেতনা বোধের দৃষ্টান্ত। সন্তান হারা মা, স্বামী হারা স্ত্রী, পিতা হারা সন্তান দেখে যাক রক্ত লেখা বাংলার বিজয় অঙ্গীকারের নিবন্ধিত দৃষ্টান্তের বিচার। সোনার বাংলা হোক লাখো শহীদের স্বপ্নের দেশ, "শব্দের মিছিলে'র" কেন্দ্রবিন্দুতে গড়া লেখক/লেখিকা, পাঠকদের প্রতি রইল কৃতজ্ঞতা, বাংলা ভাষা-ভাষী শব্দের দূরন্ততা'য় নতুনদের জন্য রইল বাংলা শব্দের চলমান স্বীকৃতির প্রেক্ষাপটে "আমার বাংলা"।
গভীর শ্রদ্ধা সেই সব শহীদদের, যাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের বিজয়, আজকের লাল সবুজের বাংলাদেশ। "শব্দের মিছিল" এর প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা, বিনম্র শ্রদ্ধা এর সকল পৃষ্ঠপোষকদের। প্রাণপ্রিয় পাঠকদের ভালোবাসায় মুখরিত হোক শব্দের আঙ্গিনা। বাংলা ভাষা সাহিত্য রঙ ছড়াক নিত্য নৈমত্ত্বিক ধারার ধারবাহিকতায়। সবার জন্য বিজয় উল্লোসিত উল্লাসের শ্লোগানে --"বিজয় শুভেচ্ছা ও সাধুবাদ" ।।
চট্টগ্রাম , বাংলাদেশ ।
2 মন্তব্যসমূহ
এক কথায় অপূর্ব সম্পাদকীয় । সেই সঙ্গে শব্দের মিছিলের সার্বিক অগ্রসর । দুর্দান্ত ব্লগ এবারে । বিজয়ের এই শুভ লগ্নে দেশ বন্দনায় সকল শহীদদের প্রতি আমার প্রনাম । সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অগ্রণী ভুমিকার জন্য প্রতিটি মানুষের প্রতি আমার শ্রদ্ধা । শুভেচ্ছা অতিথি সম্পাদক , মৌসুমি সেন কে তার সুন্দর লেখার প্রেক্ষাপটের জন্য ।
উত্তরমুছুনগভীর শ্রদ্ধা সেই সব শহীদদের, যাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের বিজয়, আজকের লাল সবুজের বাংলাদেশ।
উত্তরমুছুনসুচিন্তিত মতামত দিন