সুশান্ত কুমার রায়

তপন রায়ঃ কবি থেকে ছবি নির্মাতা
তপন রায়। পেশায় পোস্ট মাস্টার। নেশা কবিতা। পরে রাজবংশী ভাষার একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। বাবা খোকারাম রায় এবং মা শৈলবালা রায়। তপন রায়ের ছোটবেলা থেকে নেশা কবিতা লেখা। কবিতা লেখার নেশা যেমন ছিলো তাঁর মধ্যে কিন্তু তার চেয়ে ঢের বেশি নেশা ছিলো সিনেমা দেখা। কবিতার পাশাপাশি একসময় হাতে নেন ক্যামেরা । ক্লিকেই ছবি তুলে ফেলেন। আবহমান গ্রামবাংলার বিভিন্ন নয়রাভিরাম দৃশ্য তিনি তাঁর ছোট ক্যামেরার কারসাজিতে তুলে সকলের নজর কাড়েন। তিনি তাঁর নিজ জন্মস্থান জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি থানার উত্তরগোঁসাইর হাট গ্রামে নিজের দোকানে বসে অবসর সময়ে ছড়া, কবিতা লেখেন। স্থানীয় কবি-লেখকদের এক জম জমাট আড্ডা বসে ধূপগুড়িতে। সেই আড্ডায় নিজেও সামিল হতেন অনেকটা কবিতা লেখার নেশায়। ওপার বাংলার জনপ্রিয় কবি পুন্ন্যশ্লোক দাশগুপ্তের আহ্বানে সেই সাহিত্য আড্ডা হতো সপ্তাহে একদিন। প্রতি রোববার। এজন্য সাহিত্য রসিকেরা নাম দেন রোববারের আড্ডা। সেই সাহিত্য আড্ডায় নিজের লেখা কবিতা পাঠ এবং অন্যদের কবিতা শোনার পাশাপাশি গুণিজনদের সান্নিধ্য পাবার আশা। তবে বড় কোন লেখক বা কবি হবার প্রত্যাশায় নয়। এখনো তিনি সেটা করেন। তবে ছোটবেলা থেকে সিনেমার পরিচালক হওয়ার ইচ্ছে ছিলো তাঁর। বাবা যাত্রাপালা করতেন। বাবা ছিলেন একজন যাত্রাশিল্পী। বাবাকে দেখে এপথে আসার অনুপ্রেরণা পান। 

কবি থেকে ছবি কি দারুণ ব্যাপার ! এক অন্য রকম ভাবনা ও অনুভুতি বলা যায়। কবিতা থেকে একসময় সিনেমা নিমার্ণের কথা তাঁর মাথায় ভর করলো। সিনেমা কিভাবে তৈরি হয় ? কোথায় তৈরি হয় ? কারা তৈরি করেন ? আমার মায়ের ভাষায় (রাজবংশী ভাষা) যে গান আছে, সেই ভাষায় সেই গানে কি সিনেমা হতে পারে না ? আমার নিজের ভাষার গান কী সিনেমায় শোনা যাবে না ? এসব নানা প্রশ্ন তাড়া করে । প্রসঙ্গত এসব ভাবনার উদ্রেক হওয়ার কারণেই সিনেমা সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করতে লাগলেন। সেই সাথে সিনেমার সঙ্গে যাঁরা জড়িত তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করতে লাগলেন। তিনি মনে মনে ভাবলেন প্রথমে আমাকে কলকাতার কোন পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করে কোন ছবিতে প্রথমে অভিনয় করার সুযোগ গ্রহন করতে হবে। তাঁরপর সেখান থেকে সিনেমা নির্মাণের ধারণা আমাকে নিতে হবে। কারণ যেহেতু কলকাতায় সিনেমা তৈরি হয় আর আমাকে সেই সুযোগ তৈরি করে নিতে হবে । আর এরই ধারাবাহিকতায় একটি ছবির বিজ্ঞাপনের সূত্রে একজন পরিচালকের সাথে তাঁর পরিচয় ঘটে। পরিচালক জানালেন, তাঁরা ছবিটা উত্তরবঙ্গ এবং কলকাতার বুকে স্যুটিং করবেন। অভিনয় শিল্পী খুঁজছেন। ছবির পরিচালক আরো জানালেন- ছবিটি নির্মাণে আমাদের আর্থিক দৈন্যতা আছে। তপন রায়কে যেহেতু ছবি নির্মাণের নেশা কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিলো । আর তিনি মনে মনে ভাবলেন এ সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না। তপন রায় অভিনয়ের প্রস্তাব দেয়াতে পরিচালক দশ হাজার টাকা চেয়ে বসলেন। তখন তপন রায় নবম শ্রেণির ছাত্র। সেই সময়ে দশ হাজার টাকা যোগাড় করা প্রায় অসম্ভব ছিলো। আর টানাপোড়েনের সংসারে তাঁর বাবার ছোট্ট একটা চাকুরিতে সংসার চলতো। কিন্তু সিনেমার পরিচালকের কাছ থেকে অফার পেয়ে সিনেমার পাগলামিটা আরো বেশি মাথায় চেপে বসলো। সিনেমায় যাওয়ার পাগলামিটা বাবা খোকারাম বুঝতে পেরে ১৯৯০ সালে এক বিঘে জমি বিক্রি করে দিলেন। 

কারণ তিনি নিজেও একজন যাত্রাশিল্পী ছিলেন। এসবের কদর ও মর্যাদা শিল্পীরাই ভালো বুঝেন। সেই জমি বিক্রির টাকা নিয়ে কলকাতায় যান সিনেমাতে অভিনয় করার জন্য। কেউ কেউ সিনেমায় তপন রায়ের অভিনয় করার কথা শুনে উৎসাহ অনুপ্রেরণা দিতেন আবার অন্যদিকে অনেকে এটাকে বাপ-বেটার পাগলামি বলে হাস্য-কৌতুকে মেতে উঠতেন। উদ্দেশ্য সিনেমায় কাজ করা । সিনেমায় কাজ করতে গেলে স্টুডিওর পাশাপাশি থেকে কাজ করতে হবে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে থাকার জন্য তো পয়সার দরকার। তাই পাশাপাশি চাকুরি খুঁজতে লাগলেন। আমাকে কলকাতায় শিফ্ট হতে হবে যেভাবেই হোক। সেই উদ্দেশ্যেই কলকাতার পমপুকুরে একটি কোম্পানীতে দৈনিক পঁচিশ টাকা হাজিরায় গ্যারেজে মিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ নিলেন। লক্ষ্য সিনেমা । কিন্তু বেশ কিছুদিন কাজ করানোর পর এক সময় কোম্পানী তাঁদের কাজের স্বার্থে নদীয়ার হরিণঘাটায় ট্রান্সফার দিয়ে দেয়। যে উদ্দেশ্য নিয়ে কলকাতায় আসা সে আশায় গুড়েবালি। অন্য জায়গায় বদলীর কারণে চাকুরি থেকে ইস্তফা দিলেন। নিজের টাকা খরচ করে কলকাতায় দিনের পর দিন অবস্থান করাও তাঁর পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠলো। কিন্তু ছবিটি মাঝ পথে যাওয়ার পথে হঠাৎ একদিন শুনতে পেলেন পরিচালক উধাও। তিনি আরো জানতে পারলেন তিনি এভাবে ছবি শুরু করেন কিন্তু ছবি শেষ করেন না। তবে কলকাতায় অবস্থানকালীন সময়ে চিত্র জগতের বেশ কিছু লোকের সঙ্গে পরিচয় ঘটলো। কলকাতায় মনোজ মিত্র ও শ্রীলা মজুমদারের সাথে টেলিফ্লিমে কাজ করেন। কলকাতায় অবস্থানকালীন সময়ে বিখ্যাত সিনেমা পরিচালক মঙ্গল চক্রবর্তীর খুব কাছে থাকার সুযোগ পান। তপন রায় পরিচালক মঙ্গল চক্রবর্তীকে তাঁর মনের ইচ্ছা ও আকুতি জানিয়ে দেন। তিনি পরিচালক মঙ্গল চক্রবর্তীকে রাজবংশী ভাষায় (মায়ের ভাষায়) সিনেমা তৈরির তাঁর স্বপ্নের কথা বলেন। পরিচালক মঙ্গল চক্রবর্তী তাঁর সুচিন্তিত ভাবনার কথা অতি মনোযোগের সহিত শুনেন। কথা শুনে বলেন- কেন রাজবংশী ভাষায় সিনেমা করা যাবে না? অবশ্যই যাবে। তুমি চেষ্টা করো। কিন্তু সিনেমায় অর্থের কথা চিন্তা করে সেই স্বপ্ন আবারো ধূলোয় পর্যবসিত হয়। সিনেমা মানে তো অনেক টাকা পয়সার ব্যাপার। এতো টাকা আমি কোথায় পাবো? আর মনে মনে ভাবলেন- অনেক জায়গায় ঘুরেছি, অনেক চেষ্টা করলাম একবার তাঁর বাবার লেখা কাহিনী নিয়ে নির্মিত সিনেমা নয়নের কাজল এর জন্য বিজ্ঞাপনও দিলেন, অভিনেতা-অভিনেত্রী পেলেন কিন্তু টাকা প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাড়ালো। টাকার অভাবে সেটিও ভেস্তে গেলো। যখন কলকাতা থেকে ব্যর্থ ফলাফল নিয়ে গ্রামে ফিরে এসে আবারো পড়াশোনায় মনোযোগ দিলেন, কিন্তু পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে ফেল করে বসলেন। মনটা ভেঙ্গে গেলো কিন্তু কিছু তো একটা করতে হবে। ভাবতে লাগলেন।বাড়ির কাছে ওষুধের ডিসপেনসারী খুলে বসলেন। গ্রাম্য হাতুড়ে ডাক্তার। অনেকে ডাক্তার বাবু বলে ডাকতে লাগলেন।ছোট খাটো অসুখ-বিসুখে ওষুধ কিনতে আসে লোকজন। কিন্তু তাঁর মনের হৃদয় গহিনে সেই সিনেমার ভাবনা বার বার দোলা দিচ্ছিলো। আমার সেই স্বপ্ন কি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যাবে তাহলে ? না, এ হয় না। কেমন করে মেনে নেই। স্বপ্ন কি তাহলে স্বপ্নই থেকে যাবে ? আর মনে মনে ভাবলেন- সিনেমার কাজটা আর একবার শুরু করবেন। এরই মধ্যে হাতে কিছু অর্থ-কড়ি জমালেন। কিন্তু দোকান ছেড়ে ছেলের পুনরায় সিনেমা পাগলামির চিন্তা ভাবনা দেখে সংসারি করার অভিপ্রায়ে বাবা বিয়ে দিয়ে দিলেন। তাঁর বাবা ভাবলেন এবার তোমার নিস্তার নেই, ছেলে এখন বউ- সংসার নিয়ে থাকবে। কিন্তু হলো উল্টোটা। নতুন করে লেখালেখি শুরু করলেন । সাহিত্য আড্ডায় মেতে উঠলেন। আবার কবিতা হয়ে উঠলো তাঁর ঘর-সংসার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত ডাক পান রাজবংশী সাহিত্য উৎসবে । ২০০১ সালের জানুযারিতে ধূপগুড়ি বইমেলায় প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হলো। কোনো কোনো সাহিত্য প্রেমিকেরা তাঁর নামের সাথে কবি পদ মর্যাদা যুক্ত করে দিলেন। 

রাজবংশী ভাষায় সম্পাদনা করেন পত্রিকা উত্তুরাবাও। এরই মধ্যে জানতে পারলেন তাঁর এক বন্ধু সিনেমা তৈরি করছে। তাঁরই আহ্বানে ছুটে গেলেন স্যূটিং স্পটে। যেহেতু তাঁর কলকাতায় সিনেমা তৈরির একটা হালকা অভিজ্ঞতা আছে তাই তপন রায়কে চেপে ধরলেন ছবিটার ব্যাপারে সহায়তা করার জন্য । তাঁর বন্ধু বোম্বেতে কাজ করতো তাই ছবির এডিটিংটাও সেখানে করলেন, কিন্তু প্রচারের দ্বায়িত্ব বর্তে দিলেন তপন রায়ের উপর। কিন্তু ২০০২ সালে অভাগিনী কুসুম নামের সেই ছবিটি সেভাবে মার্কেট পেলো না বটে, কিন্তু একটা আন্দোলন গড়ে তুললো। রাজবংশী ভাষায় ছবি করাটা কঠিন হয়ে দাড়ালো। কিন্তু আর থেকে থাকলেন না, তাঁর বাবার লেখা কাহিনী নিয়ে নয়নের কাজল-এ আবার হাত দিলেন। এগিয়ে এলেন কলকাতার সিনেমা জগতের এক পরিচালক। কিছু মানুষ সিনেমা তৈরির জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন। ছবির নায়ক কুমার তপন খুঁজে বের করলেন এমন একজন মানুষকে যার সাহায্য ছাড়া নয়নের কাজল সিনেমা মুক্তির আলো পেতো না। শিলিগুড়ির খাপরাইল মোড়ের ওমপ্রকাশ প্রসাদ। নয়নের কাজল সিনেমার জন্য তিন লক্ষ টাকা দিলেন। ছবির কাজ শেষ হলো। শেষ পযর্ন্ত ছবিটি ২০০৬ সালে বের হলো। উত্তরবঙ্গের সবকটি সিনেমা হলে রাজবংশী ভাষার সিনেমা নয়নের কাজল দেখানো হলো। ২০০৬ সালে নির্মিত নয়নের কাজল গ্রাম বাংলায় ব্যাপক সাড়া জাগায়। এরই মধ্যে কিছু ছোট খাটো চিত্রনাট্য, শিক্ষা বিষয়ক কিছু টেলিফ্লিম তৈরি করলেন। শিক্ষা বিষয়ক টেলিফ্লিম দিশারী ২০০৭ সালে নির্মিত হয়। নিরক্ষরতা দূরীকরণ ও স্বাস্থ্য সচেতনতার উপর টেলিফ্লিমটি প্রশংসাধন্য হয়। প্রাক্তন বনমন্ত্রী তথা জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি বনমালী রায় দিশারীর শুভ উদ্বোধন করেন। ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত North Bengal Film Festival -এ তাঁর রাজবংশী ভাষার গানের অ্যালবাম মন ভুলানো কইন্যার একটি গান- হারেয়া গেইল মোর হালের নাঙ্গল বেস্ট মিউজিক ভিডিও পুরস্কারে ভূষিত হয়। ২০১০ সালে এইচআইভিএইডস (HIVAIDS) এর উপর টেলিফ্লিম নির্মাণ করেন ক্যানে অ্যামন হয়, শৌচাগার বিধির উপর স্বল্পদৈর্ঘ্যর ছবি কনেক ভুলের তানে ছবিটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশংসাধন্য হয়। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শিল্প নিগম দপ্তরের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও জলপাইগুড়ি জেলার প্রাক্তন জেলা প্রশাসক সুব্রত গুপ্ত তাঁর কাজের জন্য বিশেষভাবে প্রশংসা করেন। ভাওয়াইয়া গানের শিল্পী, গীতিকার ও সুরকার ধনেশ্বর রায় এর উপর দশটি গানের একটি অনন্য ভিডিও ডক্যুমেন্টারী করেন। প্রেম বড় ধন ধন বন্ধু রে- ভিডিও অ্যালবামটিতে দশজন বিশিষ্ট ব্যক্তির অভিমত রয়েছে স্বনামধন্য ভাওয়াইয়া শিল্পী ধনেশ্বর রায় সম্পর্কে। নর্থ ইস্ট সিনে ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নিবেদিত কবি ও পরিচালক তপন রায় এর কাহিনী, চিত্রনাট্য, চিত্রগ্রহন ও পরিচালনায় সর্বশেষ সুদীর্ঘ কয়েক বছর পর ২০১৬ সালে মুক্তি পায় পূর্ণদৈর্ঘ্য রাজবংশী ভাষার সিনোমা কায় ডন ?। সিকিম, দার্জিলিং, ভুটান ও ডুর্য়াসের নানা জায়গায় ছবিটির স্যূটিং হয়। ছবির নায়িকা বাংলা সিরিয়াল খ্যাত রোহিনী বোস। নায়ক ডুয়ার্সের ফালাটার যুবক প্রসেনজিৎ রায়। সংগীত পরিচালনা পরিমল বর্মন। রাজবংশী ভাষার সিনেমা জগতে এক অন্য রকম অ্যাকশন ছবি- কায় ডন ?। মনীষী ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার উপর একটি ডক্যুমেন্টারীর কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন বেশিরভাগ সময় রাজবংশী ভাষার ছবি এবং লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। স্ত্রী হিমানী রায়, বড় ছেলে ভাস্কর রায় এবং ছোট ছেলে ধ্রুবজ্যোতি রায়কে নিয়ে ছোট্ট সংসার। ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের একটি স্কুল সম্মাননা জানায় পরিচালক তপন রায়কে। যে স্কুল থেকে তিনি পরবর্তীতে মাধ্যমিক পাশ করেছেন। তিনি ভারত সরকারের অনুমোদিত সংগঠন ÒESTERN INDIA MOTION PICTURE DIRECTOR’S ASSOCIATION” এর সদস্য। এছাড়াও ÒBengal Film and Televisin Chamber of Commerce” এর একজন সদস্য। নিজের মায়ের ভাষা রাজবংশীতে সিনেমা করে নিজেকে অনেক গর্বিত মনে করেন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* মন্তব্য করতে পেজটি রিফ্রেশ করুন .