লাউপাতা সবুজ টিক্কা
সপ্তরথীর স্থাপত্য থেকে কিরণটুকু আলাদা রাখুন। অন্তত ঘণ্টা খানেক, তরঙ্গগুলিকে লাগাম পরাবেন না। পছন্দমতো কলধ্বনির সাথে তাদের খেলা করতে দিন চু-কিতকিত।
ঘেমে নেয়ে গেলে দিন এক পাত্র বিশ্রাম।
আপনি ততক্ষণে অন্য আরেকটি পঞ্চমে, মোহগন্ধ আর ভ্রমের শিরীষ মেখে নিন। সাঁতলে নিন অপাপবিদ্ধা তুফান। ধীরস্বরে জেগে উঠছে সৌরমালিকা, প্রজাপতির ফুল্লকুসুম।
মনে রাখবেন, রন্ধনের প্রতিটি মুহূর্তই একটি কবিতার আখর। লিখতে লিখতে আঁকবেন, আঁকতে আঁকতে লিখুন, শব্দকল্প চূড়ান্ত হলে তবেই তৈরি হবে পরম্পরা।
এই দেখুন, গল্পে গল্পে রান্না-কাহিনী প্রায় শেষ। জ্বড়তা কাটিয়ে বেজে উঠছে অমৃত মাখামাখি এককোষী মাখনের পীরিতি। তৈরি আপনি।
প্রোটনরশ্মির রাজারানীতে সাজিয়ে দিন গান্ধারের শিবরঞ্জনী।
শ্যামলবরণ কপিকাঞ্চন
পুস্পপাত্রটির গায়ে মাখিয়ে নিন বহুমাত্রিক বন্দনা।
ব্রতকথার গায়ে মাখিয়ে রাখুন বিল্বপত্রের তরবারি।
চন্দনের তুলিতে আঁকুন মিহিশ্বাসের ব্রহ্মাণ্ড। প্রস্ফুটিত বুক ভেঙে অজস্র মাসকলাই। স্নেহকোষ। মিশিয়ে দিন অস্ফুট অভিলাষ, পাঁচফোঁড়নের পরিতৃপ্তি।
ছন্দ আর ব্যাকরণ বুলিয়ে দিন, গসপেলের পবন জুড়ে হিল্লোলের নির্জন,। আপনি ততক্ষণ অগ্নিশুদ্ধ করুন একজোড়া বিষুবগদ্য। অর্ধসমাপ্ত উপন্যাসটির চোখে রাখুন উতল শংসাপত্রের রেখা।
এই রন্ধনে সরঞ্জাম বেশি লাগে না। শুধু, ব্রহ্মকুঠির সাধুপক্ষ। আসবাবহীন গৃহীস্বরের খোসা ছাড়িয়ে এক ঝলক অন্নবৃক্ষের প্রাণায়াম কতো সহজেই রান্না করা যায়, নিজের চোখেই তো দেখলেন।
এখন স্বাদ নিন সেই আধ্যাত্মিক আভার।
রং-রসিয়া-আহা-দুনিয়া
এই রান্নার প্রধান উপকরণ হল পর্যটন। প্রথমে ঝেড়ে বেছে রাখুন ভ্রমণখনির গমক। কোরাসের গুল্ম দিয়ে চুড়ো করে বাঁধুন নবম সুরের বিভ্রম। চাঁদোয়ার সোনালী রিবন। পথ ডাকছে। পথিকও। কাকে নেবেন বুকে? বুঝতে পারছেন না?
প্রথমে পথিকের সেতুটিকে করুন নেমতন্ন। তারপর পথসাঁতারের উপগ্রহটিকেও। মাধ্যাকর্ষণের সলতে, তাপটুকুকে বাঁচিয়ে রাখুন। গোটাদানার কাজুঘ্রাণ, শিঞ্জিনী সাজিয়ে। রাখুন কল্পলোকের আঁশ ছাড়িয়ে। দিগন্তবঁটির চামড়া ফেলে দিয়ে ঝকঝকে করুন।
ঝিরিঝিরি ঝিঁঝিঁ হেঁশেল। হাত ধরে টানছে আপনার। উত্তেজনাটুকু, গাছে গাছে দিচ্ছে তা। এই আত্মদীপক কিন্তু ফেলে দেবেন না। বরং তাকে দেবেন, দেউলিয়ার রূপটান।
টানটান মাঝদরিয়া, যদি খুঁজে পান টাটকা অ্যাটলাস, জানবেন প্রস্তুত মায়াবিনী দীপ্রশিখা।
0 মন্তব্যসমূহ
সুচিন্তিত মতামত দিন