" এবার দেওয়ালীতে তোমায় একটা স্পেশাল গিফ্ট দেবো। " "হঠাৎ দেওয়ালী গিফ্ট ? মাথায় কি দুষ্টুবুদ্ধি ঘুরছে মশাই ? " "তোমার না অপেক্ষা প্রিয়। অপেক্ষা করো তবে।" বলেই একগাল দুষ্টু হাসি । তখনই বুঝেছিলাম এবারের দেওয়ালী জমে যাবে। কালীপুজোর আগের সকালে জানা গেল গিফ্টটা একদিনের ছোট্ট ট্রিপ কলকাতার। ভীষণ ভীষণ ভালো লাগল। তবু তো আর সবকিছুর থেকে আলাদা করে একটা দিন তোমায় আমি পাবো । শত ব্যস্ততা তোমার ।আমাদের নিজস্ব সময়টুকুতেও ল্যাপটপ্ আর সেলফোন অনধিকার প্রবেশের অধিকার পেয়ে গেছে। আমি কথা বলে যাই আর তুমি ল্যাপটপে ঘাড় গুঁজে, "হুম।" "উফফ্ , আর ভালো লাগে না তোমার এই হুম-এর হুমকি।" এরও উত্তর আছে, " কর্পোরেট জীবনে আনলিমিটেড লিমিটেশনস্ সোনা।" অগত্যা ফেরত যাই আমার রাজ্য , রান্নাঘরে। যাই হোক্ , এই সব অভিযোগ , অভিমান তালাবন্ধ করে রওনা দিলাম তোমার সাথে।
জায়গাটা একনজরে ভালো লেগে গেল। আশ্চর্য সবুজ চারিদিক। তিন-চারটে ছোট্ট কটেজ দূরে দূরে । সামনেই কিচেন-কাম ডাইনিং হল এর সুন্দর বাড়িটা। লাঞ্চ এর সময় হয়ে গিয়েছিল।দুর্দান্ত বাঙালী রান্না খেয়ে কটেজে গিয়ে অবাধ খুনসুটি করতে করতেই মনে হলো একবারও তোমার ফোন বাজেনি । এরপর আহ্লাদি এক ঘুম দিয়ে উঠে দেখি সন্ধ্যা নেমেছে। কটেজের বাইরেটা লাল নীল আলোর মালায় সাজানো।
তুমি হাত ধরে রিসর্টের বাইরে নিয়ে এলে। মেঠো পথ ধরে বেশ অনেকটা হাঁটলাম হাত ধরাধরি করে। রিসর্টের আলোগুলো ছোট ছোট ঝাপসা রঙিন পুঁথির মালা এখন । কালীপুজোর এমন অদ্ভুত নিরব অন্ধকার রাত আমি কখনও দেখি নি। অনন্ত প্রশান্তি আর ভালোলাগা। কুয়াসা টোপানো ভিজে ঘাস। তাতেই বসলাম দুজনে। ঝুপ করে কোলে শুয়ে বললে , "গিফ্ট পছন্দ হল ? " পাঞ্জাবীর পকেট থেকে ফোনটা বার করে বললে ," বন্ধ । নো লিমিটেশনস ।" আমি যে কি বোকা ! আমার আনন্দেও কান্না পেয়ে যায়। তবে তুমি কান্না ভোলাতে জানো । এরপর শুধুই তুমি আর তোমার ভালোবাসার আলো। দীপাবলিতে পাওয়া আমার শ্রেষ্ঠ উপহার ।
সোনালী ব্যানার্জী
Reviewed by Pd
on
অক্টোবর ২৩, ২০১৪
Rating:
Reviewed by Pd
on
অক্টোবর ২৩, ২০১৪
Rating:


কোন মন্তব্য নেই:
সুচিন্তিত মতামত দিন