সোনালী ব্যানার্জী

sonali

গভীর ঘুমের মধ্যেই ফিসফিস করে বলা টুকরো টুকরো কথা কানে ভেসে আসছে।  বিরক্তিকর ! ও বলে ওঠে, তোমরা অন্য ঘরে গিয়ে কথা বলো। আমার ঘুম পাচ্ছে।  

কেউ একজন খুব জোরে ওর হাতটা চেপে ধরেছে। পিউলি এবার তাকাতে চেষ্টা করে। চোখের পাতা ঘুমে ভারী হয়ে আছে। অনেকগুলো অস্পষ্ট মুখ - অগ্নিভর মুখটাও ঝাপসা ভীষণ।  তার গলায় উদ্বেগ স্পষ্ট শুনতে পায় এবার -  পিউ ! আমার দিকে তাকাও পিউ। পিউলি বুঝতে পারে না ঘরের দেওয়ালটা এত সাদা কেন। ও কি স্বপ্ন দেখছে ? চোখ বন্ধ করতেই রিমলির মুখটা স্পষ্ট দেখতে পায়। 

রিমলি ডাকছে , "মা ! মা ! "।  পিউলি ওকে খোঁজে। রিমলি নেই।  
- অগ্নি , আমার রিম কই ? অগ্নিভ ওর হাত চেপে ধরে আছে ...
- রিম মা'র কাছে আছে পিউ। তুমি বাড়ি চলো । তোমায় আমি কোথাও যেতে দেব না ।  

সব মনে পড়ে যাচ্ছে পিউলির।  মনে পড়ে যাচ্ছে গত রাতে অগ্নিভর বলা প্রতিটা শব্দ .......... " আমি আর একসাথে থাকতে চাই না । আজ থেকেই আমাদের রাস্তা আলাদা"।  পিউলি মুখ ফিরিয়ে নেয়।  সে তো অগ্নিভকে মুক্তি দিতেই চেয়েছিল চিরদিনের মতো। পারল না । কিন্তু অগ্নিভ ওকে ধরে রাখতে চাইছে কেন ? সব যেন কেমন গুলিয়ে যেতে থাকে তার।  শুধু রিমলির অসহায় কান্নাভেজা মুখটা যেন অনেক দূর থেকে চেয়ে আছে ওর দিকে। কত বেলা হল এখন ? রিমটা খেয়েছে ? ও না খাইয়ে দিলে মেয়েটার খাওয়াই হয় না।  

নার্সিংহোমের এই ঘরটা বড় বেশি ঠান্ডা যেন।  পিউলির হঠাৎ খুব শীত করতে থাকে। অগ্নিভর হাতটা চেপে ধরে বলে ওঠে - আমি বাড়ি যাবো ।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ