বিস্তর থুথু করা হচ্ছে আয়ুর্বেদ ,হোমিওপ্যাথদের এমরজেন্সি পারপাসে কিছু অ্যালোপ্যাথিক ড্রাগস ব্যবহার করতে দেওয়ার ছাড়পত্রে । কিছু হোমিওপ্যাথ জাত গেল ...জাত গেল রবে গলা ফাটাচ্ছেন আর কিছু অ্যালোপ্যাথ একচেটিয়া সিংহাসন দুলে যাওয়ার ভয়ে চেঁচাচ্ছেন ।
না না না ,কাইন্ডলি রুগী মরে যাওয়ার যুক্তিটা দেবেননা প্লিজ । বহু শিক্ষিত ডিগ্রিধারী ডাক্তারও রুগী মারেন । প্রত্যক্ষ ,পরোক্ষ দুভাবেই মারেন । শুধু ভুয়ো ডাক্তার মারলে গণরোষটা বেশি হাওয়া পায় আর অন্যেরা মারলে একটু কম । কাক কাকের মাংস খায়না সেই থিয়োরী থেকেই নামটা বলবোনা ,একটা রিসেন্ট ঘটনা শেয়ার করি ...একটি বিখ্যাত নার্সিংহোমে একজন বিখ্যাত ডাক্তারবাবু ,আমারি শহরের একজন রেনাল ফেলিয়র রুগীর হার্টের ট্রিটমেন্ট করেছেন ।পেশেন্ট পার্টির দুলাখ টাকা জলে গেছে । রুগীর অবস্থা খারাপ । পেশেন্টকে ভুবনেশ্বর নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।এবং সেখানে রুগীটির ডায়ালিসিস চলছে । রুগীর বাড়ির লোক এখন রুগীকে নিয়ে লড়ছে ডাক্তার পেটানোর টাইম ইত্যাদি নেই ।
জানি অনেকগুলো বিতর্ক উঠবে । নাহ আমি অ্যালোপ্যাথ বিদ্বেষী নই । আমি ডাক্তার পেটানোর স্বপক্ষে নই । আমি ভুয়ো ডাক্তারের সমব্যথী নই । আমি শুধু কয়েকটা বাস্তব কথা বলতে চাই । কয়েকবছর প্রত্যন্ত গ্রামে চাকরি করার দরুণ আমি জানি হাতুড়ে ডাক্তাররা গ্রামের লোকদের কতখানি ইশ্বর । মশাই লোকসংখ্যা বাড়ছে ।রোগ বাড়ছে । সুতরাং ডাক্তারের চাহিদাও বাড়বে ।সিম্পল ব্যপার । চাহিদা অনুযায়ী যোগান না পেলে মানুষ সস্তা সহজলভ্য বস্তুর দিকে দৌড়বেই । কোন পুলিশ ,সরকার ,মোক্তার আটকাতে পারবেনা । হাতুড়ে ডাক্তার , সাব সেন্টারের জি .এন .এম /এ .এন .এম দিদি ,ছোট্ট অপরিষ্কার ব্লক হাসপাতাল গরীব রুগীগুলোর কতখানি বড় ভরসা তা আপনারা জানেননা হয়তো । ওদের মেডিসিন চাই ।চাই ডাক্তার নতুবা কিছু ট্রেনড মেডিক্যাল পারসন (ডাক্তার বা নার্স বাদেও ) । ছোটখাটো রোগগুলো অনায়াসেই যাতে সারিয়ে ফেলা যায় ।অথবা দুর্যোগের রাতে যেন প্রাণটা অন্তত বাঁচে ।
ডিগ্রি ,প্যাথি , ভুয়ো ,শিক্ষিত ....সব শব্দগুলোই অর্থহীন যদিনা রুগী দেবতা থাকেন । আগে রুগী সেরে যাক্ ।সুস্থ হোক তারপর কথা হবে কে সারালো এবং কিভাবে সারালো । মুন্নাভাই সিনেমাটার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে ! ফরম ভরনা জরুরি হ্য় ক্যায়া !! হাহাহা !হাস্যকর !হাস্যকর এই বুদ্ধিজীবী সমাজ ।
প্যাথি নিয়ে লড়ছ ? মেডিসিন নিয়ে লড়ছ ? বলছ বাঁদরের হাতে তলোয়ারের মতো অবস্থা দাঁড়াবে ?!
. .......আমি বলছি বেশ হবে । নয় ভুল হাতেই তলোয়ার যাবে ।তবুও তলোয়ারটা হাতে তো রইবে । মৃত্যুরত রুগীর জন্যে একটা চেষ্টা তো করা যাবে । একেবারে হাত পা কাটা হয়ে বড় ডাক্তারবাবুর অপেক্ষায় প্রাণটা তো বেরিয়ে যাবেনা ! প্রত্যেকটি কাজেরই কিছু বাজে প্রতিক্রিয়া থাকে । সবক্ষেত্রেই থাকে ।এক্ষেত্রেও থাকবে । ভুল মেডিকেশন হতে পারে ।রুগীর ক্ষতি হতে পারে হয়তো । কিন্তু সবটাই হয়তো । এই এত লক্ষ কোটির দরিদ্র দেশে সস্তার ডাক্তার দরকার ভাই । শৌখিন চেম্বার ,সুসজ্জিত ডাক্তার , উঁচু ভিজিট ,দুর্দান্ত দেমাকি লোকজনের পাশাপাশি এনারাও থাকুন ।যদি কয়েকটা অসহায় লোকের উপকার হয় ।
জানি বলবেন মেরিটের ব্যপার । আমি বিনীতভাবে বলব প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন বা পোস্ট গ্রাজুয়েশন সেরে যারা চুপচাপ কাজে লেগে পড়লেন তাদেরও তো মেরিটের খোঁজখবর নেওয়াই যায় । বন্ধও করা যায় মেধাবিক্রির ব্যবসা ।
কিন্তু সমস্যা হলো চাহিদা এবং স্বল্প যোগান ! চাহিদা রইলেই যোগান আসবে ।
...........যাক্গে মূল জায়গা থেকে সরব না । কথা হলো সব প্যাথিরই একটা সীমাবদ্ধতা থাকে । কিছু রোগ ওঁরা পারেন আর কিছু আমরা ।আবার কিছু কেউই হয়তো পারিনা । বিষয়টা হলো সেটা মেনে নিননা প্লিজ । এবং যেহেতু সবাই সবটা পারিনা ....তাই সবাই মিলে যেভাবেই হোক রুগীর ভালোর কথা ভাবি বরং । সে না হয় আমি আপনাদের কিছু শিখলাম অথবা আপনারা আমাদের কিছুটা । মোদ্দা কথা রুগীর ভালো হোক ।ডাক্তার সহজলভ্য হোক ,মেডিসিনও । ট্রিটমেন্ট সহজ হোক । সে এমারজেন্সি ড্রাগ শিখেই হোক আর না শিখেই ।জোর তো কিছু নেই ।যার জাত যাওয়ার আতঙ্ক আছে সে ড্রাগগুলো অপ্ল্যাই করবেননা ,ব্যস্ মিটে গেল ।
আর বাকিরা ...ভয় পাবেননা ওই কটা মেডিসিনের জোরে খুব বেশি মানুষ মরবেননা ,বরং দেখুননা বাঁচার হারই বাড়বে হয়তো ।
0 মন্তব্যসমূহ
সুচিন্তিত মতামত দিন