স্নেহা

100



















জলধ্বনি




সূর্যাস্ত দেখা হয়ে গেছে আরো আগেই।  জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকাতেই অদ্ভুত এক শিহরণ জাগলো মনে।  দূর নীল আকাশে একটা কালো টিপ।  নীল আকাশের প্রাচুর্যে তাকে অদ্ভুত রকমের অবাস্তব মনে হচ্ছে।  টিপটা একট একটু করে বড় হয়ে এগিয়ে আসছে আকাশ পথ বেঁয়ে।  ওটা যে মেঘ তা ঢেঁড় বুঝতে পারছি।  কিন্তু—মেঘটাকে এমন অচেনা লাগছে কেন...? কেমন রঙ পাল্টে শ্লেষ হয়ে আছে।  প্রলয় তো দূরের কথা সামান্য ঝড়-বৃষ্টি তৈরি করার ক্ষমতাও নেই তার, যেন আজ্ঞাবহ, আদেশ পালন করতে এসেছে... 
কেউ কি বার্তা পাঠিয়েছে ঐ মেঘের মাধ্যমে...?

অজ্ঞ এই পৃথিবীটা 
বিজ্ঞ শকুনির মতন 
ঘুমে থাকা শিশুকে 
কুপিয়ে করে খুন... 

অটুট আদর্শ থেকে ক্রমাগত নেমে যাচ্ছে ভালোবাসার সূচক, সভ্যতার মোড়ক... 
হৃদয়ের ভাঁজ খুলে দেখি করুণ স্মৃতি, ভাঙনের গীতি।  গুটিকয়েক এই নিঃশ্বাসের জীবনের জন্য কেন এত ভাঙনের খেলা...? 
কঙ্কালের বালিয়াড়ি, স্মৃতিপুঞ্জ গচ্ছিত রিক্ত-সিক্ত রঞ্জিত। পুরনো কর্পূর, বিচ্ছুরিত রোদের শুশ্রূষা আর ইন্দ্রিয়পরতার ভুল পাপে এইসব এন্টিবায়োটিক ধুয়ে মুছে দেয় উষ্ণতার ধারাজল। তবুও শুদ্ধতা আর স্বচ্ছতার ধোঁয়ায় এতকাল পোড়াতে পারিনি অস্তিত্বকে... 
হৃদয়ের ভাঁজ খুলে দেখি—শব্দহীন আগুন জমে জমে এই বুক হয়েছিল পতিত পাথর। এখন পাথরও নেই, হাহাকারও নেই। বৃষ্টির মেঘকে বলেছিলাম—রাতের আকাশে স্বচ্ছ ফাল্গুন ফোটাও। মেঘ থেকে খসে পড়ে মুদ্রার আওয়াজ। স্থির চন্দ্রসূর্যগতি সামান্য তরঙ্গে তো কেঁপে উঠেই। তবুও এতো দীর্ঘ জলধ্বনিকালে কণা ইঞ্চি পিছুটান নেই কোনখানে... 

আগুনকে আলো বলে তাড়ানো যায় সান্তনার আঁধারে, কিন্তু—দগ্ধতা থেকে যায় অন্তরের ভেতরে... 

জীবন বাজী রেখে আমি প্রতিজ্ঞা করতে চেয়েছিলাম—আমি আমার আস্তানা বদলাবো না। কিন্তু—আমাকে বদলাবো আর পাল্টে নেবো সব কিছু।  প্রতিজ্ঞা নিয়েছি আর কোন প্রতিজ্ঞা করবো না বোলে... 

প্রার্থনা—হে পৃথিবী সভ্যতার জন্য সভ্য হও... 


স্নেহা স্নেহা Reviewed by Pd on আগস্ট ১৫, ২০১৫ Rating: 5
Blogger দ্বারা পরিচালিত.