Sharmistha Dey

from: sharmistha dey <papri.dey@gmail.com>
to: attarsanniddhe@gmail.com
date: 18 August 2015 at 15:32
subject: Story can it be published in your site??
mailed-by: gmail.com
Signed by: gmail.com







Dear sir,

Seeing your site sobdermichil.com I am spellbound to read such good stories and poems. Writing is not only my hobby,its my passion.I shall be very grateful if you can go through my writing and you can publish it in your website,if it is worthy at all.Here is the story :

                      
একটা সাধারন মানুষের গল্প



মিহিরবাবু একজন আদ্যপান্ত সাধারন লোক।রোজ সকাল সাতটা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে দুধের ক্যান হাতে বিশুর দুধের ডিপোয় লাইন দেওয়া থেকে জীবন শুরু ,তারপর ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিয়ে বাড়ী ফেরা,কোনকোন দিন ফেরার পথে বাজার থেকে কলাটা, মুলোটা, মাছের মাথাটা নিয়ে ফেরা, তারপর স্নান করে গিন্নীর হাতের রান্না খেয়ে অফিসের বাস ধরার জন্য দৌড়ানো ,বাসে বাদুড়ঝোলা হয়ে ডালহৌসির অফিস, আবার রাতে বাড়ী ফিরে খেয়েদেয়ে ঘুমানো -এই ছিল ওনার রোজকার রুটিন। এই রুটিনের মধ্যে না ছিল কোন বৈচিত্র,না ছিল অন্যরকম কিছু।আর মিহিরবাবুর চাকরীটাও ছিল ওর মতই সাধারন।নাহঃ,কোন বিদেশি কোম্পানি বা সরকারী দপ্তরের আধিকারিক নয়, অফিসপাড়ার একটা সাধারন বেসরকারি অফিসে কেরানীর চাকরী করতেন মিহিরবাবু। করতেন কেন বলছি, সে কারণটা ক্রমশ প্রকাশ্য। 

অন্যান্য ছাপোষা গেরস্থের মতই মিহিরবাবুরও স্বপ্ন দেখতেন কবে ওনার ছেলে তমাল বড় হয়ে ভালো চাকরি করবে, বা মেয়েটার ভালো একটা পাত্র যোগাড় করতে পারবেন। বাড়ীটাও দোতলা করতে হবে। ব্যাস, এসব নিয়েই কাটছিল দিনগুলো। 

অফিসের প্রমোশন এবারে হবে কি না , কিম্বা শালীর মেয়ের বিয়েতে সোনা দেবেন না শাড়ী দেবেন, এসব নানা কাজের ভাবনা নিয়েই চলছিল মিহিরবাবুর মত একজন সাধারন মানুষের জীবন, মানে যেভাবে চলে আর কি। কিন্তু সেদিনের সেই ঘটনাটা সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছিল ওনার জীবন। দিনটা ছিল বুধবার।রেডিওতে বিপজ্জনক এক ঝড় আসার আগাম ঘোষণা হওয়াতে অফিস থেকে বেশ কিছুটা আগেই বেড়িয়ে পড়েছিলেন মিহিরবাবু আর ওনার কয়েকজন সহকর্মী।আকাশে সেদিন ছিল মেঘের ঘনঘটা।জমে থাকা কালো মেঘ যেন সিংহের কেশর ফুলিয়ে গর্জন করে চলেছিল,যেন এখুনি ঝাঁপিয়ে পড়বে।অফিসের হিসাবরক্ষক অরুনকে বিদায় জানিয়ে তাড়াতাড়ি পা বাড়ালেন মিহিরবাবু। ঝড় আসার আগে এইবেলা ঢুকে পড়তে হবে,নাহলে কি যে হবে। 

তা মিহিরবাবু অপেক্ষা করছিলেন একটা শেডের তলায়। এমন সময় একটা বাচ্ছার কান্নার আওয়াজ ভেসে এল কানে।কিছুটা চাপা আওয়াজ।একটু এদিক ওদিক তাকিয়ে শব্দটার উৎস খুঁজতে লাগলেন উনি।মনে হল আওয়াজটা ভেসে আসছে একটু দূরে থাকা একটা প্যাকিং বাক্সের মধ্যে থেকে। চশমার কাঁচটা ভালো করে মুছে নিয়ে মিহিরবাবু কৌতূহলবশত এগিয়ে গেলেন ওদিকে। ঢাকাটা সরাতে দেখা গেল একটা সদ্যজাত বাচ্ছাই হবে বোধহয়, তার কান্না। ওইটুকু গলা দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছেনা,তাও তারস্বরে কেঁদে বাচ্চাটা সমস্ত পৃথিবীকে নিজের অস্তিস্বের কথা জানান দিতে চাইছে।আশেপাশে তার মা কিম্বা আর কাউকে পাওয়া যায় কিনা দেখলেন।কিন্তু আকাশের যা অবস্থা!আহা,কে যে ফেলে রেখে গেল দুধের শিশুটাকে? 

বাচ্ছাটাকে ওরকম ভাবে কাঁদতে দেখে একবার কোলে তুলতে গেলেন মিহিরবাবু,কিন্তু ভয় করল যদি কোন ঝামেলা হয় তো।কে সামলাবে তখন,উনি তো একেবারেই সাধারণ মানুষ। নিজের সাথে থাকা মাদার ডেয়ারীর প্যাকেটটা থেকেই এক্টু দুধ খেতে দিলেন। চুকচুক করে দুধ খেয়ে বাচ্চাটা একটু শান্ত হল। প্রথমে মিহিরবাবু একটু থমকে দাঁড়ালেন।আকাশের দিকে তাকালেন একবার। ওদিকে প্রবল ঝড় এসে পড়েছে।আশেপাশে তো কেউ নেই। ভাবলেন বাচ্ছাটাকে নিয়ে চলে যাবেন কিনা।কেউ তো দেখছেনা।এদিকে বৃষ্টি নেমে গেছে।বৃষ্টিটা একটু কমার অপেক্ষাতে রইলেন মিহিরবাবু।নাহয় থামার পরেই বাচ্ছাটাকে নিয়ে পুলিশ থানাতে জমা দিয়ে আসবেন উনি।সারাজীবন তো গিন্নীর বাতের ওষুধ আর ছেলের চাকরীর চিন্তাতেই কাটালেন। একদিন এই নাম না জানা বাচ্চাটার জন্য নাহয় ঝড় উপেক্ষা করে অন্য কিছু ক্রবেন,অকে ওর মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া।

অবশেষে ঝড় থামল। মিহিরবাবু বাচ্ছাটাকে কোলে নিয়ে এগোতে লাগলেন, গন্তব্য থানা। 

এদিকে রিমলির বাবা-মা তার চিন্তাতে অস্থির।এক মাসের ওইটুকু শিশু,সে কি করে হারিয়ে  যেতে পারে?রিমলির মা থেকে থেকে অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। ওদের কাজের মেয়ে রত্না বলেছে একটা চশমা পড়া লোককে দেখেছে বাচ্ছাটাকে নিয়ে।ব্যাস, সাথে সাথে থানার বড়বাবুর কাছে ফোন চলে গেছে।

মিহিরবাবু বসে আছেন জেলের গরাদে। চোখে জল। অনেকবার উনি বলেছেন যে উনি ওই বাচ্ছাটাকে চুরি করেননি।কিন্তু কেউ শুনলে তো!উনি তো ওকে মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে গেছিলেন।বড় ব্যাবসাদারের ফোন এসেছে,ওনার মত সাধারণ মানুষের কথা মূল্য পাচ্ছিলনা কারোর কাছেই। 

থানার ফোন পেয়ে ছেলে তমাল আর বউ এল বাবাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে। ছেলের দৃষ্টিতে কেমন যেন রাগ রাগ।মিহিরবাবুর মাথা ঝুলে গেল।ভুল বোঝাটা মিটল শেষে, ওদের কাজের মেয়ে রত্না আর তার প্রেমিক মদনের হাতে হাতকড়া পড়লো। পুলিশ ক্ষমা চেয়ে ছেড়ে দিল মিহিরবাবুকে।

রাতে খেতে বসে মা আর ছেলের কথা শুনছিলেন মিহিরবাবু,বাচ্ছাটির বাবা নাকি বলেছে এরকম ভুলের জন্য বেশ কিছু টাকা ক্ষতিপূরণ সে দেবে।তারা মিহিরবাবুকে এরকম পরোপকারিতার শখ চাগাড় দেবার জন্য কিছুটা ধিক্কারও দিল।“ কি দরকার? যেমন সাধারণ আছ,থাকনা বাবা।দেখেছিলে তো চলে যেতে পারতে,বা পুলিশকে ফোন করে জানিয়ে দিতে পারতে,তাহলেই মিটে যেত। ” । সব শুনতে পাচ্ছিলেন মিহিরবাবু নিজের ঘরে শুয়ে।কিন্তু কি করে ওদের বোঝাবেন ওই বাচ্চাটির কান্না তাকে তার “সাধারণ” হবার এক্তিয়ারটা ভুলিয়ে দিয়েছিল কিছুক্ষনের জন্য। 

জানালা দিয়ে আকাশের তারাগুলোর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে মিহিরবাবু ভাবছিলেন ওই তারাগুলো কি বিশাল!কিন্তু তাদের এই বিশালত্ব এত দূর থেকে কত ক্ষুদ্র,তাই তারা বড়ই সাধারণ দেখায়।ধীরে ধীরে চোখের সামনে তারাগুলো ঝাপসা হয়ে আসতে লাগল  মিহিরবাবুর মত একজন সাধারণ মানুষের।


With Thanks and Regards

Sharmistha Dey
Asst. Prof.,Dept. of CA
Guru Nanak Institute of Technology
157/F, Nilgunj Road , Panihati , Kolkata 114





Sharmistha Dey Sharmistha Dey Reviewed by Pd on সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৫ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

সুচিন্তিত মতামত দিন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.