মুখোশ
■ ডঃ নিতাই ভট্টাচার্য
" আমাকে বাঁচান স্যার। পিটিয়ে মেরে ফেলবে...।" বিকট আর্তনাদ হওয়ায় ভাসিয়ে থানার মধ্যে ঢুকে আসে লোকটা। চোখ মুখ ফেটে গলগল করে রক্ত বের হচ্ছে। জামা প্যান্টে তাজা রক্তের ছোপ, দেখলে গা শিউরে ওঠে। ভীষন যন্ত্রণায় ছটপট করতে করতে শুয়ে পড়ে লোকটা মেজোবাবুর সামনে, গড়াগড়ি দিচ্ছে মেঝেতে।
কনস্টেবল রামু দৌড়ে এসে বলে, " স্যার, স্যার লোকটাকে পাবলিক বেদম পিটিয়েছে। চাকরি দেবে বলে বেকার ছেলে মেয়েদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিল, আজ...।"
সেই সময় লাঠি উঁচিয়ে লোকটাকে মারতে আসে সজনীবাবু। বলে, " শয়তান, পিটিয়ে মেরেই ফেলবো আজ। পচিয়ে দিলো সমাজটাকে। আমি ভুল করেছি, আর কাউকে ভুল করতে দেবো না।" রামু সজনীবাবুকে শান্ত করার চেষ্টা করে। সজনীবাবু উত্তেজিত ভীষন। চিৎকার করে," বেকার ছেলে মেয়েদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। ওদের যন্ত্রণা বোঝো?" বলে আবারও লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যায়। মেজোবাবু সজনীবাবুর সামনে থেকে সরে গিয়ে একপাশে দাঁড়ায়, যদি লেগে যায় লাঠির বাড়ি সেই ভয়ে। রামু সজনীবাবুকে কোনো রকমে ঘরের বাইরে নিয়ে যায়।
সজনীবাবু এমনিতে শান্ত স্বভাবের মানুষ তার এমন রাগত চেহারা দেখে ভীষন অবাক হয় মেজোবাবু। আজ সকাল বেলার ঘটনা।
থানায় বসেছিল মেজোবাবু। মন বিষণ্ণ। ট্রান্সফার নাকচ হয়ে গেছে। এই থানা থেকে ট্রান্সফার পেতে চেয়ে উপরতলায় আবেদন জানিয়েছিল মেজোবাবু, এই নিয়ে তৃতীয়বার। আগের দুইবার মঞ্জুর হয়নি সে আবেদন। হতে পারে বড়োবাবুর কলকাঠি নাড়ানোর জন্য। তবে এইবার আশা ছিল হয়ে যাবে। এই থানায় আর থাকা যায় না। বড়োবাবুর জন্য কাজ করবার পরিবেশ নেই। তাই চলে যেতেই হবে এখান থেকে। তবে ওই যে, মেজোবাবু প্রপোজেস বড়োবাবু ডিসপোজেস। আগের দুইবার তাই হয়েছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত মেজোবাবু।
আজ সাত সকালে দুঃসংবাদটা পেয়েছে বড়োবাবুর মুখে। " আপনার ট্রান্সফার হেড অফিস থেকে নাকচ করে দিয়েছে, কারণ আছে। মেইল পেয়েছি গতকাল রাতে।" বলে কেটে পড়েছে। নাও, এইবার শহরের যত ঝুট ঝামেলা সারাদিন তুমি সামলাও। এমনিতেই একটা টেনশন ঘোরাফেরা করে মনে, তারপর আবার হেড অফিস কি কারণে ট্রান্সফার নাকচ করলো কে জানে! সে কথা বড়োবাবুই বলতে পারবে। সত্যি ভালো মানুষের কাল নেই, সব দিকে দুর্নীতি!
পরপর কয়দিন ধরেই সকাল বিকাল লম্বা মিছিল হাঁটে শহরে। থানার সামনে দিয়ে স্লোগান তুলে হাজার বেকার ছেলে মেয়ে লাইন দিয়ে পা ফেলে। কারা যেনো চাকরি দেবার নামে লাখ লাখ টাকা নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে, তাদের শাস্তির দাবী জানিয়ে মিছিল হচ্ছে। কি যে লাভ হয় মিছিলে হেঁটে ভগবান জানে! দুর্নীতি কি বন্ধ হবে? অত সহজ!
বড়োবাবু গতকাল রামুকে বলছিল সমাজটার নাকি পচন শুরু হয়েছে এক্কেবারে মাথা থেকে। প্রভাবশালী মানুষজন শিক্ষিত ছেলে মেয়েদের আবেগ নিয়ে ছেলেখেলা করছে। চাকরির টোপ ঝুলিয়ে লাখ লাখ টাকা লুটে নিচ্ছে। মানুষের মেরুদণ্ডটাই বেঁকে গেছে! রুখে দাঁড়াতেই হবে, নয়তো আগামী প্রজন্মের সর্বনাশ নিশ্চিত। সবার সচেতন হওয়া উচিত। মানুষকে বোঝানো দরকার এইভাবে টাকা দিয়ে চাকরির জন্য না ছুটে পরিশ্রম করো, ভরসা রাখো নিজের উপর। কিন্তু সে কথা শোনে কে!
আসলে চাকরি মানে ভবিষ্যত জীবনের নিটোল নিশ্চয়তা। তাই ভেবে দেখার অবকাশ নেই কারো টাকা দেবার সত্যিই প্রয়োজন আছে কি না। কি দিনকাল এলো! এই সব অসৎ লোকদের খুঁজে বের করে চরম সাজা দেওয়া উচিত। তবে সে কাজ বেশ কঠিন রে রামু। রামু মন দিয়ে শুনছিল বড়োবাবুর কথা। আর বড়োবাবুর এইসব লেকচার শুনে মনে মনে হেসে বাঁচে না মেজোবাবু। ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে বড়োবাবু এখন প্রভাবশালী মানুষ দেখাচ্ছে! ভুতের মুখে রাম নাম! পরপর চার জন কনস্টেবলের ট্রান্সফার হলো এক বছরের মধ্যে, এমনি এমনি! সেখানে বড়োবাবুর বখরা ছিল না? অথচ পাবলিকের সামনে একটা স্বচ্ছ ইমেজ তৈরি করেছে, আশ্চর্য্য মানুষ! লোকে ভাবে সৎ পুলিশ অফিসার। মানুষ সত্যিই মেরুদণ্ডহীন, কেনো যে বড়োবাবুর কথা শোনে ভেবে অবাক হয় মেজোবাবু। ইচ্ছে হয় উপরতলায় কমপ্লেন ঠুকে দিতে। সাত পাঁচ ভেবেই চুপ থাকে মেজোবাবু। অপেক্ষায় আছে, ধর্মের কল একদিন বাতাসে নড়বে ঠিক।
থানায় বসে রাগে গরগর করছিল মেজোবাবু। সামনে চুপ করে বসে ছিল কনস্টেবল সজনীবাবু। সজনীবাবু ইদানিং মেজোবাবুকে এভয়েড করে। তবুও নিজের দুঃখের কথা সজনীবাবুকে শোনাতে চেয়ে মেজোবাবু বলে, " দেখুন সজনীবাবু নিজের চোখে দেখুন। আপনি তো আজকাল আমাকে আর বিশ্বাস করেন না। সৎ পথে আর কিছু হবার নয়। সব দু নম্বরী কেস। টাকা দিইনি, তাই আমার ট্রান্সফার হলো না। সজনীবাবু, আপনার বড়োবাবু টাকা ছাড়া কিচ্ছু বোঝে না।"
" সৎ অসৎ বিচারের আমি কে স্যার। ন্যায় অন্যায় আমিও তো কম দেখলাম না।" বলে চলে যায় সজনীবাবু।
চিনি ছাড়া লাল চা নিয়ে রামু আসে। চায়ে চুমুক দেয় মেজোবাবু। বলে, " বস্ রামু। আমাদের সজনীবাবু কেমন যেনো বদলে গেছে!"
কিছু একটা বলতে গিয়ে মুখে লাগাম টানে রামু। নজর বিছিয়ে দেখে নেয় আশেপাশে সজনীবাবু রয়েছে কি না। তারপর গলা নামিয়ে বলে, " স্যার, সজনীবাবু ফেঁসেছে স্যার। আমি নিজে শুনেছি সেদিন ফোন করে কাকে যেনো বলছিল...।"
ছেলের চাকরি হবে বলে কাকে যেনো দশ লাখ টাকা দিয়েছে সজনীবাবু। তারপর যা হয়। চাকরি আজ হবে, কাল হবে। চাকরির দেখা নেই। এদিকে পিছন পথ দিয়ে চাকরি নিশ্চিত, তাই অলীক স্বপ্নে বিভোর থেকেছে সজনীবাবুর ছেলে। এখন তার সাংঘাতিক অবস্থা। পলি জমেছে সবাইকে ছাপিয়ে যাওয়ার তীক্ষ্ণ মানসিকতায়। মরচে ধরেছে পরিশ্রম করবার ইচ্ছেয়। তলানি ছুঁয়েছে মনের জোর। নিজের ক্ষমতার উপর সামান্য বিশ্বাসও অবশিষ্ঠ নেই আর। ব্যর্থতার ভয়াল স্রোতে নিজেকে ভাসিয়ে দিয়ে বিবশ মনে বসে থাকে সারাদিন। ছেলের এমন করুণ অবস্থা দেখে ভীষন মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছে সজনীবাবু। থানায় এসে মাঝে মধ্যেই মেজোবাবুর ঘরের সামনে দাঁড়ায় সজনীবাবু, সেটা লক্ষ্য করেছে রামু।
মেজোবাবুকে একদিন রামু বলেছিল, " স্যার আপনাকে কোনো গোপন কথা হয়তো বলতে চায় সজনীবাবু।" যাইহোক, রামুর মুখে সজনীবাবুর ফেঁসে যাবার খবর শুনে মেজোবাবু বলে, " বলিস কিরে রামু! দশ লাখ!"
" হ্যাঁ স্যার পাক্কা খবর। আমি সজনীবাবুকে আড়ালে কাঁদতে দেখেছি, খুব খারাপ লেগেছে আমার।"
" সে কিরে! ইস! হয়তো এই কথাটাই আমাকে বলতে চায় রে। সজনীবাবু বোকার মত এটা কি করলো!"
" কি করবে স্যার? নিজের চাকরি প্রায় শেষ হতে চললো, ভেবেছিল যদি টাকা পয়সা দিয়ে কিছু হিল্লে হয় ছেলেটার।"
" ইস! সজনীবাবু কার পাল্লায় পড়লো রে। ছি ছি ছি। আগে জানলে ঠিক বাঁচিয়ে দিতাম আমি। অত গুলো টাকা!"
" সে কিরে! ইস! হয়তো এই কথাটাই আমাকে বলতে চায় রে। সজনীবাবু বোকার মত এটা কি করলো!"
" কি করবে স্যার? নিজের চাকরি প্রায় শেষ হতে চললো, ভেবেছিল যদি টাকা পয়সা দিয়ে কিছু হিল্লে হয় ছেলেটার।"
" ইস! সজনীবাবু কার পাল্লায় পড়লো রে। ছি ছি ছি। আগে জানলে ঠিক বাঁচিয়ে দিতাম আমি। অত গুলো টাকা!"
রামু বলে, " টাকা কাকে দিয়েছে সেইদিন সেটাও শুনতে পেতাম স্যার। ফোনে সেই কথাই বলতে যাচ্ছিল। ঠিক সেই সময় সজনীবাবুকে ডেকে নেয় আমাদের বড়োবাবু।"
" বড়োবাবু কি বললো সজনীবাবুকে?"
" সবটা শুনিনি, তবে কানে এলো, ওয়েট, একদম বেশি কথা বলবেন না। ভরসা রাখুন। বলেছি যখন সময়ে ব্যবস্থা হবে ঠিক।"
টেবিলে চাপড় মেরে মেজোবাবু বলে, " এ্যাই! আমি সিওর সজনীবাবু আমাদের বড়োবাবুকেই টাকা দিয়েছে। তারপর বড়োবাবুর থ্রেট, সজনীবাবু ভয়ে চুপ। আজ নয়তো কাল সব কথা সামনে আসবেই। আসলে কি জানিস...।"
মেজোবাবুর মুখের কথা থমকে যায়, সজনীবাবু ঘরের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।
রামু ফিসফিস করে বলে," আপনি একবার সজনীবাবুকে জিজ্ঞাসা করে দেখুন স্যার, ভিতরের কথা যদি জানতে পারেন কিছু।"
" এই সময় এইসব কথা বলা কি ঠিক হবে? তাছাড়া আমারও মন মেজাজ ঠিক নেই।" বলে মেজোবাবু।
" থানায় বড়োবাবু নেই। কথা বলে দেখুন যদি কিছু জানতে পারেন।"
" ছেড়ে দে, ও সব কেচ্ছা আর ভালোলাগে না শুনতে। তবে সজনীবাবু যদি ঠিকঠাক স্টেটমেন্ট দেয় তাহলে বড়োবাবুর নামে দুর্নীতির একটা কড়া নালিশ ঠুকে দিতে পারি। মুখ খুলবে কি?"
" দেখুন না স্যার চেষ্টা করে।" বলেই রামু ডাকে, "সজনীবাবু, স্যার কি জিজ্ঞাসা করছে দেখুন।"
দু পা সামনে এগিয়ে এসে দাঁড়ায় সজনীবাবু। এইবার মেজোবাবুকে কিছু বলতেই হয়।
" শরীর ঠিক আছে আপনার?" জিজ্ঞাসা করে মেজোবাবু।
" হ্যাঁ স্যার।"
" না না। যতই বলুন। আমি পুলিশ, মুখ দেখলে বলতে পারি মনের খবর। আপনি ভালো নেই। তবে একটা কথা বলতে পারি, ভরসা রাখুন, চারপাশের পরিস্থিতি দেখে ভয় পাবেন না।" বলে মেজোবাবু।
" আমিও পুলিশ স্যার। তবে ছেলের মুখ চেয়ে...।"
কথা শেষ না করেই চলে যায় সজনীবাবু। পিছন পিছন রামুও হাঁটা লাগায়।
ঘরে একলা বসেছিল মেজোবাবু। সজনীবাবু কেমন যেনো বেসুরে গাইছে, কথা বলতে হবে একবার।
হঠাৎ করে চিৎকার কানে আসে। " মার মার মার।" থানার গেটের সামনে কোনো গণ্ডগোল হচ্ছে। চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় মেজোবাবু, জানালা দিয়ে নজর ফেলে বাইরের দিকে। আর ঠিক সেই সময় রক্তাক্ত চেহারা নিয়ে হাজির হয় লোকটা। তারপর ভীষন যন্ত্রণায় মেঝেতে শুয়ে ছটপট করে। " আমাকে বাঁচান স্যার। পিটিয়ে মেরে ফেলবে...।"
পিছন পিছন রামু আর সজনীবাবু আসে। সজনীবাবু লাঠি তুলে মারতে যায় লোকটাকে। রামু কোনো রকমে ...।
থানার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে উত্তেজিত ছেলেমেয়েরা। লোকটাকে হাতে পেলে মেরে ফেলবে। জানালা দিয়ে বাইরের হালচাল দেখে মেজোবাবু।সেখানে দাঁড়িয়ে গলা তোলে সজনীবাবু। বলে," বাড়ি ফিরে নিজের ছেলের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। ভীষন কষ্ট হয়। অনেক দিন চুপ থেকেছি, আর নয়। প্রশাসনে আছে বলে ভয় পেয়ে এসেছি।" বলে আবারও থানার ভিতরে আসতে উদ্যত হয়।
রামু বলে, " শান্ত হোন সজনীবাবু। আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন।"
" মরে যাবো, তার আগে খুন করে ফেলবো অসৎ অফিসারদের। অনেক ধৈর্য্য ধরেছি।"
সজনীবাবুর কথা শুনে চমকে ওঠে মেজোবাবু। " অসৎ অফিসার!", কার কথা বলতে চায় সজনীবাবু? থানার গেটের দিকে পা ফেলতে গিয়েও থমকে দাঁড়ায় মেজোবাবু, থানায় ফিরে এসেছে বড়োবাবু। ব্যস! এইবার এমন কথা বলবে লোকজন চুপ মেরে যাবে। সত্যি, লোকটা বশীকরণ জানে বোধ হয়!
শুরু হয়েছে বড়োবাবুর বক্তৃতা। কান খাঁড়া করে শোনে মেজোবাবু। বড়োবাবু বলে, " চিন্তা করবেন না। প্রশাসন সব সময় আপনাদের সঙ্গে আছে, ভরসা রাখুন। আপনারা সচেতন হন, অসৎ মানুষের ফাঁদে পা আর দেবেন না। কঠিন পরিশ্রম করুন। নিজের ক্ষমতার উপর ভরসা রাখুন।" সজনীবাবুও চিৎকার করে বলে, " ভয় পাবেন না কেউ। সাহস নিয়ে ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করুন। এদের চরম সাজা হওয়া উচিত। পচিয়ে দিচ্ছে দেশটাকে।"
এদিকে মেঝেতে শুয়ে লোকটা ছটপট করছে যন্ত্রণায়। লোকটার দিকে তাকিয়ে থাকে মেজোবাবু।
রামু এসে মেজোবাবুকে বলে, " কাল মিটিং বসবে স্যার। বড়োবাবু বললো প্রশাসনের উপর মহলে এই খবর পৌঁছে গেছে। আগামী কাল হোমরা চোমরা লোকজন এখানে আসবে, অপরাধীরা ধরা পড়বেই।"
বড়োবাবু আর সজনীবাবু, মেজোবাবুর ঘরের সামনে কথা বলছে। কিছু কথা কানে আসে মেজোবাবুর। বড়োবাবু বলে, " কথা দিচ্ছি ব্যবস্থা হবেই। খবর উপরমহলে দেওয়া আছে।"
সজনীবাবু করুন স্বরে বলে, " আমার ছেলের কি হবে স্যার?"
বড়োবাবু বলে, " মনের আগুনটা আবার জ্বালিয়ে দিতে হবে। বাকিটা আপনার ছেলে নিজেই পারবে। চিন্তা করবেন না, আমি আছি আপনার পাশে।" সজনীবাবু ভরসা পায় বড়োবাবুর কথা শুনে। দুশ্চিন্তায় কুঁকড়ে যাওয়া মন সতেজ হয়ে ওঠে আজ। ভীষন সাহস নিয়ে সজনীবাবু বলে, " বহুদিন ভেবেছি একটা ফয়সালা করেই ছাড়বো, তারপর ঘরের সামনে থেকে ফিরে এসেছি ভয়ে। আজ শেষ দেখেই ছাড়বো।" দৌড়ে মেজোবাবুর ঘরের দিকে যায় সজনীবাবু। আকাশ ফাটিয়ে চিৎকার করে, " পিটিয়ে মেরে ফেলবো এইবার। পুলিশে চাকরি করে দুর্নীতি করে যাচ্ছেন আপনি!"
সজনীবাবুর রুদ্রমূর্তি দেখে ভীষন ভয়ে আঁতকে ওঠে মেজোবাবু। পড়িমরি করে ঘরের বাইরে এসে বড়োবাবুর সামনে দাঁড়ায়। আতঙ্কে থমথম করছে মেজোবাবুর চোখ মুখ, গলায় করুন আর্তি, " আমাকে বাঁচান স্যার। পিটিয়ে মেরে ফেলবে...।"
0 মন্তব্যসমূহ
সুচিন্তিত মতামত দিন