একটা অন্যরকম ভারতবর্ষ হেঁটে চলেছে রেললাইন ধরে। পাশাপাশি চলছে শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর বুলেট ট্রেন? কোথায় চলছে? এরা সবাই এত বোকা কেন? ট্রেনের বন্দোবস্ত থাকা সত্ত্বেও হেঁটে চলেছে। ওরা ছাপ্পান্ন দিনের খিদের পরে নিজের পেশিকে ছাড়া আর কোন প্রতিশ্রুতি কে বিশ্বাস করে না। ওরা হাঁটছে। পায়ের তলায় পুড়ে গিয়ে ভারতবর্ষের এবড়োখেবড়ো মানচিত্র। রাস্তায় এক্ষুণি জন্ম নিল যে বাচ্চা টা সে হয়তো কাল মরবে ভেবে আমি চুপ করে থাকি, প্রাণপণে গান গাই, " ক্ষমিতে পারিলাম না হে, ক্ষম হে মম দীনতা" । যাদের লজ্জা করার কথা তারা লজ্জা পাচ্ছে না।তারা ভাত দেয়নি, রোজগার দেয়নি, সাহায্য যা কিছু আসছে তা করছি আমরা, মধ্যবিত্তরা। যাদেরকে বড়সড় বাঁশ কবেই দিয়ে রেখেছেন আপনি/আপনারা গদিবাবু। আমাদের জন্য মিথ্যে প্যাকেজের জুমলাবাজিও হয়না। আমাদের চাকরির কোন গ্যারান্টি তো আপনারা নেন ই না, উপরন্তু নির্লজ্জের মতো ঘোষণা করেন কোন কর্পোরেট চাইলে এই অবস্থায় মাইনে কমাতে পারে। মানে ভাত দেবার জোগান নেই, কিল মারার গোঁসাই। আপনি চান, আমারাই ছাড়বো গ্যাসের সাবসিডি, আমরাই পয়সা দেবো ; নাম হবে' পি এম কেয়ারস' ফান্ড। আমরা সবচেয়ে বেশি ট্যাক্স দিই, আর আপনি মহাচোরেদের আনপেইড লোনে ছাড় দেন।আমরা সবার আগে বন্যাত্রাণ থেকে সব রকম ডিসাস্টারে পয়সা বের করে দিই কষ্টের সংসার থেকে।
ভয়ঙ্কর একটা সাইক্লোন আসছে। কিন্তু আমার, আমাদের ভয় করছে না।আমরা এতগুলো মানুষ কে পথে দেখতে দেখতে শিখে গেছি, অত সহজে হাল ছাড়লে চলেনা।
শিখে গেছি বেঁচে থাকাটাই এক আশ্চর্য ম্যাজিক।শিখে গেছি নিজের উপর আস্থা হারানো পাপ। শিখে গেছি "কে ভাই, কে দুশমন।" আমাদের কাল কোন কাজ থাকবে কিনা জানিনা, ভাত থাকবে কিনা জানিনা।তবু জানি আমরা ধনী, অন্তত আপনাদের চেয়ে। আমাদের চোখে এখনো জল আসে। মানুষের দুর্দশায় আরো শতগুণ বাড়িয়ে তোলার ফন্দি মেশানো নেই সেই জলে।
গায়ের জোরে রাখতে পারো, মারতে পারো, কিন্তু "তোমার টানাটানি টিকবে না ভাই, রবার যেটা সেটাই রবে।"
আমরা মধ্যবিত্ত। ক্রোধ লিখে রাখি মনের পাতায়।
► মৌমিতা ঘোষ
Reviewed by Pd
on
মে ১৯, ২০২০
Rating:
Reviewed by Pd
on
মে ১৯, ২০২০
Rating:

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
সুচিন্তিত মতামত দিন