এ বি এম সোহেল রশিদ







আগুন ঠোঁটের দাবানলে

পরিপূর্ণ দেহ সৌষ্ঠব দেখার প্রচেষ্টায়
চুপি চুপি নিঃশব্দে স্নান ঘরে ঢুকলাম
উগ্র ঘ্রাণ! বড় কামুকী আর্দ্র সে ঘ্রাণ।
তীব্র থেকে তীব্রতর হয় অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষা
অপেক্ষারত ক্ষুধার স্পর্শ খোঁজে ফেরারি বসন্ত
মেঝেতে গড়াগড়ি সদ্য পরিত্যক্তা পোশাক
সমস্ত ইন্দ্রিয়তে অশরীরী উপস্থিতির পুলক
ফাঁদ পেতে বসে আছে বিস্মিত ঘোর।
স্পষ্ট বোঝা যায় স্নান শেষে এই মাত্র বেরিয়েছে
ভেজা চুল থেকে ঝরে পড়ে ভাগ্যবান বৃষ্টি
কিছুক্ষণ আগেও যার ছিল একক অংশীদারিত্ব।
পূর্ণ স্নানে শীতল হয়নি উষ্ণ জলকূপ
ফুটন্ত ধারায় ডুবসাঁতারের নির্লজ্জ মিনতি
আগ্নেয়গিরির মুখে হাজারটা সূর্যের উত্তাপ
আগুন ঠোঁটের দাবানলে পুড়ে সমস্ত শরীরর
দেহ বল্লরীর প্রতিটি ভাঁজ ও প্রতিটি খাঁজ
বিদ্যুৎ পৃষ্ঠ হই বার বার তবু অতৃপ্ত হৃদয়
নিঃশেষের পথে জ্বলন্ত মোম বাতি।
সদ্য স্নানের ফোটা ফোটা আদর শুষে নিতে
চার দেয়ালের ভিতর কাল বৈশাখীর তাণ্ডব
বাতাসের শব্দে ফিসফিস বাক্যালাপে বিচ্ছুরণ
শীৎকারে বজ্রপাত! এ নয় আহ্লাদ! প্রথম স্বাদ!
বৃষ্টিতে আগুন জ্বলে দিগুণ! নাকি হাজার গুন!
অভশেষে নির্দ্বিধায় রহস্যের লজ্জা ভাঙ্গলাম
এই প্রথমবার জানলাম! আগুনে পুড়তে এত সুখ!


স্পর্শের অপেক্ষায়

সোনা রোদে লুকোচুরি খেলে দুরন্ত বাতাস
শরীর জুড়ে শীতের হাজার মুঠো শুষ্কতা
মৃদু টোকায় ঝরে পড়ে তামাটে পল্লব
এ যেন নতুন কুড়ির আগমনীর উল্লাসে
নিয়তির কাছে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ।

আত্মঘাতী বাতাসে অরণ্যে সবুজ শূন্য বৃক্ষ
দৃষ্টিকটু স্ফীত বক্ষ থেকে উড়ে যায় উত্তরীয়
রুক্ষতা বাসা বাঁধে হেমন্ত আর শীতের রাজত্বে
এখানে কর্তৃত্ব চালায় বিষণ্ণ কুয়াশায় আবৃত মেঘ।
গু-ধূলীর পূর্বাহ্ণে তাপহীন সোনালী আলো
সমান্তরালে দাঁড়িয়ে নিম্নগামী সূর্য আর সূর্যমুখী
বামন হাতের নিষ্ফল চেষ্টা! ছোঁয়ে দিতে চায়!
নিঃসরিত আলোর বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে
শবযাত্রার শঙ্কায় ‘ম্রিয়মাণ বিকেল’ প্রস্তুত।
স্বপ্নহীন ঘুমন্ত দুই নদীর কোনে
ভাবনার সম্ভোগে জমে নোনা শিশির বিন্দু
অনুভূতিহীন উষ্ণতায় বন্দী মনোভূমি।
এক আকাশের নীচে আশ্রয় নেয় দুই পৃথিবী
তবু বাড়ন্ত হাত দেয় ধৈর্যের পরীক্ষা
শুধু একবার শুধু একবার স্পর্শের অপেক্ষায়…!

ঢাকা।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

4 মন্তব্যসমূহ

সুচিন্তিত মতামত দিন