।এ।বি।এম।সো।হে।ল।র।শি।দ।

।এ।বি।এম।সো।হে।ল।র।শি।দ।


নৈঃশব্দ্যের জলছবি!

বন্দি ভাবনা গুলোর শেষকৃত্য সম্পন্ন
বরাবরের মত অতীত গড় হাজির
জীবনের পথে হাঁটতে গিয়ে দেখি
বোকাট্টা ঘুড়ির পিছনে রমণীর ছায়া!

দ্বিধার চৌকাঠ পেরিয়ে দু’পা এগুতেই
আটকে যাই ছায়া-কায়ার গহ্বরে
দেখি নির্জনবাসের অরণ্য প্রাসাদ
অস্তিত্বে শঙ্খ চিলের ধ্রুপদী মায়া!

দিনান্তে এক ছিলিম ভয়ার্ত বাতাস
সারা শরীরে বুনে সজারু কাটা
দুঃখঘামে আড়ষ্ট আঙ্গুলের প্রতিটি কড়ায়
নোনা রঙে আঁক ‘নৈঃশব্দ্যের জলছবি’!

আকাশের বুকে আকাশ! বাতাসের খুনসুটি
ঈশান কোনে সিঁদুরে মেঘ! হঠাৎ ঝড়
দুশ্চিন্তায় হুরহুরিতে বিশ্বাসের সামিয়ানা
পুরনো ক্ষতের ব্যথায় তোমার প্রতিচ্ছবি!

অরুণোদয়ের তেজস্ক্রিয়তায় বিধ্বস্ত সকাল
সময়ের কাছে ভাবনার নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ
অপেক্ষার কষাঘাতে নামে বৃষ্টি! ভেজায় দৃষ্টি!
প্রত্যাশার বাতিঘর ভাগ্যের হাতে বন্দি!



ষোলগুটি খেলা

খাঁদগহ্বরে পরিপূর্ণ চক্রাকারের জীবন
পুণ্যের-সাঁকো পারাপারের অবলম্বন
পরিশ্রমের দড়িতে বাঁধি ধৈর্যের খুঁটি
বধিরের চিত্রকল্প বিচ্ছেদের অণুগল্প!
.
দুটি মনের ব্যবচ্ছেদে ‘অশ্রুনদী’
চিন্তার ঝড়ে মুখ থুবরে পড়েছে নৌকো
রাতে জলের তলানিতে নামে ক্ষয়িষ্ণু চাঁদ
মৃদু ঢেউয়ে দেখি রূপালী উচ্ছ্বাস!
.
ফেরে চৈতন্য! বুঝি সঙ্গীহীন নই!
মস্তিষ্কে চেপে আছে বিরহের বোঝা
রাতের কালোতে জোনাকির মত
জ্বলে উঠে শত শত পুরনো ক্ষত!
.
বেয়ারা জ্যোৎস্নার নির্লজ্জ আলেয়া
নিষ্ঠুর অতীতের একাকীত্বের বিদ্রূপ
অবহেলায় দগ্ধ সঞ্চিত আবেগে
জোছনার সংঘাত; নির্ঘুম সারা রাত!
.
প্রতিটি প্রহর বৈষ্ণব  প্রেমে সজ্জিত
স্বপ্নভঙ্গের মন্ত্রে  রাধাকুঞ্জও শঙ্কিত
চামচিকা-ইঁদুর-বাদুর-পেঁচা-সরীসৃপ
শৃগাল ধূর্ততায়; গৃহত্যাগী লজ্জায় !
.
একমুখী পথে অবিরাম ছুটে দ্বিপদী
ফিরে তাকানোর নেই কোন জানালা
ব্যথার তাপে প্রকৃতির রূপ নিরুদ্দেশ
চাঁদোয়ায় জ্যোৎস্না-অমাবস্যা নিঃশেষ

চলছে ওয়াদা ভাঙ্গার অসম দৌড়
সুখের বসতি ভাঙে তাসেরঘর
বসুমতীর ছকে নিয়তির ষোলগুটি খেলা
সুন্দরের প্রতিযোগিতায় নিষ্ক্রিয় অবহেলা


মনে পড়ে যায়

পেন্ডুলামের মত দোলতে দোলতে
পার হয়ে যেতাম সময় নদীর স্রোত
তুচ্ছ কারণে মতের টানাপড়েন চললেও
সূর্য কথনে বিলিয়ে দিতাম সব রোদ।

সজল চোখের প্রার্থনায় ‘আত্মার সুর’
মেলে ধরে চরাচরে বন্দি দৃশ্যাবলী
আর্তনাদের কালিতে লিখি সংকল্প
বুকের প্রতিটি ভাজের বিপরীত গল্প!

অন্ধ নির্মাণ ছিল বলেই স্মৃতি জীবন্ত
হাজার দৃশ্যকল্পে সাজানো তাসের ঘরে
চষে বেড়ানো আঙ্গুলের শ্রম অর্থহীন?
তা কি করে হয়, একখণ্ড ধুসর বিনয়
একটি মুখরিত সন্ধ্যা চাওয়া খুব বেশী নয়।

বিষাদের পুটলিতে পাবে প্রণয় দলিল
প্রতিটি বাক্য একেকটি সোনার মোহর
বারান্দার দুষ্টুমি, গুজে দেয়া গোলাপে
ভেজা শরীরের গন্ধ, এখানেই লিপিবদ্ধ।

সোনালীবোধে এখনও ধরেনি লবণ
উইপোকা উৎসাহে কেটেছে চারিপাশ
তবু স্বীকারোক্তি শতভাগ অক্ষত।
পালাকরে জেগে উঠে বাসনাকুল
বিষের শূককীট এখন প্রজাপতি
মনে পড়ে বিদায়ীরাত অবিরত।


মেঘখামের দুঃখগুলো

প্রিয়তমাষু,
অনেকদিন পর হলেও জানতে চেয়েছ
কেমন আছি?
কি করে বলি
আগুন জ্বলে বুকের কাছাকাছি।

২২টা শীত ২১টা বসন্ত অপেক্ষার তরী
বেয়ে চলছি একাকী নিরবধি।
ঠিকানা পেলে কষ্টতুলিতে আঁকা জলছবি পাঠাব
আর অনীহার সবুজবৃক্ষে ঝরাফুলের সৌরভ মাখাবো।

পাখিদের পাখায় বাঁধতে চেয়েছিলাম নীল খাম
দু:খ ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারো ভেবে
খড়কুটোর মত উড়িয়ে দিয়েছে ব্যথারচিঠি;
সবুজ পল্লবে লিখতে চেয়েছি মুহূর্ত গুলো
ঝড়ের গল্প বলে ফিরিয়েছ সেই সব সম্প্রীতি!

বাইশটা শীত এমনি করে হয়েছি বিমুখ
জানো, আকাশটা রঙ বদলালেই ভয় হয়
এই বুঝি মেঘখামের দুঃখগুলো যাবে ঝরে
নদী হারাবে কল্লোল স্রোতের তোড়ে!

কবি হারাবে কবিতার অন্ত্যমিল, দৃশ্যকল্প
থেমে যাবে জ্যোৎস্না রাতের ‘আবৃত্তি আসর’
বাতাসে উড়ানো দুঃখগুলো
নোনা আর্দ্রতায় মুখথুবরে পড়েছে
ফিরিয়ে দিয়েছ সব স্থাবর অস্থাবর।

ইতি
জলছবি





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ