এ বি এম সোহেল রশিদ






নিঃসঙ্গ পাখী

নৈশব্দের মাঝে পথভ্রষ্ট হয়ে
হারানো সুর খুঁজে কি লাভ!
অদৃষ্ট স্পষ্ট দেখতে পাই
ঘন কুয়াশার চাদরে আবৃত
একটি বিষণ্ণ নীল টিউলিপ!
দুঃখ নদীর তীরে শুকনো ডালে
অপেক্ষারত শিশ দেয়া নিঃসঙ্গ পাখী
জলের আরশিতে খুঁজে সোনালী অতীত।
মায়াময় স্রোতে স্মৃতির নৌকায়
ভেসে বেড়ায় জন্মান্তরের ভালবাসা
প্রত্যাশার গাড়ি হয় লাইনচ্যূত।
বিরহের উদারতায় কাঁদে নিয়তি
শঙ্খচিলের চোখে সব কৃতকলাপ
এক নিমিষেই হয়ে যায় বন্দী।
রাধাচূড়া বৃক্ষে ফোটে দ্রোহের আগুন
পাপড়িতে লাল হয় আমার আঙ্গিনা
সৌরভে আকাঙ্ক্ষার তৃষ্ণা বাড়ায়
নোনা অশ্রুতে সিক্ত হয় অন্ধ প্রেম ।
তাই বার বার ফিরে আসি
হৃদয় সরোবরে নিষিদ্ধ ফাগুন!
আগুন জ্বলে অস্থি মজ্জায় শিরায় শিরায়!
আসবো!পুষ্পিত পথে হেটে যেতে নয়
আমার আমিকে নির্লজ্জের মত পুড়াতে।



নিঃসঙ্গ আকাশের এক টুকরো মেঘ!


অকারণে বৃথায় ঘামছে বিবেকের শীতল মস্তিষ্ক
বহুদিন আগেই জেনেশুনে ইচ্ছের নীল সমুদ্রে
হারিয়ে ফেলেছি যোগ্যতার মাপকাঠি
সমগোত্রীয় কিনা, তা নয় এখন বিবেচ্য।
অপরিচিতের ভিড়ে নিজেই হারিয়ে গেছি
জীবনবৃত্তান্ত ঘেঁটে কি লাভ বল?
কেউ কেউ কবি, কেউ আঁকে কথার ছবি
সবার কলমেই ঝরে হৃদয়ের ঝর্ণাধারা
মন্দ কি আবেগের এই সম্প্রসারণ বা সঙ্কোচন!
শিকড় সন্ধানী মন বিনা কারণেই বিরাগভাজন!
আছে কি প্রয়োজন? ব্যাপৃত জীবনের প্রেক্ষাপট।
জেলি ফিসের মত অতীত পুরোটাই ফাঁপা
নাকি ক্যাকটাসের মত পরজীবী সতেজ তাজা
অথবা শিশিরের মত রৌদ্র তাপে হয়ে যায় হওয়া!
আবেগের কলমে শব্দের চাষাবাদে চমৎকৃত হই!
এমন করে খেরোখাতা হয়ে উঠুক স্মৃতিকথা
হয়ে উঠুক নিঃসঙ্গ আকাশের এক টুকরো মেঘ!
বৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে দিয়ে যাক সংরক্ষিত প্রাঙ্গণ !!


ফিরে আসবে কি আলো!

অন্ধকার তাড়িয়ে গাঢ় নির্জনতা ভেঙ্গে
প্রত্যাশার নীল সমুদ্র করতে চাই অতিক্রম
অসীমের মাঝে মেলে ধরেছি তাই শূন্য হাত।
অপ্রাপ্তির অপমানে প্রজ্বলিত হয়ে নয়
লালিত স্বপ্নের অপমৃত্যু দেখবো না বলেই
অহর্নিশ তোমার চোখে ফেলি মুগ্ধতার দৃষ্টি ।
এভাবেই বিভ্রান্তির প্রতিটি বাক পিছনে ফেলে
সময়ের স্রোতে ভাসিয়েছি নিয়তি
অতীতের বিষবাষ্প এখনে বৈরী বাতাস
সিঁড়ির ধাপে ধাপে সর্বনাশের পদচিহ্ন।
নিদ্রাহীন জীবন গোপন আকাঙ্ক্ষার ফাঁদে বন্দী
প্রতিটি মূহুর্তে নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে হচ্ছে কাটাকাটি
অন্ধকার আর আলোর তফাৎ খুঁজি না এখন
আনন্দের জ্বালা মুখ থাকনা অনাবৃত আজ।
কাটুক দ্বন্দ্ব! স্বকীয়তায় ফিরে আসুক জীবনের ছন্দ
জ্যোৎস্না আর ভোরের আলো হয়ে গেছে পরিপূরক
আলোর সম্ভোগে পূর্ণতা পাক অবহেলিত দেহবৃক্ষ।
পিছু হটে যাক অপেক্ষা, নামুক চাঁদ সন্ধ্যা
রাতের অসুখে মাতাল বাতাসের অগ্রাধিকার
বার বার উচ্চারিত হোক সঞ্চিত সব কথা
নির্ঘুম যাপিত জীবনের হোক ছন্দপতন!
চলুক নতুনের আয়োজন! কষ্টরা পাক মুক্তি!
যুক্তির কালিতে মগজ কালো !
জীবন সায়াহ্নে ভাবছি ফিরে আসবে কি আলো!

ঢাকা । 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ

  1. এমন করে খেরোখাতা হয়ে উঠুক স্মৃতিকথা
    হয়ে উঠুক নিঃসঙ্গ আকাশের এক টুকরো মেঘ!
    বৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে দিয়ে যাক সংরক্ষিত প্রাঙ্গণ !!


    ভীষণ ভালো লাগা ।

    উত্তরমুছুন

সুচিন্তিত মতামত দিন