শনিরবচন | গণতন্ত্রে পেগাসাসের সংক্রমণ

Michil মিছিল

প্রশ্ন এটা নয়। কত কোটি টাকায় কেনা হয়েছিল পেগাসাস। প্রশ্ন এটিও নয়। বছর বছর কতো কোটি টাকায় পেগাসাস ব্যবহারের ভ্যালিডিটি নতুন করে নবীকরণ করা চলছিল। নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে প্রকাশ। ৩০০ কোটি টাকায় এটি কেনা হয় ২০১৭ সালে। কিন্তু এই ধরণের হাইটেক সাইবার স্পাই এপ্লিকেশন একবার কিনে নিলেই হয় না। নিত্য নতুন আপডেশানের প্রয়োজন হয়। আর তার জন্যেই নিয়মিত ভাবে সেই আপডেশনগুলিও কিনে এপ্লিকেশনের ভ্যালিডিটি বজায় রাখতে হয়। অর্থাৎ বিষয়টি অত্যন্ত ব্যায়বহুল একটি প্রক্রিয়া। কিন্তু প্রশ্ন সেখানেও নয়। প্রশ্ন হলো জনগণের করের টাকা এইভাবে নয়ছয় করার সাংবিধানিক অধিকারের বৈধতা নিয়েই। সংবিধান কি জনগণের করের টাকাতেই জনগণের উপরে এইভাবে নজরদারী চালানোর বৈধতা দেয়? এটা ঠিক। সেই উত্তর সাধারণ জনগণের হাতে থাকে না। সংবিধান বিশেষজ্ঞরাই তার সঠিক উত্তর দেওয়ার অধিকারী। এখন যে সংবিধান গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ। সেই সংবিধানই নিশ্চয় সেই গণতন্ত্রের মারণাস্ত্র হতে পারে না। এটি অনুধাবনের জন্য সংবিধান বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার হয় না নিশ্চয়ই। আমরা সকলেই জানি ভারতীয় সংবিধানই ভারতবর্ষের গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ। এখন সেই রক্ষাকবচ থাকতে গণতন্ত্রের হত্যাযজ্ঞে বিশেষ কোন অস্ত্রের ব্যবহার হতে থাকে কি করে? প্রশ্ন সেইখানে। এখন আমাদেরকে দেখতে হবে পেগাসাস কিভাবে ভারতীয় গণতন্ত্রের হত্যাযজ্ঞে ব্যবহৃত হতে পারে। বা ব্যবহৃত হয়েছে। যদি তা হয়ে থাকে। এবং সেই হত্যাযজ্ঞকে যদি এখনো বন্ধ করা না যায়। তবে সেই দায় কিন্তু সংবিধানেরও।

খবরে প্রকাশিত সকল ঘটনাবলীর দিকে দৃষ্টি রাখলে। এটা পরিস্কার। পেগাসাস ব্যবহার করে বহু বিশিষ্ট মানুষের ফোনে আড়ি পাতার কাজ চলেছিল। সম্ভবত বছরের পর বছর। এখন এই স্পাই ওয়্যার কেনার সময় সেই ২০১৭ সালের পর থেকে ভারতীয় রাজনীতির গতি প্রকৃতির দিকে লক্ষ্য রাখলেই দেখা যাবে। কিভাবে দেশের গণতন্ত্রকে দিনে দিনে দুর্বল করে তোলার কাজ সচল রয়েছে। ২০১৪ সালেই পদ্মশিবির দেশের ক্ষমতা দখল করে নিয়ে কংগ্রেস মুক্ত ভারতের ঘোষণা দিয়েছিল। আর ২০২২ সালে এসে দেখা যাচ্ছে সেই ঘোষণা কতখানি বাস্তব হয়ে উঠেছে্। নির্বাচনের পর নির্বাচনে কংগ্রেসের কাছে হেরে গিয়েও একের পর এক রাজ্যে ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে পদ্মশিবির। এবং ২০১৭ সালের পর থেকে সেই সকল রাজ্যেও তারা একটানা পাঁচ বছর শাসনক্ষমতা দখলে রাখতে পেরেছে। এই ঘটনা সকলের চোখের সামনেই ঘটেছে। এবং এই একই সময় সীমায়। বহু রাজ্যেই নির্বাচিত বিধায়কদের একটা বড়ো অংশই দল বদল করে পদ্মশিবিরে যোগ দিয়েছে। এই ঘটনা শুধুমাত্র কংগ্রেসের ক্ষেত্রেই ঘটেনি। প্রায় সব দল থেকেই বিধায়ক সাংসদ ভাঙানোর খেলা চলেছে একটানা ভাবে। ফলে শুধুমাত্র কংগ্রেস মুক্ত ভারত নয়। বিরোধী মুক্ত ভারত গড়ার দিকে পা বাড়িয়েছে পদ্মশিবির। এখন একের পর এক নির্বাচনের আগে এবং পড়ে কংগ্রেস সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলির নির্বাচিত বিধায়ক সাংসদ মন্ত্রীদেরকে যদি পদ্মশিবিরে ভাঙিয়ে নিয়ে আসা যায়। একমাত্র তবেই কংগ্রেসমুক্ত ভারত এবং পরে বিরোধীমুক্ত ভারত গড়ার স্বপ্ন সফল হতে পারে। এখন কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি ভাঙানোর এই খেলায় কোন কোন অস্ত্র ব্যবহৃত হতে পারে? এক নম্বর অস্ত্র সিবিআই সহ অন্যান্য সরকারী তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী নেতা মন্ত্রীদের ভাঙিয়ে আনা। এটি বহুব্যবহৃত অস্ত্র। দ্বিতীয়ত অস্ত্র সুটকেস ভর্তি টাকার হাতবদলে সাংসদ বিধায়ক কেনা। এটিও বহু পুরানো অস্ত্র। কিন্তু সকলেই যে এই দুটি অস্ত্রে ঘায়েল হবে। তেমনটি নাও হতে পারে। তখন তৃতীয় একটি সর্বাধুনিক অস্ত্র কাজে লাগানো যেতেই পারে। একেবারে বেডরুমের গোপন নথী অব্দি হাতিয়ে নিয়ে নেতামন্ত্রীদের ব্ল্যাকমেল করে নিজের দলে নিয়ে আসা। আর নয়তো তাদের নিশ্চুপ করে বসিয়ে রাখা। বিরোধী রাজনীতির পরিসরে। এমন অনেক পদ্মশিবির বিরোধী রাজনৈতিক নেতানেত্রী রয়েছেন। যাঁরা কার্যত স্পিকটিনট। কি তাঁদের নীরবতার আসল কারণ। সোটি না জানা গেলেও। পেগাসাসের পর্দা ফাঁস হওয়ায় অনুমান করে নিতে কষ্ট হওয়ার কথাও নয়। একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সিবিআই, সুটকেস ভর্তি টাকা আর পেগাসাস এর মতোন ব্ল্যাকমেল করার অস্ত্র হাতে থাকলে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় কাঠামো দুর্বল হয়ে কালক্রমে অবলুপ্ত হতে বাধ্য। 
অনেকেই বলবেন। কেন আমাদের দেশে এখনো ভোটাধিকার চালু রয়েছে। আমরা তো ইচ্ছে করলেই ভোট দিয়ে সরকার ফেলে দিতে পারি। কিন্তু তাই কি? একটার পর একটা রাজ্যে বিগত পাঁচ সাত বছরে আমরা কি এই ঘটনার উল্টো চিত্রও দেখতে পাই নি? নির্বাচনে পরাজিত হয়েও একটি দল কিভাবে শাসনক্ষমতা দখল করে পাঁচ বছর রাজত্ব চালিয়ে গিয়েছে। 
আমাদের চোখের সামনেই তো ঘটেছে। ঘটনাগুলি। ফলে জনসাধারণ কোন দলকে নির্বাচনে জয়ী করলো আর কোন দলকে পরাজিত করলো। তার উপরে নির্ভর করেই আর সরকার গঠন হচ্ছে না। সরকার গঠনে কেন্দ্রীয় ক্ষমতায় সিবিআই লেলিয়ে দেওয়া। সুটকেস ভর্তি টাকার হাতবদল। এবং পেগাসাসের মতো ফোনে আড়ি পাতার ব্ল্যাকমেল করার অস্ত্র ব্যবহারই কি শেষমেশ নির্ণায়ক ভুমিকা নিচ্ছে না? অনেক সময়েই।

ফলে এটা ঘটনা। একদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ তদন্তকারী সংস্থাগুলি। একদিকে সুটকেস ভর্তি কালো টাকা। আর ব্রহ্মাস্ত্র স্বরূপ পেগাসাস। এই তিন ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বরের ব্যবহারে প্রথমে কংগ্রেসমুক্ত ভারত। পরে সেই পথে বিরোধীমুক্ত ভারত গড়ে তোলার কাজ এগিয়ে চলেছে। যেকোন দেশের গণতন্ত্রের পক্ষেই এই প্রবণতা এবং ঘটনা প্রবাহ অত্যন্ত বিপদজনক। এই পথের অন্তিম পরিণতি একটিই। স্বৈরতন্ত্রের উত্থান। আর এই স্বৈরতন্ত্রের উত্থানে প্রথম বলি হতে হয় সংবিধানকেই। সংবিধান যদি গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির অপব্যবহার। সুটকেস ভর্তি কালো টাকার আসাধু হাতবদল। এবং এই পেগাসাস ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেল করার কার্যক্রম বন্ধ করতে না পারে। তবে একদিন কিন্তু নিশ্চিত ভাবেই সংবিধানই বদলে দেওয়া হবে। সেদিন সংবিধান থাকলেও। তার গণতান্ত্রিক রক্ষাকবচের শক্তি থাকবে না। ফলে শুধুই দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা নয়। শুধুই নাগরিকের মৌলিক অধিকারের রক্ষাও নয়। নিতান্ত্ আত্মরক্ষার জন্যে হলেও সংবিধানের দায় রয়েছে। এই ত্র্যহস্পর্শের হাত থেকে আত্মরক্ষা করার।

খবরেই প্রকাশ। পেগাসাস কেবল মাত্র বিরোধী রাজনৈতিক নেতানেত্রীর মোবাইল ফোনেই গোপনে ইনস্টল করা হয়নি। সাংবাদিক থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ আমলা। উকিল থেকে শুরু করে বিচারক। কেউই এই শয়তানির শিকার হওয়া থেকে বাদ যায়নি। এখন প্রশ্ন। এঁদের ম‌োবাইলেও পেগাসাস ঢুকিয়ে মোবাইল হ্যাক করা হয়েছে কেন? এঁরা তো আর নির্বাচনী রাজীনীতির প্রতিপক্ষ নন। ঠিক কথা। আর এইখানেই গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড়ো বিপদ। গণতন্ত্রের মৌলিক চরিত্র নির্বাচনের দাঁড়ানো রাজনৈতিক দলের উপরে নির্ভরশীল নয়। গণতন্ত্রের মৌলিক চরিত্র নির্ভর করে ব্যক্তি মানুষের মৌলিক অধিকারগুলির সংরক্ষণে। সেই কাজই যদি বাধাপ্রাপ্ত হতে শুরু করে দেয়। তখন গণতন্ত্রই বিপন্ন হয়ে ওঠে। এবং একদিন স্বৈরতন্ত্রের কাছে পরাভূত হয়। এখন গণতন্ত্রে ব্যক্তি মানুষের মৌলিক অধিকারগুলির সংরক্ষণের ব্যবস্থা কার কাছে থাকে? থাকে একমাত্র সংবিধানের কাছে। সেই সংবিধানকে ক্রিয়াশীল রাখে যারা তাঁরাই সাংবাদিক থেকে আমলা। উকিল থেকে বিচারক। সাংবাদিকতাকে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়। কারণ, গণতান্ত্রিক বিচ্যুতি ঘটা শুরু করলে। সাংবাদিকরাই সকলের প্রথমে সেই বিষয়ে সকলকে অবহিত করে থাকে। সেই সাংবাদিকদেরকেই যদি পেগাসাস ব্যবহার করে বোতলবন্দী করে ফেলা যায়। তবে সত্যকে ধামাচাপা দেওয়ার কাজগুলি অনেকটা পরিমাণেই সহজ হয়ে যায়। সরকার যাঁদের মাধ্যমে কাজ করে। প্রচলিত ভাষায় সেই আমলাদের উপরেই সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ থাকে সবচেয়ে বেশি। ফলে অধিকাংশ সময়েই সরকারের সব ধরণের অনৈতিক নির্দেশ আমলাদেরকেই মুখ বুজে সহ্য করতে হয়। এবং সেইগুলি সাধন করে সরকারের নেতামন্ত্রীদের গুডবুকে থাকতে হয়। ফলে তাদের নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি এমনিতেই সরকারের অর্থাৎ ক্ষমতাসীন শাসকদলের হাতে থাকে। কিন্তু তারপরেও সাবধানের মার নেই। অনৈতিক কার্যকলাপ যদি মানবতা বিরোধী জঘন্যতম অপরাধমূলক হয়। তবে চাকুরীর মোহ ত্যাগ করে অনেক আমলাই সেই কার্য করতে অস্বীকার করে পদত্যাগও করতে পারেন। এবং শাসকদলের ঘৃণ্য চক্রান্তও বাইরে ফাঁস করে দিতে পারেন। সিবিআই বা সুটকেস সেই ক্ষেত্রে কোনই কাজে আসার কথা নয়। আর সেখানেই পেগাসাসের গুরুত্ব। কারণ পেগাসাসের দৌড় মানুষের গোপনতম স্থল অব্দি। ফলে কাউকে ব্ল্যাকমেল করার এমন অব্যর্থ অস্ত্রে অধিকাংশ মানুষই ঘায়েল হতে বাধ্য। সেক্ষেত্রে জঘন্যতম অপরাধ ঘটিয়েও নিশ্চিন্তে থাকতে পারে ক্ষমতাসীন শাসকদলের রথী এবং মহারথীরা। আর সেখান থেকেই স্বৈরতান্ত্রিক শক্তির উত্থান সহজ এবং অনিবার্য। গণতন্ত্রের হত্যায় তখন শুধু বাকি থাকে কফিনে পেরেক পোঁতার কাজ।

গণতন্ত্রের কফিনে পেরেক পোঁতার জন্যে তখন দরকার শুধু উকিল আর বিচারক। সংবিধানের বিধানে গণতন্ত্রকে রক্ষার শেষ দায় যাঁদের উপরে ন্যাস্ত থাকে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্টীয় কাঠামোয়। সেই উকিল এবং বিচারকদের মোবাইলেও যদি পেগাসাস ঢুকিয়ে দিয়ে ব্ল্যাকমেল করার খেলা চলতে থাকে। তবে গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক পুঁততে খুব একটা বেশি দেরি হওয়ার কথাও নয়। বিগত পাঁচ বছরে ভারতবর্ষে সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের বহু রায়েই কিন্তু সাংবিধানিক প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। নিম্ন আদালতগুলির কথা না হয় উহ্যই রাখা গেল। তার সাথে দিনের পর দিন গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক মামলাগুলিকে বছরের পর বছর ফেলা রাখার বিষয়টিও ভুলে যাওয়ার কথা নয়। না, শুধুই এঁরাও নন। পুলিশ থেকে মিলিটারী। এমনকি শাসকদলের নেতামন্ত্রী। যে কারুর মোবাইলেই পেগাসাস কাজ করতে শুরু করে দিতে পারে। যখন এবং তখন। মানবাধিকার কমিশন থেকে শুরু করে বহু সংস্থার পদাধীকারীদেরকেও এই একই ভাবে জব্দ করে নিস্তব্ধ করে রাখা সম্ভব। ফলে এটা প্রমাণিত। যাঁদেরকে সিবিআই লেলিয়ে দিয়ে। কিংবা সুটেকেসের লোভ দেখিয়ে কব্জা করা সম্ভব নয়। কব্জা করা যায় না। তাঁদেরকেও পেগাসাস দিয়ে কব্জা করা সম্ভব। আর শুধুই কব্জা করাও নয়। শাসকদলের স্বার্থ বিরোধী। সরকারের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরোধী। যাবতীয় ব্যক্তি এবং সংস্থার সকল গতিবিধি, কর্ম পরিকল্পনার আগাম হদিশ হাতের মুঠোয় থাকলে। নানান উপায়ে তখন তাঁদের পরিকল্পনা ও কর্ম প্রয়াসকে বানচাল করে দেওয়া মাখনের ভিতরে ছুরি চালানোর মত‌োন সহজ। অর্থাৎ শুধুই কংগ্রেসমুক্ত ভারত নয়। শুধুই বিরোধীদলমুক্ত ভারত নয়। সচেতন নাগরিকমুক্ত ভারত গঠনেও পেগাসাসের অপরিহার্য্যতা প্রশ্নাতীত। এবং গণতন্ত্রের সকল কন্ঠকে গলাটিপে কন্ঠরুদ্ধ করে রাখতে এমনই একটি ব্রহ্মাস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যেকোন স্বৈরতান্ত্রিক শক্তির কাছেই আলাদীনের প্রদীপ হাতে পাওয়ার মতোন ব্যাপার। ফলে সেই রকম একটি ব্রহ্মাস্ত্র হাতছাড়া করতে রাজি হওয়ার কথাও নয়। বর্তমান শাসকদলের। এখন প্রশ্ন একটাই। যুদ্ধটা এখন সামনা সামনি। সমানে সমানে না হলেও। এই সামনা সামনি যুদ্ধে কোন পক্ষ বিজয়ী হয়। তার উপরেই নির্ভর করছে ভারতবর্ষের গণতন্ত্র। এবং তার সাংবিধানিক রক্ষকবচ স্বরূপ ভারতীয় সংবিধানের ভাগ্য। ফলে এরই সাথে জুড়ে রয়েছে আরও বড়ো একটি প্রশ্ন। ভারতীয় নাগরিক সমাজের অধিকাংশ, আসন্ন এই যুদ্ধে কোন পক্ষে অবস্থান করবে। শক্তির ভারসাম্য নির্ভর করবে তার উপরেই। কিন্তু সেই বিষয়টিও নির্ভর করছে। নাগরিক সমাজের বড়ো অংশ কত দ্রুত সঠিক পক্ষ বেছে নেবে তার উপরেই। পক্ষ নির্বাচনে অতিরিক্ত দেরি হয়ে গেলে। হয়তো গণতন্ত্রের কফিনে সেই সর্বশেষ পেরেক পোঁতার পর্বও সমাপ্ত হয়ে যাবে। তখন কিন্তু দুইবেলা প্রতি মিনিটে কপাল চাপড়ালেও ভারতীয় সংবিধান রক্ষা করতে ছুটে আসবে না। কারণ সেই ক্ষমতাই তখন অবশিষ্ট থাকবে না আর তার।




৪ঠা ফেব্রুয়ারী’ ২০২২
কপিরাইট সংরক্ষিত

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ