ইফতেখারুল হক



কোন কিছু ভাবতে গেলে আমাদের মন আশ্রয় নেয় তথ্য উপাত্ত, শুনা কথা, চোখে দেখার বিষয় ও বস্তু এবং আমাদের বিশ্বাসের কাছে । এইসবের উপর নির্ভর করেই ভাবনা ছুটে চলে গতি বাড়িয়ে । আমরা কোন কিছুর সিদ্ধান্তে উপনীত হই ভাবনার ফলাফল বেরিয়ে যাবার পরই । কিছু ভাবনা আছে নির্ভর করেনা এসবের উপর । ফলাফল যাই হোক ভাবতে থাকি আমরা মুহূর্তে মুহূর্তে, দিনের পর দিন । সেসব ভাবনার ফল অপ্রকাশিত থেকে যায় হয়তো, হয়তো দাবীও করেনা ফলাফলের । আমাদের স্বভাবের সাথে ভাবনার সম্পর্কটি সরাসরি । বেশ সখ্যতাও রয়েছে । ফলাফল যাই আসুক । ভাবনার ফল অনেক সময় মানুষের স্বভাব কিংবা আচরণগত দিক গুলোর উপর বেশ প্রভাব ফেলে; সেই থেকে ভাবনা নিজেকে এবং অন্যকে নিয়ন্ত্রণ করে ব্যক্তির এবং অন্যের ভেতরের ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে । আবার ভারসাম্য রক্ষাও করতে পারে সঠিক চিন্তা ভাবনার ফলে ।

অধিকাংশ ভাবনা যদিও মানুষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত তবুও কিছুকিছু বিষয় ভাববার পর তখন ভাবনা মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে । এর ফলে ব্যক্তিটি ও অপরের মানসিক পরিবর্তন ঘটতে পারে । এর ফলাফল সুদূর প্রসারী । ফলাফল প্রভাব বিস্তার করতে পারে ব্যক্তিটির নিজের ভেতর যেমন তেমনি অন্যের উপর; এমনকি সমাজ রাষ্ট্রের উপরও ।

আমরা কোনকিছু ভাবতে গেলে যখন নির্ভর করিনা সঠিক তথ্য উপাত্তের উপর,বিচার বিবেচনার উপর; ভাবি শুধুই বিশ্বাসের উপর নির্ভর করে এবং পেয়ে যাই ফলাফল নিজের মতো করে, মাঝে মাঝে প্ররোচিত হয়ে অন্যের দ্বারা কিংবা কোন গোষ্ঠীর দ্বারা-তখনই দেখা দেয় সংকট । দেখা দেয় বিপর্যয় ভাবনা চিন্তার,যিনি ভাবছেন তাঁর, যিনি তাঁর ভাবনাটি প্রয়োগ করছেন সমাজ, রাষ্ট্রে তাঁদেরও । তখন ভাবনাটি আর নিজের থাকেনা ছড়িয়ে পড়ে । ভাবনা চ’লে যায় অন্যের অধীনে । যদি পাওয়া যায় তাঁরই ভাবনার সাথে মিল অন্যদের ভাবনা গুলো তাহলে বিষয়টি গুরুত্ব ও জনপ্রিয়তা পায় দ্রুত বিশেষ করে কোন রাজনৈতিক মতবাদ, ধর্মীও কোন বিষয় অথবা ধর্মীও দীক্ষায় দীক্ষিত হয়ে প্রচারিত মত ।

তথাকথিত ঋষি, সন্ন্যাসী, পীর-ফকির, কামেল, অথবা কোন মানুষ পাগলের ভান করে স্বপ্নে পাওয়া কোন বিষয় বস্তুর কথা বলে এবং তাকে কাজে লাগানোর নাম ক’রে সমাজকে দূষিত করতে পারে । আর তাদের পেছনে ছুটে চলে সমাজের সহজ, সরল, কঠিন প্রকৃতির মানুষ গুলো শুধু মাত্র ভয় থেকে । তবে ছুটে যায়না তারাই যারা এসব বিশ্বাস করেননা । তাঁদের কাছে হাস্যকর এসব ।

ভয়টা কিসের ? ভয়টা মৃত্যুর, ভয়টা অজানার, ভয়টা পরকালের । পরকাল সম্পর্কে  ধর্মগ্রন্থে দিয়ে রাখা হয়েছে অজস্র ভয়ের বর্ণনা । এমন সব বর্ণনা পড়লে মানুষের মতো সংবেদনশীল প্রাণীটি ভয়ে কুঁকড়ে যাওয়ারই কথা ! তবে ভয় দূর করা যায় জ্ঞান বিজ্ঞানের সহায়তায় । সত্য জানার ভেতর দিয়ে । সকল বিশ্বাস গুলো যা প্রচার, প্রসারে ছড়িয়ে পড়েছে সমাজে এবং তার ফলে অতীতে সমাজ রাষ্ট্রে দেখা দিয়েছে সঙ্কট, বিপর্যয় এবং আজো দেখা দেয় তার পেছনের রহস্য গুলো আমাদের উন্মোচিত করা দরকার; আমাদের সঠিক ভাবনা চিন্তার দ্বার । মানবতার স্বার্থেই ।

আমাদের যা বিশ্বাস করা দরকার ছিল, এখনও আছে তা আমরা করিনি, করিনা । আর যেসব বিশ্বাস মানুষ হাজার বছর ধরে লালন করে এসেছে এই আধুনিক সময়েও মানুষ তা লালন করছে, পালন করছে কোন প্রশ্ন ছাড়াই । মানুষ ভাবতে পারে অনেক কিছু; তাঁর চিন্তা ও মেধা সংযোগে বদলে দিতে পারে অনেক কিছুই । বদলে গেছেও পৃথিবীর অনেক আদিম,প্রাচীন ও মধ্য যুগের ভাবনা, চিন্তার ফলাফল ।  অনেক কাঠামো । তা সম্ভব হয়েছে মানুষ সৃষ্টিশীল বলেই ।  জ্ঞান বিজ্ঞান ও শিল্পকলার আধুনিকায়ন  মানুষকে অনেক অপ-বিশ্বাস আত্মস্থ করা থেকে বিরত রেখেছে  ।

 মানুষ বেশি সময় ধরে অন্ধকারে বাস করতে পারেনা তাই আলো খোঁজে বেড়ায়, আলোর পথেই যাত্রা করে । আজকের আলোকিত পৃথিবী বিশেষ করে পশ্চিমের পৃথিবী সেই সুন্দর, স্বাধীন ভাবনারই ফসল । অনেক বিশ্বাস যা স্থাপিত দেয়ালের মতো দাঁড়িয়েছিল তা ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার ফল মুক্ত, স্বাধীন জীবনযাপন । যা ভোগ করছে পশ্চিমের আধুনিক মানুষেরা । আর আমরা পুবের অন্ধকারে নানান বিশ্বাসকে শাশ্বত সত্য মনে করে দিনরাত পূজো করছি । এই এলাকার মানুষ প্রবঞ্চনার স্বীকার স্পষ্টতই । পশ্চিমাদের নিজস্ব এবং সম্মিলিত বিশ্বাস সেটা যদি ধর্মীয় কিংবা রাজনৈতিকও হয় তাহলে তাঁদের বিশ্বাস ডেকে আনেনা সমাজ ও রাষ্ট্রের বিপর্যয় । যা আনে পুবে আমাদের মতো অন্ধকারে নিমজ্জিত রাষ্ট্র গুলোতে একজন অথবা গোষ্ঠীর কোন বিশেষ বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপনে এবং তাঁকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াসে ।

খুব সম্প্রতি পশ্চিমে যদিও ঘটে গেছে কিছু দুর্ঘটনা যা ডেকে এনেছে মানবিক বিপর্যয়, দেখা দিয়েছে প্রয়োজন নিরাপত্তার; চরম নিরাপত্তা সম্বলিত কিছু দেশে ! আর আমরাও অবাক হয়ছি সভ্যতার উপর আঘাতে । ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা যে অসভ্যতা দেখালো তা কোন ভাবেই কাম্য নয় । পাকিস্তানেও কি দেখিনি আমরা ? তার সব কিছুর মুলে ঐ স্থুল চিন্তা, ভাবনা আর অন্ধ বিশ্বাস ! আমরা সাধারণত কোনকিছু ভাবনার গভীরে না, গিয়ে সত্য মিথ্যা না বুঝে বিশ্বাসের উপরই নির্ভর করি বেশিরভাগ । বিশ্বাসের সাথে অনেক সময় ধারণাও একটা বৃহৎ অংশ জুড়ে থাকে আমাদের মনে ভাবনার সময় । কোন কিছুর সত্য উদ্ঘাটন করতে গিয়ে আমরা খুঁজে দেখিনা এর পেছনের ইতিহাস, সত্যের সাথে সম্পর্কিত সূত্রগুলো; যা জানা থাকলে আমরা ভাবতে পারি অন্যভাবে, অন্য দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে । আর এই ভাবনা থেকেই আমরা পেয়ে যেতে পারি ঘটনা, রটনার পেছনের কথা; উপনীত হতে পারি সঠিক সিদ্ধান্তে । বেরিয়ে আসতে পারে আসল সত্য । ফলশ্রুতিতে এড়াতে পারি সংঘাত, সংকট । কিন্তু আমরা এমন নই ।

ভাবতে যদিও আমাদের বাধা নেই,কিন্তু ভাবতে গিয়ে আমরা যখন সত্য বের করতে পারি বা চেষ্টা করি এবং ভাবনার ফলাফল অর্থাৎ সত্যিটি উপস্থাপন করতে যাই তখন বাধা আসে চারপাশ থেকে ।

বিশ্বাস মহামারীর মতো । অনেক সত্যই আমরা মেনে নিতে পারিনা, শত শত মিথ্যা বিশ্বাস আমাদের মনে বাসা বেঁধে আছে । আমরা সেগুলোকে সত্য এবং শাশ্বত মনে করি । কোন দ্বিধা থাকেনা মনে, চিন্তায় ভাবনায় । অনেক মিথ্যা বিশ্বাস যা পালন করছে মানুষ ,সমাজ, রাষ্ট্র আমরা সমর্থন করি অবলীলায় । যেসব বিশ্বাস যার কোন ভিত্তি নেই, বৈজ্ঞানিক কোন ব্যাখ্যা নেই শুধু মানুষের অপ-প্রচার পেয়ে আজ পৃথিবীতে স্বীকৃত সেসব দিয়েই আক্রান্ত আমরা আমাদের পরিবার, আমাদের সমাজ আমাদের রাষ্ট্র ।

বিজ্ঞাপন আজ বিশ্বাস স্থাপনের এক বড় জায়গা। আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় টেলিভিশন, সিনেমা নানান অপ-বিশ্বাস যা ধারণ করছে মানুষ, তাদেরকে আরও প্রচার করে মানুষের মনকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে । হালের ফেসবুক এই যাত্রায় নতুন সংযোজন । এখানেও ধর্মীয় বিজ্ঞাপন, তন্ত্র মন্ত্রের বিজ্ঞাপন, সাধক, সাধনার বিজ্ঞাপনে ভরপুর ! টেলিভিশন বিনোদনের নামে ধর্মীয় চিন্তা ভাবনা, নাটক প্রচারে বেশি ব্যস্ত । এই সব কিছুর পেছনেই যে বাণিজ্য এবং মুনাফার অপচেষ্টা তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা । এখানে কোন মানবিক চিন্তা ভাবনা নেই ।

এই বাঙলায় সত্যের সন্ধান করতে নেই, এই বাঙলায় সত্য পিছিয়ে; অনেক মিথ্যা স্বীকৃত ও আদরণীয় এখানে । আমরা খুব ছোটবেলা থেকেই যেসব সত্য জেনে এসেছি  তার পেছনের গভীর রহস্য খুলতে নেই, জানতে নেই । কারণ, অনেক সত্যই যা আমরা জেনে আসছি এতদিন তা এক রহস্য প্রবণ এলাকায় সীমাবদ্ধ । ওখানে প্রবেশ নিষেধ আমাদের । আর প্রবেশ করলেও থাকতে হবে বিশ্বাসকে বিশ্বাস করেই! রহস্য ঘেরা সকল বিষয় ও বস্তু সম্পর্কে আমরা ধারণা পাই খুব ছোটবেলা থেকেই; শেখায় আমাদের পরিবার, আমাদের সমাজ, আমাদের রাষ্ট্র । তাই বিশ্বাসের প্রাথমিক বিদ্যালয় আমাদের পরিবার, উচ্চবিদ্যালয় আমাদের সমাজ আর মহাবিদ্যালয় হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্র । এই শিক্ষা ব্যবস্থায় উচ্চবিদ্যালয় আর মহাবিদ্যালয় বেশ ভয়ংকর । অজস্র কিছুতে প্রতিনিয়ত এই দুটি আমাদের ভেতরে বিশ্বাস স্থাপন করতে বলে যে গুলো সত্য নয় । শুধু বলেই ক্ষান্ত হয়না অনেক সময় বলপ্রয়োগও করে থাকে । প্রাচীন আর মধ্যযুগে এমন অনেক উদাহরণ আছে যেখানে মানুষকে সমাজ রাষ্ট্র জোর করে বল বলপ্রয়োগের মাধ্যমে বিশ্বাস করতে বলেছে । সৌরজগত সম্পর্কে,প্রকৃতি সম্পর্কে,ঈশ্বর সম্পর্কে! বল প্রয়োগ আজ এই আধুনিক যুগেও কোন কোন সমাজ রাষ্ট্রে হচ্ছে কিছু কিছু প্রকাশ পাচ্ছে, অধিকাংশই পায়না । তখন এবং এখন যারা মেনে নেয়নি এসব অন্যায় কাজ তাঁদের জীবনে নেমে এসেছে আজো নেমে আসে দুর্বিষহ দিন । কেউ কেউ মৃত্যুর স্বাদও গ্রহণ করেছে ।

আমাদের শিক্ষা, আমাদের পরিবার, আমাদের রাষ্ট্র আমাদেরকে এমন কিছু শেখায়নি যাতে করে অনেক বিশ্বাস যা আমরা চিরকাল ধরে পালন করে এসেছি এবং এখনো পালন করছি, মনে করবো ভুল । সম্পূর্ণ একটি ভুল কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে আছে আমাদের অজস্র বিশ্বাস গুলো । অধিকাংশ বিশ্বাসেরই কোন ভিত্তি নেই কোন যুক্তি নেই । কেউ যদি ভিত্তিটা, যুক্তিটা দেখাতে যায় সেখানেও সে আশ্রয় নেয় ওই বিশ্বাসেরই যা তার নিজের নয় ।
বিশ্বাস এক চরম ভাবালুতা যা উঠে আসে মনের গভীর থেকে । বিশ্বাস এক চরম অস্ত্র মানুষের; বিশেষ করে ধর্মের বেলায় যা দিয়ে একজন ধার্মিক ঘটিয়ে ফেলতে পারে কোন ভয়ংকর ঘটনা । সৃষ্টি করতে পারে সামাজিক নৈরাজ্য । তাঁর বিশ্বাস পালন থেকে সে দেখাতে পারে হিংস্রতা অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি । স্পষ্ট করে বলতে পারি, একজন ধার্মিক মুসলমান তাঁর চরম ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে ঘৃণা করতে পারে হিন্দু ধর্মের মানুষদেরকে, একজন হিন্দু ধর্মের চরম বিশ্বাসী ঘৃণা পোষণ করতে পারে মুসলমানদের প্রতি । তদ্রূপ খ্রিষ্টান বৌদ্ধকে এবং এঁরা মুসলিম, হিন্দু ধর্মীয় মানুষের প্রতি প্রদর্শন করতে পারে ক্ষোভ । পরিণতিতে ঘটতে পারে অনেক কিছুই । কিন্তু, যারা বিশ্বাস করেনা এসব, বা পৃথিবীর অনেক বিশ্বাসই যাদের কাছে লোক ঠকানোর কাজ বলে মনে হয় তাঁরা কোনদিনই এসব অরাজগতা সৃষ্টি করবেনা । তাঁরা অনেক মানবিক নানা কারণেই ।

আমরা কি কোনোদিন কোন সময় ধর্মীয় চিন্তার বাইরে এসে ভাবতে পারি কোনকিছু ? ভাবতে গেলেই সংসার, সমাজ রাষ্ট্র বড় রকমের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, আজো দাঁড়ায় ! মানুষ জন্মগত ভাবে কোন বিশ্বাস নিয়ে জন্মায়না না । খুব ছোটবেলা থেকেই একজন মানুষের মনে তাঁর পরিবার ধীরে ধীরে নানান বিশ্বাস ঢুকিয়ে দেয় । পারিবারিক শিক্ষা নিয়েই তাঁর ছেলেবেলা কাটে । ওই স্থাপিত বিশ্বাস গুলোই তাঁর মনে চিরদিন বাসা বাঁধে । তবে কেউ কেউ জ্ঞান বিজ্ঞানের মাঝে লুকিয়ে থাকা সত্য উদ্ঘাটন করতে গিয়ে দেখে পেরিয়ে যাচ্ছে এক মিথ্যার জগত যা সে বহুদিন বুকে লালন করে আসছিল ।আর তখনই তার ভেতরের যে বিশ্বাসটি ভেঙে পড়ে তা সেতু ভাঙার মতোই; এবং নির্মাণ করে এমন সব বিশ্বাস যা আগে কোনোদিন করেনি । এই যে বিশ্বাসটি ভাঙলো আর নির্মাণ করলো নতুন বিশ্বাসের কাঠামো তা খুব সহজ নয় । ভীতু মানুষের পক্ষে চিরায়িত নিয়ম যা স্বীকৃত বলে স্থাপন করা সমাজ রাষ্ট্রে তা ভাঙা কঠিন । সহজ, যে তথাকথিত বিশ্বাস রাখেনা অথচ মানবিক তাঁর পক্ষে ।

এখানে একটি বিপদও আছে, প্রথাগত সত্য গুলো ভেঙে ফেলে যে এবং যারা, তাঁরা সমাজ রাষ্ট্রে অবাঞ্ছিত কেউ কেউ । পদে পদে তাঁরা বিপদের সম্মুখীন হয় । তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর মতো মানুষের সংখ্যা কম ।

রহস্যের ইন্দ্রজাল আমাদের সবার গায়ে । তাই আমরা কেউ চেষ্টা করি না সে জাল ছিঁড়ে বের হয়ে আসতে । ভয় পাই আমরা । আমাদের মন সায় দেয়না ওই ইন্দ্রজাল ছিঁড়ে আসবার । আমরা মরে যাবো একদিন এর মাঝে কোন ভুল নেই । এই সত্য অস্বীকার করবার কোন উপায় নেই, পথ নেই । কিন্তু আমরা মরতে ভয় পাই । এই ভয়টাও বিশ্বাস থেকেই ।

আজ পৃথিবী যেমন করে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে আরও তাতে কোন সন্দেহ নেই কিন্তু সবার আগে বদলে দিতে হবে, পরিবর্তন আনতে হবে আসলে তো মানসিকতায়; তা ছাড়া অনেক বিশ্বাস যা স্থাপিত-চিন্তায়, ভাবনায় এমনকি স্থুল চেতনায় তা কোনদিনই ভাঙবেনা । আর আমরা বিশেষ করে পুবের মানুষেরা মানবিক এবং সহনশীল পর্যায়েও পৌঁছবো না । আমরা যত আধুনিকই হইনা কেন, মন এবং ভাবনা চিন্তায় অনেক সংস্কার এখনো বাকী । সংস্কার পরবর্তী সমাজ রাষ্ট্র যদি দেখে যেতে না পারি আক্ষেপ থাকবেনা আমার । তবে হওয়াটা জরুরী ভীষণ । কারণ আমরাই চাই একটি চরম স্বাধীন, মুক্ত আর মানবিক বিশ্ব ।   

পরিচিতি  

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ