জামাল আলীর মত তারস্বরে চীৎকার করছে তার দলের ছেলেরাও। আগুন জ্বলছে গ্রাম জুড়ে। রাস্তায় টায়ার পুড়ছে। বেশ কয়েকদিন ধরে অসহিষ্ণুতার হাওয়া বাতাস ভারী করে তুলেছে। পুলিশ জলকামান চালিয়েছে। রাস্তায় স্পেশাল ফোর্সের অস্বস্তিকর আসা যাওয়া। অনেকেই গ্রাম ফাঁকা করে এদিক ওদিক আত্মীয়স্বজনের বাড়ি অথবা অস্থায়ী আস্তানায় উঠে গেছে।
-কি রে অবস্থা কি বুঝছিস?
-চিন্তা করবেন না স্যার। এই জামাল যখন কথা দিয়েছে তা নড়চড় হবার না..
বারেবারে ফোন আসছে। চাপা স্বরে নির্দেশও, সঙ্গে চলছে অবস্থার আপডেট দেওয়া। ঠিক এইসময় একটা বাচ্চা ছেলের কান্না পুরোনো রাধাকৃষ্ণের মন্দিরের পাশ থেকে শোনা গেল। জামাল বীভৎস মুখভঙ্গি করে চীৎকার করে উঠল। ছেলের দলও জান্তব উল্লাসে অস্ত্র উঁচিয়ে ছুটল শব্দের অভিমুখে।
এক সদ্যজাত শিশুপুত্র নোংরা কাপড়ের মধ্যে শুয়ে হাত পা ছুঁড়ছে। তার কান্নায় বোঝার উপায় নেই তার ধর্ম, পিতৃপরিচয়। জামাল এখনো পিতৃসুখ থেকে বঞ্চিত। নিঃসন্তান বৌয়ের মুখটা মনে পরায় এক অপত্যস্নেহে জামাল আলীর উদ্যত হাতদুটি শিশুপুত্রটিকে তুলে বুকের কাছে নিয়ে আসে।
চারিদিকে খুঁজেও শিশুটির মাকে পাওয়া গেল না। শিশুটিও খিদেতে অস্থির হয়ে উঠেছে। কান্নার আওয়াজ ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। ছেলের দল কি করবে বুঝতে না পেরে জামালের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রইল।
দলের সকলকে চমকে দিয়ে অকস্মাৎ জামাল আলীর গলা শোনা গেল - হাঁ করে কি দেখছিস? সাবিনাকে খবর দে তাড়াতাড়ি একটু দুধ ফুটিয়ে আনতে। বলবি এতদিনে আল্লা আমাদের কথা শুনেছেন।
রোজমেরী উইলসন
Reviewed by Pd
on
জুলাই ৩১, ২০১৭
Rating:
Reviewed by Pd
on
জুলাই ৩১, ২০১৭
Rating:

কোন মন্তব্য নেই:
সুচিন্তিত মতামত দিন